নকফুল এলাকায় এক মহিলা বাড়ি থেকে কাঠ আনতে গিয়ে নিখোঁজ হন। পরে তাঁর দেহ মেলে কাছের মাঠ থেকে। পরিবারের অভিযোগ, ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে। যদিও রহস্যের কিনারা এখনও করে উঠতে পারেনি পুলিশ।
সোমবারই শক্তিগড় এলাকায় একটি বাড়ি থেকে গয়না ও কিছু টাকা নিয়ে চম্পট দেয় দুষ্কৃতীরা। বাড়ির মালিক শুভাশিস ভট্টাচার্য সস্ত্রীক গিয়েছেন আমেরিকায়, মেয়ের কাছে। সেই ফাঁকে বাড়ি সাফ।
রেটপাড়া এলাকায় এক স্কুল শিক্ষকের বাড়িতে দিনদুপুরে চোর এসে টাকা-পয়সা, মূল্যবান জিনিসপত্র চুরি করে উধাও হে গিয়েছে।
দেশের বৃহত্তম বন্দর পেট্রাপোল এলাকাতেও পরপর কয়েকটি চুরির ঘটনা ঘটেছে। বাংলাদেশ থেকে দুষ্কৃতীরা এসে পেট্রাপোলের বাসিন্দা এক ব্যবসায়ীকে আগ্নেয়াস্ত্র ঠেকিয়ে কয়েক লক্ষ টাকা লুঠের চেষ্টা করেছে এই ক’দিন আগেই। এলাকার লোকজন অবশ্য তাড়া করে ধরে ফেলে এক দুষ্কৃতীকে।
বনগাঁ মহকুমা জুড়ে কখনও চুরি, কখনও ছিনতাই, কখনও খুন-জখমের ঘটনা বে়ড়েই চলেছে গত কয়েক মাস ধরে। ট্রাক চুরির ঘটনাও ঘটেছে। আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে স্বভাবতই উদ্বিগ্ন এলাকার মানুষজন। বনগাঁর ব্যবসায়ীদের দাবি, প্রত্যেক বছর দুর্গা পুজোর আগে বনগাঁয় চুরি-ছিনতাই বাড়ে। বনগাঁর স্বর্ণ ব্যবসায়ী দিলীপ মজুমদারের কথায়, ‘‘রাতে দোকান বন্ধ করে বাড়ি ফিরেও আতঙ্কে থাকি।’’
যদিও পুজোর আগে বনগাঁর আইন-শৃঙ্খলা ঠিক রাখতে পুলিশের পক্ষ থেকে ইতিমধ্যেই বেশ কিছু পদক্ষেপ করা হয়েছে। এরই মধ্যে রবিবার বনগাঁ থানায় নতুন আইসি হিসাবে যোগ দিয়েছেন সতীনাথ চট্টরাজ। এলাকার মানুষের অভিজ্ঞতা বলে, পুলিশ মহলে এ ধরনের রদবদলের সময়ে দুষ্কর্ম বাড়ে।
জেলা পুলিশ সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ট্রাফিক ব্যবস্থা ঢেলে সাজা হচ্ছে। গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে তল্লাশি বাড়ানো হয়েছে। তাতে অপরাধমূলক কাজ কমবে বলে আশা করা যায়।’’ জেলা পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, সীমান্তের অপরাধ কমাতে শীঘ্রই পেট্রাপোলে থানা চালু করা হচ্ছে।
রাতের বনগাঁর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক ও এলাকায় ঘুরে দেখা গেল, পুলিশ টহল তেমন নেই। নম্বরহীন বাইকবাহিনী দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। অচেনা যুবকদেরও মাঝে মধ্যেই দেখা যাচ্ছে শহরের পথেঘাটে। বনগাঁ থেকে বাংলাদেশ সীমান্তের দূরত্ব মাত্র ৫ কিলোমিটার। ফলে সীমান্ত-অপরাধ এখানকার বরাবরের সমস্যা। যদিও পুলিশের তৎপরতায় গরু পাচার বন্ধ হয়েছে অনেকটাই। সীমান্ত পেরিয়ে দুষ্কৃতীরা মাঝে মধ্যে ঢুকে পড়ে চুরি-ছিনতাইয়ের মতো ঘটনা ঘটিয়ে ফের বাংলাদেশে পালিয়ে যায় বলে অভিযোগ।
বনগাঁ উত্তর কেন্দ্রের বিধায়ক বিশ্বজিৎ দাস বলেন, ‘‘চুরি-ছিনতাইয়ের বিষয় নিয়ে পুলিশের সঙ্গে কথা বলেছি। পুজোর আগে নিরাপত্তা যাতে আরও বাড়ানো হয়, তা নিয়েও ফের কথা বলব।’’
পুজোর আগে বনগাঁর নিরাপত্তা বাড়াতে স্থানীয় ব্যবসায়ীদের নিয়ে এসডিপিও অনিল রায় কিছু দিন আগেই বৈঠক করেছেন। ব্যাঙ্ক, পোস্ট অফিস, পেট্রোল পাম্প মালিকদেরও বৈঠকে ডাকা হয়েছিল। বেশ কিছু প্রস্তাব পুলিশের পক্ষ থেকে দেওয়া হয়। তারমধ্যে সিসি ক্যামেরা লাগানোর প্রস্তাবও রয়েছে। অনিলবাবুর দাবি, দুষ্কৃতীরা ধরা পড়ছে। বাকিরাও শীঘ্রই ধরা পড়বে।
কিন্তু বনগাঁর মানুষের বক্তব্য, দু’টো-একটা বিক্ষিপ্ত গ্রেফতারে আইন-শৃঙ্খলার হাল ফিরবে না। লাগাতার টহল, নাকাবন্দি, গ্রেফতার বাড়লে মানুষের আস্থা ফিরবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy