বিপত্তি: এই সেই তার
বাজার সেরে সাইকেলে চেপে বাড়ি ফিরছিলেন আকবর আলি (৪০)। রাস্তায় বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে পড়়েছিল। অন্ধকারে ঠাহর করতে পারেননি। সেই তারে গা লেগে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন। মারা গিয়েছেন দেগঙ্গার চৌরাশি পঞ্চায়েতের রাজকুবেড়ে মিস্ত্রিপাড়ার বাসিন্দা ওই যুবক।
ঘটনাটি শুক্রবার রাতের। বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থা নিম্নমানের তার টাঙানোয় এই বিপত্তি বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর। অবিলম্বে তার বদলানো এবং খুঁটির তারের মাঝে ‘স্পেসার’ লাগানোর দাবি তুলেছেন তাঁরা। মৃতের পরিবারের জন্য আর্থিক ক্ষতিপূরণের দাবিও উঠেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সম্প্রতি সরকারি প্রকল্পে ঘর পেয়েছিলেন আকবর। শনিবার গৃহপ্রবেশের কথা ছিল। লোকজনকে নিমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। টুকটাক কেনাকাটা সেরে সাইকেল নিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন আকবর। বাড়ি থেকে কয়েক হাত দূরেই মারা যান তিনি।
সাবেরা বিবি নামে স্থানীয় এক মহিলা বলেন, ‘‘সন্ধে থেকে বৃষ্টি পড়ছিল। সঙ্গে ঝোড়ো হাওয়া। বৃষ্টি একটু কমতেই বাড়ি সামনে রাস্তায় একটা শব্দ শুনে বাইরে এসে দেখি, রাস্তার উপরে ছিঁড়ে পড়া বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে ছটফট করছে আকবর। পাশে পড়ে সাইকেল।’’
মহিলার চিৎকারে ছুটে আসেন প্রতিবেশীরা। বিদ্যুৎ পরিষেবা বন্ধ করে তাঁকে উদ্ধার করে স্থানীয় বিশ্বনাথপুর ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। চিকিৎসকেরা আকবরকে মৃত বলে জানিয়ে দেন।
শনিবার আকবরের বাড়িতে গিয়ে দেখা গেল, চার ছেলেমেয়েকে নিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েছেন স্ত্রী মনোয়ারা। কী ভাবে সংসার চালাবেন, ভেবে কুল পাচ্ছেন না। জিন্নাত আলি নামে এক ব্যক্তি বলেন, ‘‘খুবই নিম্নমানের তার লাগানো হয়েছিল। তাই এই দুর্ঘটনা।’’ তাঁর দাবি, তারের মাঝে ‘স্পেসার’ লাগানো থাকলে এ ভাবে ছিঁড়ে রাস্তায় পড়ত না।
বেড়াচাঁপা শাখার বিদ্যুৎ দফতরের আধিকারিক সুপ্রিয় দত্ত বলেন, ‘‘মৃত্যুর ঘটনাটি খুবই দুঃখজনক। তবে গ্রামের ভিতরে গাছের ডালপালা বিদ্যুতের তারের উপরে পড়ে এই বিপত্তি। সঙ্গে টানা বৃষ্টি ও হচ্ছিল।’’ নিম্নমানের তার ছিল কিনা, তা নিয়ে অবশ্য মন্তব্য করেননি তিনি। যেখান দিয়ে বিদ্যুতের তার গিয়েছে, তার আশেপাশে গাছের ডালপালা থাকলে তা দফতরকে জানানোর পরামর্শ দিয়েছেন ওই আধিকারিক। সে ক্ষেত্রে ডাল বিদ্যুৎ দফতরের কর্মীরাই কেটে দেবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন।
— ছবি: সজলকুমার চট্টোপাধ্যায়
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy