ছিঁচকে চোরের উৎপাতে নাজেহাল অবস্থা ব্যারাকপুরবাসীর। টাকা, মোবাইল, গয়না, ল্যাপটপ এমনকী পরনের জামা-প্যান্ট পর্যন্ত হাতিয়ে নিয়ে যাচ্ছে চোরেরা। একে গরম পড়েছে, তায় রাতে লোডশেডিংয়ের গুঁতো। মঙ্গলবার রাতে মাথার কাছে জানালাটা খুলেই শুয়ে পড়েছিলেন সুকান্তপল্লির অসীমা বালা। জানালার কাছে টেবিলে সদ্য কেনা মোবাইল ফোনটি রেখেছিলেন শোওয়ার আগে। স্বামী মগরাহাটের বিডিও। রাতে শুতে যাওয়ার আগে স্বামীর সঙ্গে এক বার কথাও বলেছিলেন। সকালে ঘুম ভেঙে দেখেন মোবাইল উধাও। শুধু সিমকার্ডটা পড়ে আছে বালিশের পাশে। একা অসীমাদেবীই নন, পাশের বাড়ির শিবাশিস মুখোপাধ্যায়ও বোকা বনে গিয়েছেন সাতসকালে উঠে। দোতলার ঘরে জানালার পাশে টেবিলের উপরে মোবাইল আর মানি ব্যাগটা রেখেছিলেন। সকালে উঠে দেখেন দু’টিই গায়েব। এই ঘটনার অভিযোগ জমা পড়েছে টিটাগড় থানায়। খোঁজ-খবর চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
দিন কয়েক আগেই পলতায় এক প্রাক্তন বায়ুসেনার বাড়ি থেকে চোর বেশ কয়েকটি ভালো জামাকাপড় নিয়ে গিয়েছিল। যেগুলি পছন্দ হয়নি, সেগুলি বারান্দায় ফেলে গিয়েছিল। তারও কিছুদিন আগে পলতায় ঘোষপাড়া রোডের ধারে একটি বন্ধ পানশালার পিছনের রান্নাঘর থেকে চুরি হয়ে গিয়েছিল বাসনপত্র। গ্রিলে ঘেরা বারান্দায় জামাকাপড় শুকোতে দিয়ে আধশুকনো শাড়ি খুইয়ে মাস তিনেক আগেই থানা-পুলিশ করেছিলেন নৈহাটির সবিতা ঘোষ। কিন্তু তাতে চোরেদের উপদ্রব কমেনি। কলকাতার মতো ব্যারাকপুরে আগেই চালু হয়েছিল পুলিশের সাইকেল এবং মোটরবাইক বাহিনী। রাজ্য পুলিশের সঙ্গে এই বাহিনীতে বেশি সংখ্যক সিভিক ভলান্টিয়ারদের রাখা হয়েছিল। বছর দুয়েক আগে ছিঁচকে চুরি আটকাতে অলি-গলিতে টহল দেওয়ার জন্যই মূলত এই বাহিনী গড়া হয়েছিল। কিন্তু ওই বাহিনীর অনেককে ট্র্যাফিক সামলানোর কাজে নিয়োগ করা হয়। ব্যারাকপুর নতুন পুলিশ কমিশনার হয়েছেন তন্ময় রায়চৌধুরী। কমিশনারেটের টহলদারি ব্যবস্থা নতুন করে সাজতে আগামী সপ্তাহের গোড়াতেই সমস্ত থানার আধিকারিকদের নিয়ে আলোচনায় বসার কথা জানিয়েছেন তিনি। তন্ময়বাবু বলেন, ‘‘যে পরিকাঠামো ছিল, সেটিকেও আরও শক্তপোক্ত করা হবে। বাস্তব অবস্থা অনুযায়ী কিছু অদলবদলও হবে। তবে ছিঁচকে চুরির বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে।’’
ছিঁচকে চুরি যে এলাকাবাসীর রাতের ঘুম কেড়ে নিচ্ছে, তা নিয়ে বাসিন্দাদের পক্ষ থেকে স্মারকলিপিও জমা পড়েছে পুলিশের কাছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy