বরুনের দিদি প্রমীলা রায়। ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক।
বরুণ বিশ্বাসের খুনের মামলায় সাক্ষী হতে চেয়ে আদালতের দ্বারস্থ হলেন দিদি প্রমীলা রায় বিশ্বাস। বাবা সাক্ষী হওয়া সত্ত্বেও কেন তাঁকে সমন পাঠানো হচ্ছে না, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। প্রমীলার অভিযোগ, কামদুনিকাণ্ডের মতো বরুণের মৃত্যু-মামলাতেও বারবার সরকারি আইনজীবী বদল করে বিচারপ্রক্রিয়ায় দেরি করা হচ্ছে! দ্রুত যাতে বিচারপ্রক্রিয়া শেষ করে দোষীদের শাস্তি দেওয়া হয়, সেই মর্মেও বৃহস্পতিবার আদালতে আবেদন করেছেন প্রমীলা। আদালত সূত্রে খবর, বরুণের দিদির আবেদনের ভিত্তিতে আগামী ৭ মার্চ শুনানির সম্ভাবনা রয়েছে।
২০১২ সালের ৫ জুলাই খুন হন উত্তর ২৪ পরগনার গাইঘাটার সুটিয়ার প্রতিবাদী শিক্ষক বরুণ বিশ্বাস। সেই খুনের মামলার বিচার শুরু হয় পরের বছর ৫ জুলাই থেকে। বরুণের পরিবারের অভিযোগ, মামলায় ৫২ জন সাক্ষীর মধ্যে এখনও পর্যন্ত ২৪ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়েছে। ন’জন অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হলেও পরে তাঁরা সকলেই জামিনে মুক্ত হন। তাঁদের এক জনের মৃত্যুও হয়েছে। আদালতের দ্বারস্থ হয়ে বরুণের পরিবারের অভিযোগ, সিআইডির অসহযোগিতার কারণেই এখনও তারা বিচার পাননি। বনগাঁ অ্যাডিশনাল ডিস্ট্রিক্ট অ্যান্ড সেশন জাজ ফাস্ট ট্র্যাক ১ আদালতে বৃহস্পতিবার সাক্ষ্য গ্রহণ থাকলেও তাঁর বাবা জগদীশ বিশ্বাসকে ডাকা হয়নি বলে অভিযোগ করেছেন প্রমীলা । তাঁর দাবি, যাঁদের সাক্ষী করা হয়েছে, তাঁদের বেশির ভাগই অপরিচিত। তিনি চার-পাঁচ জনের নাম আদালতে জানিয়েছেন। প্রমীলার আবেদন, তাঁদের সাক্ষী করা হোক। তাঁদের মধ্যে প্রমীলা নিজেও রয়েছেন।
২০০০-২০০২ সালে সুটিয়ায় একের পর এক গণধর্ষণের ঘটনায় প্রতিবাদী মঞ্চ গড়়ে আন্দোলনে নেমেছিলেন বরুণ ও তাঁর মতো আরও বহু মানুষ। ধরাও পড়ে বেশ কয়েকজন। সাজা হয়। গণধর্ষণের আরও কিছু মামলা তখনও চলছিল। যার মূল সাক্ষী ছিলেন কলকাতার মিত্র ইনস্টিটিউশনের (মেন) বাংলার শিক্ষক বরুণ। এলাকায় প্রতিবাদী মুখ হিসাবে তাঁর গ্রহণযোগ্যতা ছিল ঘরে। উপকারী, মিষ্টভাষী যুবকটিকে ভালবাসতেন অসংখ্য মানুষ। ২০১২ সালের ৫ জুলাই এই বরুণকেই গোবরডাঙা স্টেশনের বাইরে গুলি করে মারে কিছু দুষ্কৃতী। তাঁর খুনের পরে এককাট্টা হন এলাকার অসংখ্যা মানুষ। বরুণের খুনিদের শাস্তির দাবিতে সোচ্চার হয় গোটা রাজ্য। সিবিআই তদন্তের দাবি থাকলেও সিআইডি তদন্তভার গ্রহণ করে। তারা জানায়, দমদম সেন্ট্রাল জেলে বসে বরুণকে খুনের ছক কষেছিল সুশান্ত চৌধুরী। এই ব্যক্তি আবার সুটিয়া গণধর্ষণ-কাণ্ডের অন্যতম সাজাপ্রাপ্ত আসামি। সুশান্ত পরে আলিপুর জেলে মারা যান।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy