এক কোটি টাকার কোকেন-সহ এক আন্তজার্তিক মাদক পাচারকারীকে গ্রেফতার করল উত্তর ২৪ পরগনার অশোকনগর থানার পুলিশ।
গোপন সূত্রে খবর পেয়ে মঙ্গলবার রাতে বনবনিয়া শ্মশান এলাকা থেকে পুলিশ গোপাল মণ্ডল নামে ওই ব্যক্তিকে ধরে। তার বাড়ি শিলিগুড়ির মাটিগাড়া থানার শিবমন্দির এলাকায়। গোপালের কাছ থেকে প্রায় সাড়ে ন’শো গ্রাম কোকেন আটক করেছে পুলিশ। যার বাজার দর প্রায় এক কোটি টাকা। প্রথমে অবশ্য তল্লাশিতে কিছু মেলেনি। পরে পুলিশ গোপালের কোমরে বাঁধা একটি প্লাস্টিকের প্যাকেট খুলে কোকেনের খোঁজ পায়।
বুধবার ধৃতকে বারাসত জেলা আদালতে হাজির করানো হলে বিচারক তাকে ১০ দিন পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। জেলা পুলিশ সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ধৃতকে জেরা করে আন্তর্জাতিক কোকেন পাচার চক্রের বাকি সদস্যদের খোঁজে তল্লাশি শুরু হয়েছে।’’
পুলিশ জানায়, বছর একান্নর গোপাল দীর্ঘ দিন ধরে কোকেন পাচারে যুক্ত। কোকেনের পাশাপাশি হেরোইন ও সোনার বিস্কুটও পাচার করত। অতীতে কোচবিহার এবং বলাগড় থানায় সোনার বিস্কুট পাচার করতে গিয়ে ধরাও পড়েছে সে।
তদন্তকারী অফিসারেরা জেরায় জানতে পেরেছেন, ১৪ জানুয়ারি কোচবিহারের চ্যাংরাবান্দা সীমান্তে এক বাংলাদেশি পাচারকারী গোপালের হাতে ওই কোকেন দিয়েছিল। কোকেন এসেছিল বাংলাদেশ থেকে। ডানকুনির কাছে দিল্লি রোডের পাশে একটি হোটেলে এক ব্যক্তির হাতে কোকেনের প্যাকেট তুলে দেওয়ার কথা ছিল গোপালের।
পুলিশ জানতে পেরেছে, গোপাল মূলত ক্যারিয়ারের কাজ করে। প্যাকেট নির্দিষ্ট ব্যক্তির কাছে পৌঁছে দিতে পারলে তার ৩০ হাজার টাকা পাওয়ার কথা ছিল। ওই কোকেন দিল্লি যাওয়ার কথা ছিল দিল্লিতে।
কী ভাবে অচেনা লোকের হাতে কোকেনের প্যাকেট পৌঁছে দিত গোপাল?
তদন্তে নেমে পুলিশ জানাতে পেরেছে, গোপালের কাছে বাংলাদেশের একটি একশো টাকার ফটোকপি করা নোট ছিল। দিল্লি রোডের ধারে যে হোটেলে যার কাছে কোকেন পৌঁছে দেওয়ার কথা ছিল, তার কাছেও ছিল ওই নোটেরই আর একটি ফটোকপি। অশোকনগর থানার ওসি অরিন্দম মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘দু’জনের ফটোকপি করা নোটের নম্বর মিলিয়ে মাল হস্তান্তর করা হতো।’’
গোপাল অশোকনগর এল কী ভাবে? পুলিশ জানিয়েছে, কোকেন পাচার চক্রের পান্ডারা তাকে নির্দেশ দিয়েছিল, ঘুরপথে পৌঁছতে হবে। যে সব এলাকায় পুলিশি নজরদারি কম, সেই এলাকাই বেছে নেওয়া হয়েছিল মাল হাত বদলের জন্য। গোপাল প্রথমে নবদ্বীপে আসে। সেখান থেকে চাকদহ, বনগাঁ, হাবরা হয়ে অশোকনগরের বনবনিয়া পৌঁছয়। তার ছক ছিল, বনবনিয়া থেকে আবালসিদ্ধি হয়ে বাসে বারাসত যাবে। তার আগেই অবশ্য ধরা পড়ে যায় সে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy