Advertisement
১৯ মে ২০২৪
Shantanu Thakur

অমিতের কথায় অভিমানী শান্তনু

নাগরিকত্ব আইনের প্রয়োগে কেন্দ্রের বিলম্বে ইতিমধ্যেই হতাশ মতুয়া সমাজের একটা বড় অংশ। ক্ষুব্ধ শান্তনুও। প্রকাশ্যেই ইদানীং সে সব কথা জানাতে শুরু করেছেন তিনি।

—ফাইল চিত্র

—ফাইল চিত্র

সীমান্ত মৈত্র
গাইঘাটা শেষ আপডেট: ২২ ডিসেম্বর ২০২০ ০৩:১৯
Share: Save:

কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের রাজ্য সফরে আরও জটিল হল মতুয়া রাজনীতি।

নাগরিকত্ব আইনের দ্রুত প্রয়োগ হোক। পালন করা হোক ভোটে দেওয়া প্রতিশ্রুতি। এমনটাই চান বনগাঁর বিজেপি সাংসদ তথা অল ইন্ডিয়া মতুয়া মহাসঙ্ঘের সঙ্ঘাধিপতি শান্তনু ঠাকুর। কিন্তু আগামী বিধানসভা ভোটের আগে যে তা সম্ভব নয় এ বার সফরে এসে তা কার্যত বুঝিয়ে দিয়েছেন অমিত। আর তাতেই ক্ষোভ বাড়ছে মতুয়াদের। স্বাভাবিক ভাবে সুর চড়াচ্ছেন শান্তনু।

কবে নাগরিকত্ব আইন প্রয়োগ হবে সে ব্যাপারে নির্দিষ্ট ভাবে কিছু বলেননি অমিত। তবে রবিবার বোলপুরে তিনি এ কথা বলেছেন, ‘‘করোনা পরিস্থিতির মধ্যে এতবড় অভিযান করা সম্ভব নয়। কেবল বিধি প্রণয়নই বাকি আছে। করোনাভাইরাসের টিকা এসে গেলে এবং করোনার চক্র (সাইকেল) ভেঙে গেলে আমরা এই বিষয়ে ভাবব।’’ রবিবার কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর মন্তব্যের প্রেক্ষিতে শান্তনু বলেন, ‘‘সাংবাদিকদের কাছে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কী বলেছেন, সেটা তাঁর নিজের ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত। সিএএ কার্যকর করা নিয়ে আমরা কোনও দায়ভা র নেব না। সিদ্ধান্ত ওঁদেরকেই (অমিতদের) নিতে হবে। সিএএ কার্যকর হলে পজ়িটিভ দিক আছে, আবার কার্যকর না হলে তার নেগেটিভ দিকও আছে। সেটা ওঁরা বুঝবেন।’’ এক ধাপ এগিয়ে শান্তনু এ-ও বলেছেন, ‘‘সিএএ কার্যকর করা নিয়ে আমি রাজনীতি বুঝি না। এবিষয়ে আমি কোনও সমঝোতা করতে চাই না।’’

নাগরিকত্ব আইনের প্রয়োগে কেন্দ্রের বিলম্বে ইতিমধ্যেই হতাশ মতুয়া সমাজের একটা বড় অংশ। ক্ষুব্ধ শান্তনুও। প্রকাশ্যেই ইদানীং সে সব কথা জানাতে শুরু করেছেন তিনি। দলের সঙ্গে দূরত্বও বাড়াচ্ছেন। নিজের এলাকায় বিজেপির রাজ্য সভাপতি, কেন্দ্রীয় জলশক্তি মন্ত্রীর কর্মসূচিতে তাঁর গরহাজিরা দলেরই অনেকের চোখে লেগেছে। এই পরিসরকে কাজে লাগাতে আবার তৎপর হয়েছে তৃণমূল। মতুয়াদের জন্য কাজ করতে চাইলে তৃণমূলের ‘প্ল্যাটফর্মে’ আসার বার্তা দেওয়া হয়েছে শান্তনুকে। দিন কয়েক গাইঘাটায় মতুয়া ঠাকুরবাড়িতে এসে বিজেপির কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয় জানিয়েছিলেন, রাজ্য সরকার সহযোগিতা করুক, বা না করুক, নাগরিকত্ব আইন প্রয়োগ হবেই। এবং তা হবে জানুয়ারি মাসের শেষ থেকে ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি কোনও সময়ে। এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত ঠাকুরনগরে মতুয়াদের পীঠস্থান ঠাকুরবাড়িতে জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে আসবেন বলে জানিয়েছিলেন কৈলাস। শান্তনুর সঙ্গে তিনি বৈঠকও করেছিলেন।

করোনাভাইরাসের টিকা আসার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। তবে তা জানুয়ারি, ফেব্রুয়ারিতে যে সম্ভব নয় তা মানছেন চিকিৎসক ও স্বাস্থ্য প্রশাসনের একটা বড় অংশ। সে সময়ের মধ্যে করোনার চক্র ভাঙাও কার্যত অসম্ভব। অর্থাৎ কৈলাসদের মধ্যস্থতা আপাতত কাজে লাগল না। শান্তনু স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, ‘‘যতক্ষণ না স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এখানে এসে নিজের মুখে ঘোষণা করছেন, কবে থেকে নাগরিক আইন প্রয়োগের কাজ শুরু হবে, তত দিন মতুয়াদের নাগরিক আইন প্রয়োগ নিয়ে আন্দোলন চলবে।’’ সিএএ বিরোধী মতুয়াদের প্রতিনিধি বনগাঁর প্রাক্তন তৃণমূল সাংসদ তথা অল ইন্ডিয়া মতুয়া মহাসঙ্ঘের সঙ্ঘাধিপতি মমতা ঠাকুর বলেন, ‘‘নাগরিকত্ব আইন চালু করার চেষ্টা হলে মতুয়াদের নিয়ে আন্দোলন শুরু করা হবে।’’ উত্তর ২৪ পরগনা জেলা তৃণমূল সভাপতি জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বলেন, ‘‘এনপিআরের পরে এনআরসি চালু করতে হবে। তারপরে শেষে সিএএ (নাগরিকত্ব আইন)। সব মিলিয়ে ৪-৫ বছরের বিষয়।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Shantanu Thakur Amit Shah BJP
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE