কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে গত মাসের শেষ দিক থেকে কাকদ্বীপের নতুন আদালত ভবনে শুরু হয়েছিল নাবালিকা ধর্ষণের (পকসো) মতো বিশেষ মামলার শুনানি। কিন্তু চলতি মাসের গোড়া থেকেই এ জাতীয় মামলা সরে গিয়েছে আলিপুর আদালতে। ফলে, দিন কয়েক কাকদ্বীপের বিভিন্ন প্রত্যন্ত এলাকার বিচারপ্রার্থীদের সুবিধা হলেও ফের তাঁদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। বাড়তি টাকা এবং সময় ব্যয় করে তাঁদের দৌড়তে হচ্ছে আলিপুরে। রাজ্য সরকার নিয়মমতো গেজেট প্রকাশ করে ওই নির্দেশের কথা না জানানোতেই এই সমস্যা বলে দাবি ওই আদালতের আইনজীবীদের।
কাকদ্বীপ বার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক সুব্রত গিরি বলেন, ‘‘হঠাৎ আদালতের সুবিধা আলিপুরে সরে যাওয়ায় আমরাও বিষয়টি নিয়ে অস্বস্তিতে রয়েছি। এটা হাইকোর্ট ও রাজ্য সরকারের বিষয়। তারা দ্রুত সমাধান করে ফেললে ভাল হয়। কারণ, বিচারপ্রার্থীরা সমস্যায় পড়ছেন।’’ এ ব্যাপারে প্রশ্নের উত্তরে রাজ্যের বিদায়ী আইনমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘গেজেট কেন সময়ে প্রকাশ হল না, তা খতিয়ে না দেখে বলা যাবে না।’’
বেশ কিছু দিন আগেই কলকাতা হাইকোর্ট এবং রাজ্য সরকার সিদ্ধান্ত নেয়, মহকুমা স্তরের আদালতগুলিতে পকসো আইনে অভিযুক্তদের বিচার করা যাবে। তার ভিত্তিতেই কাকদ্বীপ আদালতে শুরু হয় ওই সব মামলার শুনানি। সম্প্রতি সাগরে এক ছাত্রীকে ধর্ষণ করে খুনের অভিযোগে তিন অভিযুক্তের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ ওই বিশেষ আদালত থেকেই হয়েছে। কিন্তু তার পরেই দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলা বিচারক এ রকম মামলার শুনানি কাকদ্বীপে বন্ধ রাখার নির্দেশ দেন। তারপর সাগরের ঘটনায় আরও এক অভিযুক্ত ধরা পড়ার পর থানা থেকে তাকে পাঠানো হয় কাকদ্বীপে। কিন্তু সেখানে শুনানি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় তাকে আলিপুরেই পাঠানো হয়।
কাকদ্বীপ মহকুমার এই আদালতে পাথরপ্রতিমা, নামখানা, সাগরদ্বীপের মতো প্রত্যন্ত এলাকার মানুষও আসেন বিচারের জন্য। কিন্তু এ বার ফের আলিপুরে যাওয়ার জন্য তাঁদের ভোরবেলা বেরোতে হচ্ছে। রাতে ফেরা অনেক সময়েই দুষ্কর হয়ে উঠছে বলে তাঁরা জানিয়েছেন।
সাগরে যে স্কুল ছাত্রীকে ধর্ষণ করে খুন করার অভিযোগ উঠেছে, সেই ছাত্রীর মামা বলেন, ‘‘আমরা গরিব মানুষ। এত টাকা খরচ করে আলিপুর আদালতে যাওয়ার কথা চিন্তা করলেই ভয় পাচ্ছি। মামলার শুনানি কাকদ্বীপ আদালতে ফিরিয়ে আনা হোক।’’ মহকুমার এক পুলিশ আধিকারিকও জানিয়েছেন, ওই সিদ্ধান্তের ফলে পুলিশকর্মীদের আলিপুরে অভিযুক্তদের নিয়ে যেতে-আসতে সময় চলে যাচ্ছে। আইনজীবীরা মনে করছেন, ভোটের পরে নতুন সরকার তৈরি না হওয়া পর্যন্ত এ সমস্যা মেটার নয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy