Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
sandeshkhali

আধ কিলোমিটার পথ উজিয়ে আনতে হয় মিড ডে মিলের জল

একই ব্লকের ডিটিডি শহিদ স্মৃতি স্কুলেও পানীয় জলের কল অকেজো। সাবমার্সিব্‌ল পাম্পেও জল উঠছিল না। আরও পাইপ বসিয়ে আপাতত জল মিলছে।

ভোগান্তি: অকেজো হয়ে পড়ে রয়েছে নলকূপ। সন্দেশখালিরএকটি স্কুলে। নিজস্ব চিত্র

ভোগান্তি: অকেজো হয়ে পড়ে রয়েছে নলকূপ। সন্দেশখালিরএকটি স্কুলে। নিজস্ব চিত্র

নবেন্দু ঘোষ 
সন্দেশখালি শেষ আপডেট: ২৮ মার্চ ২০২৩ ০৯:৫৩
Share: Save:

গরম পড়তে না পড়তেই বহু স্কুলে পানীয় জলের কল অকেজো হয়ে পড়ছে। সন্দেশখালি ২ ব্লক জুড়ে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র, প্রাথমিক, উচ্চ প্রাথমিক ও হাইস্কুল মিলিয়ে প্রায় ৪০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে জলের সমস্যা তৈরি হয়েছে বলে ব্লক প্রশাসন সূত্রের খবর। কোরাকাটি পঞ্চায়েতের দক্ষিণ তুষখালি আদিবাসী পশ্চিমপাড়া এফপি স্কুলের পানীয় জলের কল দেড় মাস ধরে খারাপ। প্রতি বছরই গরম কালে এই পরিস্থিতি হল বলে স্কুল সূত্রের খবর। স্কুলের কাছেপিঠে পানীয় জলের ব্যবস্থা নেই। প্রায় আধ কিলোমিটার পেরিয়ে মিড ডে মিলের রান্নার জল আনতে হচ্ছে। পড়ুয়াদের বাড়ি থেকে পানীয় জল আনতে হচ্ছে। স্কুলের পাশের পুকুর থেকে জল নিয়ে বাসন ধোওয়ার কাজ সারতে হয়। শৌচাগারে ব্যবহারের জলও আনা হয় সেখান থেকে। কেউ জলের বোতল আনতে ভুলে গেলে বা বোতলের জল ফুরিয়ে গেলে সমস্যায় পড়ে।

ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক বিকাশকুমার মণ্ডল বলেন, “মিস্ত্রি বলেছে, এই কল আর সারানো যাবে না। স্কুলে পানীয় জলের ঠিকঠাক ব্যবস্থা দরকার। দূর থেকে জল আনা খুবই সমস্যার। ব্লক অফিসে ও শিক্ষা দফতরকে জানিয়েছি।” দুর্গামণ্ডপ পঞ্চায়েতের দক্ষিণ দুর্গামণ্ডপ এফপি স্কুলেও পানীয় জলের তেমন কোনও ব্যবস্থা নেই। লকডাউনের পর থেকে স্কুলের কল খারাপ। এত দিন পাশের একটি কল ব্যবহার করা হত। গ্রীষ্মের শুরুতে সেটিও খারাপ হয়ে গিয়েছে। এখন পানীয় জলের জন্য পাশের একটি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে যেতে হয় ১৫২ জন পড়ুয়া ও শিক্ষকদের। ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক শুভদীপ ঘোষ বলেন, “স্কুলের এত জন পড়ুয়ার জন্য পানীয় জলের নিজস্ব কোনও ব্যবস্থা নেই। রাস্তা পেরিয়ে বার বার স্বাস্থ্যকেন্দ্রে জল খেতে যেতে হয় ছোটদের।” একই ব্লকের ডিটিডি শহিদ স্মৃতি স্কুলেও পানীয় জলের কল অকেজো। সাবমার্সিব্‌ল পাম্পেও জল উঠছিল না। আরও পাইপ বসিয়ে আপাতত জল মিলছে। এই জলই ব্যবহার করছে পাশের দুর্গামণ্ডপ ধুচনিখালি এফপি স্কুলের পড়ুয়ারাও। দু’টি স্কুল মিলিয়ে প্রায় ৮০০ জন ছাত্রছাত্রী। বিদ্যুৎ সংযোগ কোনও কারণে বিচ্ছিন্ন হলে পাম্প চালানো যায় না। তখন দু’টি স্কুলই জলশূন্য হয়ে পড়ে। কিছুটা দূরের কল থেকে জল বয়ে আনা ছাড়া উপায় থাকে না।

দ্বারিরজাঙ্গাল বনমালী বিদ্যাভবনের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সাধন সরকার বলেন, “ব্লক প্রশাসনকে জানিয়ে কোনও কাজ হচ্ছে না। স্কুলে একটিমাত্র কল রয়েছে, সেটিও গ্রীষ্মের শুরুতে খারাপ হয়েছে। মিস্ত্রি পেতেও দু’একদিন সময় লেগে যায়। পানীয় জলের বিকল্প ব্যবস্থা দরকার স্কুলে।”

সন্দেশখালি ২ বিডিও অর্ণব মুখোপাধ্যায় বলেন, “ব্লকের অন্তত ৩০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে পানীয় জলের সমস্যার খবর পেয়েছি। এটাই এখন ব্লকের বড় সমস্যা। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানিয়েছি। জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরকেও বার বার জানানো হচ্ছে। তবুও বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পানীয় জলের সমস্যার সমাধান হচ্ছে না।”

জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিক কল্লোল বিশ্বাস বলেন, “কাজ চলছে। কিছু দিনের মধ্যেই সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

sandeshkhali Mid Day Meal
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE