Advertisement
১৯ মে ২০২৪
ক্যানিং মহকুমা হাসপাতাল

হাসপাতালে এসে চোরের খপ্পরে পড়ে ব্যাগ সাফাই

দৃশ্য ১: সকাল প্রায় সাড়ে ৮টা। চিকিৎসার জন্য হাসপাতালের বহির্বিভাগের সামনে লাইনে দাঁড়িয়ে ছিলেন এক মহিলা। কোলের ছোট্ট ছেলেটি কান্নাকাটি করছে দেখে লাইন ছেড়ে বাইরে বেরিয়ে এসে ব্যাগ থেকে দুধের বোতল বের করতে গিয়ে দেখেন, ব্যাগ কেটে মোবাইল, টাকা হাতিয়ে নিয়েছে কেউ।

সামসুল হুদা
ক্যানিং শেষ আপডেট: ১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০১:৩৭
Share: Save:

দৃশ্য ১: সকাল প্রায় সাড়ে ৮টা। চিকিৎসার জন্য হাসপাতালের বহির্বিভাগের সামনে লাইনে দাঁড়িয়ে ছিলেন এক মহিলা। কোলের ছোট্ট ছেলেটি কান্নাকাটি করছে দেখে লাইন ছেড়ে বাইরে বেরিয়ে এসে ব্যাগ থেকে দুধের বোতল বের করতে গিয়ে দেখেন, ব্যাগ কেটে মোবাইল, টাকা হাতিয়ে নিয়েছে কেউ। বাড়ি ফিরবেন কী ভাবে, তা ভেবে কান্নায় আকুল গাঁয়ের বধূটি। শেষে হাসপাতালে থাকা এক অ্যাম্বুল্যান্স চালক তাঁকে ৫০ টাকা দেন। সেই টাকা নিয়ে ফিরলেন মহিলা।

দৃশ্য ২: অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে এনেছিলেন এক ব্যাক্তি। ইমারজেন্সি বিভাগের সামনে সাইকেল রেখে টিকিট কাটতে যান। ফিরে এসে, সাইকেল উধাও।

বেশ কিছু দিন ধরেই ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালে এ ভাবে রোগীদের সাইকেল, মোবাইল, টাকা খোওয়া যাচ্ছে। চোরেদের উৎপাতে অতিষ্ঠ রোগী ও তাঁদের পরিবারের লোকজন। উদ্বিগ্ন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এবং প্রশাসনও।

হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, সম্প্রতি দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা স্বাস্থ্য দফতর ক্যানিং হাসপাতালে সিসিটিভি লাগানোর জন্য প্রায় ৯০ হাজার টাকা বরাদ্দ করেছে। ওই টাকা দিয়ে হাসপাতালের বেশ কিছু জায়গায় ৮টি সিসি ক্যামেরা লাগানোও হয়েছে। কিন্তু তারপরেও হাসপাতালে একের পর এক চুরির ঘটনা ঘটছে। অভিযোগ, যে সব জায়গায় সিসি ক্যামেরা লাগানো হয়েছে, তা দিয়ে হাসপাতালের মূল প্রবেশদ্বার বা বহির্বিভাগের সামনের পুরো এলাকাটায় নজরদারি করা যাচ্ছে না।

দিন কয়েকের মধ্যে হাসপাতালে চুরি করতে গিয়ে হাতেনাতে ধরা পড়েছে চারজন। যদিও পুলিশের একাংশের অভিযোগ, হাসপাতালে চুরি ঠেকাতে গেলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সহযোগিতা প্রয়োজন। অনেক ক্ষেত্রে চুরির ঘটনার পরে হাসপাতালের সিসিটিভির ফুটেজ চেয়ে ঠিক মতো পাওয়া যায় না। সে ক্ষেত্রে তদন্ত করতে সমস্যা হয়।

অভিযোগ অস্বীকার করে হাসপাতাল সুপার অর্ঘ্য চৌধুরী বলেন, ‘‘হাসপাতাল থেকে সিসিটিভির ফুটেজ সংগ্রহ করার দায়িত্ব পুলিশের। হাসপাতালে কোনও চুরির ঘটনা ঘটলে তা তদন্ত করে দেখার দায়িত্বও তাদের।’’ তাঁর আরও বক্তব্য, ‘‘আমরা জেলা থেকে যে ফান্ড পেয়েছি, তা দিয়ে যেখানে যেখানে ক্যামেরা লাগানো সম্ভব, সেখানেই লাগানো হয়েছে।’’

হাসপাতালের রোগী কল্যাণসমিতির সদস্য পরেশরাম দাস বলেন, ‘‘অনেক সময়ে হাসপাতালের ভিতরে বাইরের লোকজন ঢুকে অসামাজিক কাজকর্ম করে বলে শুনেছি। প্রশাসনকে সঙ্গে নিয়ে কী ভাবে তা বন্ধ করা যায় তা দেখা হবে।’’ মহকুমাশাসক তথা রোগী কল্যাণসমিতির চেয়ারম্যান প্রদীপ আচার্য জানিয়েছেন, হাসপাতালের মধ্যে কিছু চুরির ঘটনা ঘটছে বলে তাঁরও কানে এসেছে। শুনেছি। পুলিশকে বিষয়টি দেখার জন্য বলা হবে।

তাঁর বক্তব্য, ‘‘জেলা থেকে যে ফান্ড পাওয়া গিয়েছে তা দিয়ে যতটা সম্ভব সিসিটিভি লাগানো হয়েছে। যদি আরও কিছু ক্যামেরা লাগানোর দরকার থাকে, তা হলে পরবর্তী বৈঠকে তা নিয়ে আলোচনা করে জেলায় প্রস্তাব পাঠানো হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Hospital CCTV
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE