দীর্ঘ প্রতীক্ষার পরে বেরিয়ে আসছেন বৃদ্ধা। নিজস্ব চিত্র।
সুগার এবং বাতের ব্যথা নিয়ে কাকদ্বীপ বাসস্ট্যান্ডের কাছে একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের লাইনে দাঁড়িয়েছেন আশি ছুঁই ছুঁই রামকৃষ্ণ পঞ্চায়েতের ভূবননগরের কার্তিক মান্না। শরীরে কাঁপুনি, মাথা ঝুঁকে পড়েছে বয়সের ভারে। কোনও রকমে বললেন, ‘‘প্রায় ৪৫ মিনিট হয়ে গেল লাইনে দাঁড়িয়ে রয়েছি। বৃদ্ধদের জন্য একটা আলাদা তো লাইন তো করতে পারত।’’
কার্তিকবাবু একা নন। ৫০০ এবং ১০০০ টাকার নোট বাতিলের পরে ব্যাঙ্কগুলিতে বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের জন্য আলাদা লাইন রাখতে বলা হয়েছিল। কাকদ্বীপ মহকুমার কয়েকটি ব্যাঙ্কের বাইরে বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের আলাদা লাইন চোখে পড়লেও মহকুমার প্রায় কোনও ব্যাঙ্কের ভেতরেই বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের জন্য আলাদা লাইন চোখে পড়েনি। ফলে দীর্ঘক্ষণ লাইন দিয়ে চূড়ান্ত নাকাল হচ্ছেন তাঁরা।
কাকদ্বীপে অন্য একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের সামনে গ্রাহকদের লাইনে দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়েছিলেন প্রতাপাদিত্যনগর পঞ্চায়েতের কৃষ্ণনগরের বাসিন্দা সত্তর ছুঁই ছুঁই জয়ন্ত দাস। গত কয়েক দিন ধরে তিনি ব্যাঙ্কে লাইন দিয়ে টাকা তোলার চেষ্টা করেও পারেননি। অবশেষে বুধবার পুলিশের উদ্যোগে ওই ব্যাঙ্কের বাইরে বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের জন্য আলাদা লাইন করা হয়েছে। তবে বাইরে আলাদা লাইন করা হলেও ব্যাঙ্কের ভিতরে ঢুকলে কিন্তু সব এক। অক্ষয়নগর বিশ্বনাথ কলোনির বাসিন্দা বৃদ্ধা আরতি দাস বলেন, ‘‘অন্য দিনের তুলনায় বুধবার একটু কম সময় লাগছে বটে কিন্তু আমাদের জন্য আলাদা লাইন হলে ভাল হয়।’’ একই দাবি প্রতাপাদিত্য পঞ্চায়েতের বাসিন্দা পঞ্চান্ন বছরের বাসিন্দা পারুল খাটুয়ার।
যদিও ব্যাঙ্কের ভেতরে বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের জন্য আলাদা লাইন করলে সামগ্রিক পরিষেবা বিঘ্নিত হবে বলেই দাবি করেছেন ব্যাঙ্ক কর্তারা। কাকদ্বীপের একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের ম্যানেজারের দাবি, ‘‘বয়স্ক মানুষেরা সব সময়ে লাইনে থাকেন না। ফলে তাঁদের জন্য আলাদা লাইন করলে বাকি সময়ে সেই কাউন্টারে লেনদেন বন্ধ রাখতে হবে। ফলে অন্য কাউন্টারগুলির উপরে চাপ পড়বে। তাই ব্যাঙ্কের ভেতরে আলাদা লাইন রাখা হচ্ছে না।’’ তাঁর দাবি, ব্যাঙ্কের ভিতরে অনেক চেয়ার রয়েছে। সেগুলিতে বৃদ্ধ-বৃদ্ধারা বসতে পারেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy