Advertisement
১১ মে ২০২৪

সেতু বসে বাণিজ্য বন্ধ ঘোজাডাঙায়

সেতু বসে যাওয়ায় বন্ধ হয়ে গেল সীমান্ত বাণিজ্য। বসিরহাটের ঘোজাডাঙায় এই ঘটনায় বেশ কয়েক কোটি টাকা ক্ষতির আশঙ্কা করছেন ব্যবসায়ীরা।

কী ভাবে চলবে ভারী ট্রাক, চিন্তা সেখানেই। ছবি: নির্মল বসু।

কী ভাবে চলবে ভারী ট্রাক, চিন্তা সেখানেই। ছবি: নির্মল বসু।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বসিরহাট শেষ আপডেট: ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০১:২৬
Share: Save:

সেতু বসে যাওয়ায় বন্ধ হয়ে গেল সীমান্ত বাণিজ্য। বসিরহাটের ঘোজাডাঙায় এই ঘটনায় বেশ কয়েক কোটি টাকা ক্ষতির আশঙ্কা করছেন ব্যবসায়ীরা।

পুলিশ ও প্রশাসন‌ সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘোজাডাঙাকে ‘আন্তর্জাতিক বাণিজ্য কেন্দ্র’ বলে ঘোষণার পর থেকে সেখানকার পরিকাঠামোর উন্নয়নের কাজ শুরু হয়েছে। ইতিমধ্যে ঘোজাডাঙা খালের উপরে ২৫ মিটার লম্বা এবং ১৫ মিটার চওড়া ২টি সেতুর কাজ শুরু হয়েছে। একই সঙ্গে বসিরহাটের ইছামতী সেতু থেকে ঢেমঢেমির মোড় হয়ে ঘোজাডাঙা পর্যন্ত ওল্ড সাতক্ষিরা রাস্তা চওড়া করার কাজ প্রায় শেষের পথে। ঘোজাডাঙা থেকে মুর্শিদাবাদ হয়ে হিলি পর্যন্ত সীমান্ত রাস্তার পরিকল্পনাও করা হয়েছে।

এরই মধ্যে, গত বৃহস্পতিবার বিকেলে বর্তমানে যে সেতু পেরিয়ে ঘোজাডাঙা থেকে বাংলাদেশের ভোমরায় আমদানি-রফতানি হয় সেই সেতুটির একদিকের অংশ হঠাৎ বসে যায়। ফলে সেখান দিয়ে পণ্যবাহী ভারী ট্রাক যাওয়া-আসা বন্ধ রাখতে বাধ্য হন ব্যবসায়ীরা। আগামী রবিবার থেকে শুক্রবার পর্যন্ত বাংলাদেশে ইদের ছুটি থাকায় আমদানি-রফতানি বন্ধ। সে কারণে শনিবার পণ্যবাহী ট্রাক পারাপার ব্যবসায়ীদের কাছে অত্যন্ত জরুরি। কিন্তু সেতু অকেজো হওয়ায় সমস্যা বেড়েছে।

শুক্রবার এলাকায় গিয়ে দেখা গেল, নতুন সেতুর কাজের ঠিকাদারেরা রীতিমতো চিন্তিত। দু’চার দিনের মধ্যে কী ভাবে পুরনো সেতু ঠিক করা যায়, তা নিয়ে চিন্তা-ভাবনা চলছে। এ দিকে, ওল্ড সাথক্ষিরা রাস্তা জুড়ে দাঁড়িয়ে আছে সার সার ট্রাক। ওই সেতুর উপর দিয়ে কোনও রকমে খালি ট্রাক এবং ছোট গাড়ি আসতে দিচ্ছেন সীমান্তরক্ষীরা।

সীমান্তে ক্লিয়ারিং অ্যান্ড ফরওয়ার্ডি‌ং এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি কান্তি দত্ত বলেন, ‘‘সেতুর এই হালের জন্য শনিবার সীমান্ত বাণিজ্য হবে কিনা, তা নিয়ে সংশয় আছে। না হলে ইদের ছুটির জন্য এক সপ্তাহ দেরি হয়ে যাবে। এর ফলে রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকা কয়েকশো ট্রাকে যে দ্রুত পচনশীল সামগ্রী সব নষ্ট হয়ে যাবে। কোটি কোটি টাকার লোকসানে পড়তে হবে ব্যবসায়ীদের।’’ তিনি জানান, এই পরিস্থিতিতে পূর্ত এবং সড়ক দফতরের আধিকারিকদের বলা হয়েছে, অন্তত এক দিনের জন্য সেতু ঠিক করা হোক।

সংশ্লিষ্ট দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘোজাডাঙায় সেতুর অবস্থা খারাপ। যে কোনও মুহূর্তে তা ভেঙে পড়তে পারে বলে ২০১৩ সালে নোটিস ঝোলানো হয়। ব্যবসায়ীদের বলা হয়েছিল, নতুন সেতু না হওয়া পর্যন্ত তাঁরা যেন ওই পুরনো সেতুর উপর দিয়ে ২৫ টনের বেশি পণ্যবাহী ট্রাক না নিয়ে যান। সে কথায় কান না দিয়ে ভাঙাচোরা সেতুর উপর দিয়েই প্রতি দিন ২২০-২২৫টি ৬০-৭০ টনের ভারী ট্রাক চলাচল করেছে। যার ফলে সেতু বসে গিয়েছে।

পূর্ত ও সড়ক দফতরের বসিরহাট শাখার সহকারী বাস্তুকার রানা তারং বলেন, ‘‘প্রায় ৪ কোটি টাকা খরচ করে ঘোজাডাঙা খালের উপরে দু’টি সেতুর কাজ শুরু হয়েছে। যা শেষ হলে একটি সেতু দিয়ে ট্রাক বাংলাদেশে যাবে, অন্যটি ফিরতি পথে ব্যবহার হবে। আগামী দু’মাসের মধ্যে একটি সেতুর কাজ শেষ হবে।’’ তিনি বলেন, ‘‘কতটা সফল হবে বলতে পারছি না, তবে এক দিনের মধ্যে যাতে পুরনো সেতু দিয়ে কম ওজনের পণ্যবাহী ট্রাক চলতে পারে, সেই চেষ্টা করা হচ্ছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Ghojadanga
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE