কেনাকাটা: ভারত থেকে পয়লা বৈশাখের কেনাকাটা করে বাংলাদেশে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক
পেট্রাপোল: পান্তা ভাতের সঙ্গে পদ্মার ইলিশ ভাজা।সঙ্গে কাঁচা লঙ্কা ও এক কোয়া লেবু — বলতে বলতেই জিভে সুরুৎ করে জল টেনে নিলেন ঢাকার কেরানিগঞ্জ এলাকার বাসিন্দা মহম্মদ বাবুল।
শুধু বাবুল নন, পয়লা বৈশাখে ও পার বাংলার বহু বাঙালি এ সব পদেই ভরসা রাখছেন। পয়লা বৈশাখ মানে ও পারের অনেক বাঙালির কাছে এখনও পান্তা ভাতের সঙ্গে পদ্মার ইলিশ ভাজা খাওয়া। পেট্রাপোল সীমান্তে দাঁড়িয়ে কথা হচ্ছিল ঢাকার ব্যবসায়ী মহম্মদ দিলওয়ার হোসেন ও মহম্মদ বাবুলের সঙ্গে। কী ভাবে কাটে আপনাদের পয়লা বৈশাখ? তাঁদের কথায়, ‘‘সকাল থেকে বাড়িতে আত্মীয়েরা আসেন।সকলে মিলে চলে খাওয়া-দাওয়া। মূল আকর্ষণ অবশ্যই পান্তার সঙ্গে পদ্মার ইলিশ ভাজা।’’ জানা গেল, পড়শি দেশের বিভিন্ন হোটেলেও এই সব পদ রান্না হয়। সঙ্গে নামী শিল্পীদের নিয়ে গানবাজনার ব্যবস্থা থাকে। বিভিন্ন এলাকায় সামাজিক সংগঠন বা ক্লাবের পক্ষ থেকেও পয়লা বৈশাখে পান্তা ভাত আর ইলিশের ঢালাও আয়োজন হয়। শহরের বাসিন্দারা এ সময়ে চলে যান গ্রামের বাড়িতে।
সরস্বতী পুজোর মতো ও দেশের পাড়ায় পাড়ায় অল্পবয়সী মেয়েরা শাড়িতে সাজে বৈশাখী উৎসবে। ছেলেরাও পাজামা-পাঞ্জাবির চড়িয়ে বেরিয়ে পড়ে। পাড়ায় পাড়ায় বের হয় শোভাযাত্রা। গান-নাচ-কবিতায় মুখরিত হয় আকাশ বাতাস। নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে বাংলাদেশ মেতে ওঠে, ‘মঙ্গল শোভাযাত্রায়।’
বুধবার এ দেশে থেকে বাড়ি ফিরছিলেন সাগরদারির বাসিন্দা অরবিন্দ কণ্ডু। যশোরের মাইকেল মধুসূদন কলেজের অধ্যাপক মানুষটির কথায়, ‘‘মঙ্গল শোভাযাত্রার পাশাপাশি আমাদের ওখানে পয়লা বৈশাখের অন্যতম বড় আকর্ষণ হল সাপের খেলা। বহু মানুষ এ সবের জন্য সারা বছর অপেক্ষায় থাকেন।’’
নবারনের বাসিন্দা পেশায় সাংবাদিক মহম্মদ আজাদ হোসেন বলেন, ‘‘পয়লা বৈশাখ আমাদের ওখানে হিন্দু মুসলিমের একটা মিলন উৎসবও। সকলে মিলে উৎসবে সামিল হই।’’ গান-কবিতার পাশাপাশি ফরিদপুরের মানুষ আবার ওই দিনটিতে মেতে ওঠেন গণেশ পুজোতেও। ফরিদপুরের বাসিন্দা গৃহবধূ নীলিমা বল জানালেন, বাংলাদেশেও ঘটা করে হালখাতা হয়। সঙ্গে গণেশ পুজো।
পেট্রাপোল সীমান্তে গত কয়েক দিন ভিড়টা তাই বেড়েছে। পয়লা বৈশাখের আগে বাংলাদেশিরা ফিরছেন নিজের ঘরে। ও পারের বহু বাঙালি কলকাতায় এসেছিলেন পয়লা বৈশাখের কেনাকাটা করতেই। তেমনই একজন নারায়ণগঞ্জের ব্যবসায়ী গৌতম সাহা। বললেন, ‘‘আমার মতো বহু মানুষ পয়লা বৈশাখের জামা-কাপড় কলকাতা থেকে কিনতে পছন্দ করেন। তবে মিষ্টি আমরা এখান থেকে কিনি না। আমাদের ওখানে মিষ্টি বেশি সুস্বাদু।’’ পেট্রাপোল হয়ে ফিরতি পথে অনেক বাংলাদেশির হাতেই দেখা গেল কলকাতার বিভিন্ন নামিদামী প্রতিষ্ঠান থেকে কেনা পোশাকের প্যাকেট।
চট্টগ্রামের বাসিন্দা মহম্মদ রবিউল এসেছিলেন ছেলের চিকিৎসা করাতে। ছেলে সুস্থ হয়ে ওঠায় খুশি খুশি ফিরছেন। বলে গেলেন, ‘‘ছেলেটা সুস্থ হয়ে ওঠায় এ বার শান্তিতে বৈশাখী উৎসবে সামিল হতে পারব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy