Advertisement
২৭ মার্চ ২০২৩
Sagar Island

কেন্দ্রীয় আধিকারিকদের সঙ্গে তৃণমূল কর্মীরা কেন, অভিযোগ

বৃহস্পতিবার সাগরে গিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় দলের দুই সদস্য। দুপুরে কপিলমুনি মন্দিরে পুজো দিয়ে গঙ্গাসাগর পঞ্চায়েত অফিসে যান।

উপভোক্তাদের তথ্য যাচাই করছেন সরকারি প্রতিনিধিরা। নিজস্ব চিত্র

উপভোক্তাদের তথ্য যাচাই করছেন সরকারি প্রতিনিধিরা। নিজস্ব চিত্র

সমরেশ মণ্ডল
সাগর শেষ আপডেট: ২৮ জানুয়ারি ২০২৩ ০৮:২৪
Share: Save:

ফের অভিযোগ উঠল, তৃণমূল কর্মীদের দেখানো এলাকাই ঘুরে দেখলেন কেন্দ্রীয় দলের সদস্যেরা।

Advertisement

গত কয়েক দিন ধরে পাথরপ্রতিমা ও সাগরে আবাস যোজনা-সহ কেন্দ্রীয় প্রকল্পের কাজ খতিয়ে দেখতে এসেছে দুই সদস্যের কেন্দ্রীয় দল। পাথরপ্রতিমার গ্রামে অভিযোগ উঠেছিল, তৃণমূল কর্মীরা যেখানে নিয়ে যাচ্ছেন, সেখানেই যাচ্ছেন কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি, প্রশাসনের আধিকারিকেরা। তা নিয়ে কিছুটা সংশয় প্রকাশও করেন কেন্দ্রীয় দলের এক আধিকারিক। বিডিওকে বলেন, ‘‘যেখানে যেখানে অভিযোগ আছে, সেখানে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে তো?’’ বিডিও কার্যত উত্তর এড়িয়ে গিয়েছিলেন।

সাগরের গ্রাম পরিদর্শনেও একই ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ করলেন বিরোধীরা। বিজেপি নেতা অরুণাভ দাস বলেন, ‘‘প্রকৃত তদন্ত হচ্ছে না। তৃণমূলের লোকজন বেছে বেছে ওঁদের নির্দিষ্ট কিছু জায়গায় নিয়ে যাচ্ছেন। তৃণমূল কর্মীদের বাড়িতে গিয়ে সরকারি ঘর নিয়ে খোঁজ-খবর করছেন কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিরা। এ ভাবে কখনও প্রকৃত তথ্য উঠে আসবে না। বিষয়টি আমরা দলীয় ভাবে উপরমহলে জানাব।’’

এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করেননি কেন্দ্রীয় দলের সদস্যেরা। অভিযোগ মানেননি সংশ্লিষ্ট রামকরচর পঞ্চায়েতের প্রধান শান্তিস্বরূপ দাস। তৃণমূলের কেউ কেন্দ্রীয় দলের সঙ্গে ছিলেন না বলে দাবি করে স্থানীয় বিধায়ক তথা সুন্দরবন উন্নয়নমন্ত্রী বঙ্কিম হাজরা বলেন, ‘‘কেন্দ্র সরকার যখন তখন বিভিন্ন বিষয়ে তদন্তের জন্য রাজ্যে দল পাঠাচ্ছে। গ্রামীণ এলাকার মানুষ টাকা পাচ্ছেন না। তা নিয়ে কেন্দ্র ভাবছে না। শুধু তদন্ত দল পাঠালে কী হবে? আমরা যখন গ্রামে দিদির সুরক্ষা কবচ নিয়ে যাচ্ছি, তখন একশো দিনের টাকা কেন পায়নি কেউ, সে প্রশ্নের মুখে পড়তে হচ্ছে। কেন্দ্রীয় দল তদন্তে তেমন কিছু পায়নি। খুশিই হয়েছেন।’’

Advertisement

বৃহস্পতিবার সাগরে গিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় দলের দুই সদস্য। দুপুরে কপিলমুনি মন্দিরে পুজো দিয়ে গঙ্গাসাগর পঞ্চায়েত অফিসে যান। শুক্রবার সকালে যান রামকরচর পঞ্চায়েত অফিসে সেখানে পঞ্চায়েত ও প্রশাসনের আধিকারিকদের নিয়ে ঘণ্টাখানেক বৈঠক করেন।

এক প্রতিনিধি পেল্লায় বাড়ির সামনে দেখেন, কেন্দ্রীয় আবাস যোজনার বোর্ড। তিনি জানতে চান, ‘‘সরকারি টাকায় এত বড় বাড়ি বানালেন কী করে? ওই বাসিন্দা জানান, ‘‘আমি নিজে কিছু টাকা দিয়েছি।’’

নরহরিপুর পঞ্চায়েত এলাকায় বৃক্ষরোপণ সাইন বোর্ডে দু’দিন আগে নতুন করে লেখা হয়েছে বুঝতে পেরে কেন্দ্রীয় দলের এক প্রতিনিধি ব্লক প্রশাসনের আধিকারিকের কাছে জানতে চান, এমন কেন হল। লেখা ‘আবছা’ হয়ে যাওয়ায় সাইন বোর্ডে নতুন করে লেখা হয়েছে বলে উত্তর আসে। পাথরপ্রতিমাতেও দু’দিন আগে এই ঘটনা ঘটেছিল।

রামকরচরে এক তৃণমূল সমর্থক কেন্দ্রীয় আধিকারিককে উত্তেজিত হয়ে বলেন, ‘‘কেন্দ্র বিভিন্ন প্রকল্পের টাকা বন্ধ করে রেখেছে। সাধারণ মানুষ টাকা পাচ্ছেন না। আপনারা এখানে এসে কী দেখবেন?’’ উত্তর দেননি আধিকারিকেরা। পরে রুদ্রনগর পঞ্চায়েতে গিয়ে দীর্ঘ ক্ষণ কাগজপত্র খতিয়ে দেখেন প্রতিনিধিরা।

রুদ্রনগর গ্রামের সীতারানি মণ্ডলের বাড়িতে যান আধিকারিকেরা। সীতারানি জানান, টাকার অভাবে শৌচালয় বানাতে পারেননি। অথচ, যাঁদের চার-পাঁচতলা বাড়ি, তাঁদের পঞ্চায়েত থেকে শৌচাগার করে দেওয়া হয়েছে।

সাগরের বিডিও সুদীপ্ত মণ্ডল বলেন, ‘‘কেন্দ্রীয় দল ব্লকের তিনটি পঞ্চায়েত এলাকায় কেন্দ্রীয় প্রকল্পের বিভিন্ন কাজ খতিয়ে দেখেন। বার্ধক্য ভাতা, প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজন, একশো দিনের কাজ ঠিকঠাক হয়েছে কি না, তা দেখেছেন। এখনও পর্যন্ত তেমন কোনও অভিযোগ খুঁজে পায়নি প্রতিনিধি দল।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE
Popup Close
Something isn't right! Please refresh.