শুক্লা মণ্ডল।
তৃণমূল পরিচালিত বাগদা পঞ্চায়েত সমিতির নতুন সভাপতি হলেন শুক্লা মণ্ডল। বৃহস্পতিবার নতুন সভাপতি নির্বাচনের জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে সভা ডাকা হয়েছিল ব্লক অফিসে। সেখানে সর্বসম্মত ভাবে শুক্লাদেবী সভাপতি মনোনীত হন। এ দিনের সভায় সমিতির মোট ২৭ জন সদস্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ১৯ জন। সকলেই শুক্লাদেবীকে ওই পদে মনোনীত করেন। ওই ১৯ জনের মধ্যে তৃণমূলের সদস্য ছিলেন ১৫ জন। বাকি চারজন বামেদের টিকিটে ভোটে জিতে কোনও না কোনও সময়ে তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন।
সম্প্রতি তৃণমূল পরিচালিত বাগদা পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি শম্পা অধিকারীর অপসারণ দাবি করে সমিতির ১৭ জন সদস্য অনাস্থা প্রস্তাব জমা দিয়েছিলেন মহকুমাশাসক সুদীপ মুখোপাধ্যায়ের কাছে। ওই ১৭ জনের মধ্যে বিরোধীরা ছাড়াও তৃণমূলের সদস্য ছিলেন ৭ জন। তারপরেই অবশ্য শম্পাদেবী দলের নির্দেশে সভাপতির পদ থেকে পদত্যাগ করেন। ফলে অনাস্থার জন্য আর ভোটাভুটির প্রয়োজন হয়নি।
নতুন সভাপতি কে হবেন, তা নিয়ে রাজনৈতিক কৌতুহল ছিল। সমিতির মোট সদস্য সংখ্যা ২৭। স্বাভাবিক ভাবে সভাপতির পদটি তৃণমূলের হাতছাড়া হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু আসরে নামেন শাসক দলের রাজ্য ও জেলা নেতৃত্ব। জেলা সভাপতি জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের নির্দেশে বনগাঁর প্রাক্তন বিধায়ক গোপাল শেঠ, দলের জেলার কার্যকরী সভাপতি রতন ঘোষ, বনগাঁ উত্তর কেন্দ্রের বিধায়ক বিশ্বজিৎ দাস দলের যে সাতজন সদস্য অনাস্থায় সাক্ষর করেছিলেন, তাঁদের সঙ্গে বারবার আলোচনায় বসেন বলে দলীয় সূত্রের খবর। শেষে দল যাঁকে সভাপতি করবে, তাঁকেই সমর্থন দিতে রাজি হন ওই সাত জন।
গোপালবাবু বলেন, ‘‘বিধানসভা ভোটের আগে সমিতির ওই সাতজন সদস্যেদের সঙ্গে কিছু ভুল বোঝাবুঝি হয়েছিল। এখন তা মিটে গিয়েছে। দলের জেলা সভাপতি জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের হুইপ মেনে এ দিন তাঁরা দলীয় প্রার্থীকেই সমর্থন করেছেন।’ পাশাপাশি এ দিন সমিতির ফরওয়ার্ড ব্লকের সদস্য সুকুর আলি দফাদারও দল ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন।
বিধানসভা ভোটের আগে প্রাক্তন বিধায়ক দুলাল বরের সঙ্গে তৃণমূল ছেড়ে সমিতির ওই সদস্যেরা কংগ্রেসে যোগ দিয়েছিলেন। তাঁরা তখন বাগদার তৎকালীন বিধায়ক উপেন বিশ্বাসের উপরে ক্ষোভ উগরে দিয়েছিলেন। কংগ্রেসে যোগ দিলেও তৃণমূলের পক্ষ থেকে তাঁদের সমিতির সদস্যপদ খারিজের চেষ্টা করা হয়নি।
কী বলেছেন ওই সদস্যেরা?
তাদেরই অন্যতম সমিতির পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ কার্তিক বাইন বলেন, ‘‘শম্পাদেবীর মানসিকতা উন্নয়ন ও সমন্নয়ের পক্ষে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিল। তাই তাঁর অসসারণ চেয়েছিলাম। তা ছাড়া, এলাকার উন্নয়নের স্বার্থে আমরা দলীয় প্রার্থীকে সমর্থন করেছি। তৃণমূল করতাম, এখনও তাই করছি। দল তো আমাদের বহিষ্কার করেনি।’’
জ্যোতিপ্রিয়বাবু বলেন, ‘‘দলীয় নির্দেশ মেনে সকলেই সমর্থন করেছেন দলীয় প্রার্থীকে। এম বার থেকে বাগদার সংগঠনের কাজ উপেনবাবুর পাশাপাশি আমিও দেখব। শম্পাদেবীকে সরানো হয়েছিল, কারণ তাঁর সঙ্গে বাকি সদস্যদের সমন্বয়ের অভাব ছিল।’’
কিন্তু কংগ্রেস ওই সাত সদস্যের ভূমিকার সমালোচনা করতে ছাড়ছে না। দলের নেতা কৃষ্ণপদ চন্দ বলেন, ‘‘ব্যক্তিস্বার্থ চরিতার্থ করতে ওঁরা কংগ্রেসে এসেছিলেন। আমরা আশ্রয় দিয়েছিলাম। স্বার্থ মিটে গিয়েছে, ফের ওঁরা তৃণমূলে ফিরে গেলেন। বাগদার মানুষের কাছে ওঁরা বেইমান হিসাবে প্রমাণিত হলেন।’’
ফরওয়ার্ড ব্লকের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য মৃত্যুঞ্জয় চক্রবর্তী বলেন, ‘‘বাগদার মানুষের সঙ্গে ওই সাত সদস্য বিশ্বাসঘাতকতা করলেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy