পথে-পথে: বনগাঁয়। ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক
দিনের পর দিন জ্বরে মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে। বিভিন্ন এলাকাতে থাবা বসাচ্ছে ডেঙ্গি। কিন্তু এখনও মানুষের মধ্যে ডেঙ্গি নিয়ে সচেতনতার অভাব রয়েছে।
এ বার ডেঙ্গি সম্পর্কে মানুষকে বোঝাতে এগিয়ে এল স্কুল পড়ুয়ারা। বনগাঁ ব্লকের ধর্মপুকুরিয়া পঞ্চায়েতের মণিগ্রাম উচ্চ বিদ্যালয়ের ১২০০ ছাত্রছাত্রী ও শিক্ষক-শিক্ষিকারা এখন মশা মারতে ব্যস্ত।
সোমবার থেকে কাজ শুরু হয়েছে। তাঁদের সঙ্গে ওই কাজে হাত লাগান পঞ্চায়েত প্রধান সন্তোষ রায়ও। এ দিন সকালে স্কুলে ভগিনী নিবেদিতার জন্মের সার্ধশতবর্ষ উৎযাপন হয়। সেখানে স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকারা পড়ুয়াদের ডেঙ্গি সম্পর্কে বোঝান। এরপর দশটি দলে ভাগ হয়ে চুন, ব্লিচিং, কেরোসিন তেল নিয়ে এলাকায় বেরিয়ে পড়েন তাঁরা। হাতে দস্তানা পড়ে রাস্তার মাঝের গর্তে ও ডোবায় কেরোসিন তেল দেন। বাকি জায়গায় চুন, ব্লিচিং ছড়ান। স্কুলের প্রধান শিক্ষক স্বপনকুমার বাছার বলেন, ‘‘ডেঙ্গি সম্পর্কে মানুষের মধ্যে সচেতনার অভাব রয়েছে। তার ফলে তাঁরা আরও বেশি আতঙ্কিত হয়ে পড়ছেন। মানুষকে সচেতন করতে আমাদের এই পদক্ষেপ।’’
এ দিন ডেঙ্গি সম্পর্কে গ্রামবাসীকে সচেতন করতে ছাপানো লিফলেটও বিলি করেন স্কুল পড়ুয়ারা। কোনও বাড়ির সামনে জমা জল দেখলেই স্কুলের শিক্ষক রমাপ্রসাদ বিশ্বাস, অনিন্দ্য রায়, সাধন দাস, রবিশঙ্কর দাসেরা গৃহকর্তাদের ডেকে সচেতন করেছেন। দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রী সুস্মিতা বিশ্বাস, শুভা মণ্ডল, বন্দনা বৈদ্যেরা ব্লিচিং ছড়ানোর সময় বলে, ‘‘আমরা নিজেরাও এ দিন ডেঙ্গি সম্পর্কে অনেক কিছু জানলাম। বাড়িতে গিয়ে পরিবারের লোকজন ও প্রতিবেশীদের এই মারণরোগ সম্পর্কে বোঝাব।’’
ধর্মপুকুরিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকে এ দিন ওই স্কুলকে ব্লিচিং দিয়ে সহযোগিতা করা হয়েছে। প্রধান সন্তোষবাবু নিজেও এ দিন পড়ুয়াদের সঙ্গে ব্লিচিং ও কেরোসিন ছড়িয়েছেন। দিন কয়েক আগে ওই পঞ্চায়েত এলাকার মাধবপুরে পঞ্চম শ্রেণির এক ছাত্রী ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছে। তারপর থেকে পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকে মশা মারার কাজ শুরু হয়েছে। সন্তোষবাবু বলেন, ‘‘আমাদের কর্মীর অভাব রয়েছে। তাই এখন থেকে এলাকায় যে তিনটি হাইস্কুল ও ১৩টি প্রাথমিক স্কুল রয়েছে সেখানকার পড়ুয়া ও শিক্ষক-শিক্ষকাদের নিয়ে মশা মারার কাজ করা হবে। পঞ্চায়েত থেকে চুন, ব্লিচিং ও কেরোসিন দিয়ে সহযোগিতা করা হচ্ছে।’’ টাকার অভাবে মশা মারার কামান বা মরা মারার স্প্রে মেশিন কিনতে পারেনি পঞ্চায়েত। তবে পঞ্চায়েতের নিজস্ব ফাণ্ড থেকে চুন, ব্লিচিং, কেরোসিন কেনা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন প্রধান।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy