E-Paper

গাঁয়ের  বধূর কথা

ভোটারদের একটা বড় অংশ মহিলা। আসন্ন পঞ্চায়েত ভোট নিয়ে কী ভাবছেন তাঁরা? ভোট নিয়ে কতটা আলোচনা হয় আত্মীয়-বন্ধুদের সঙ্গে? এলাকার উন্নয়ন নিয়ে কী আশা করেন? অপ্রাপ্তি কোথায়?

শেষ আপডেট: ০৯ এপ্রিল ২০২৩ ০৭:১৩
তুলসীতলায় মিনু ঘোষ।

তুলসীতলায় মিনু ঘোষ।

মিনু ঘোষ

* বাড়ি: হিঙ্গলগঞ্জ ব্লকের বিশপুর পঞ্চায়েত এলাকায়

* গ্রামে কী সমস্যা চোখে পড়ে: রাস্তাঘাট খুব খারাপ। রাস্তায় আলো নেই। এখনও বাড়িতে পানীয় জল আসেনি। গ্রামে জল সংগ্রহের জায়গাটি অপরিচ্ছন্ন। কোনও হাসপাতালও নেই আশেপাশে। রাতে কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে বহু পথ পেরিয়ে খুলনা বা টাকি হাসপাতালে যেতে হয়। বায়লানি বাজারে রাস্তার পাশে পসরা নিয়ে বসেন অনেকে। বাজারে আনাজ, মাছ, মাংস বিক্রেতাদের বসার জায়গা ঠিক নেই। বাজার করতেও সমস্যা হয়।

* কী হলে ভাল হয়: বাড়িতে পানীয় জল এলে ভাল হয়। রাস্তা সংস্কার ও পর্যাপ্ত আলো দরকার। কাছাকাছি হাসপাতাল নির্মাণ প্রয়োজন। কমিউনিটি হল ও পার্ক তৈরি হলে ভাল হয়।

* পাড়া-পড়শির সঙ্গে ভোট নিয়ে কথা হয়: হ্যাঁ হয়। ভোট যত এগিয়ে আসছে তত এ সব নিয়ে আলোচনা বাড়ছে।

* কাকে ভোট দেবেন, তা নিয়ে পরিবারের কেউ বোঝানোর চেষ্টা করেন: না, আমি নিজের সিদ্ধান্ত মতো ভোট দিই।

* মিটিং মিছিলে বেরোতে হয়: না যাই না। ডাকেও না কেউ।

* গ্রামের পথঘাটে একা বেরোতে কতটা নিরাপদ বোধ করেন: সন্ধে নামলেই রাস্তা অন্ধকার। এলাকায় পুলিশের টহল দেখি না। তাই ভয়-ভয় করে। গ্রামে বহু আগে একটি পুলিশ ফাঁড়ি ছিল। বহু বছর হল পঞ্চায়েত এলাকায় পুলিশ ফাঁড়ি নেই। গ্রাম থেকে থানা বহু দূরে।

ঘরের কাজে ব্যস্ত হালিমা খাতুন।

ঘরের কাজে ব্যস্ত হালিমা খাতুন।

হালিমা খাতুন

* বাড়ি: হিঙ্গলগঞ্জ ব্লকের হিঙ্গলগঞ্জ পঞ্চায়েত

* গ্রামে কী সমস্যা চোখে পড়ে: অনেক রাস্তায় পর্যাপ্ত আলো নেই। পানীয় জল বাড়িতে এসেছে, কিন্তু প্রায়ই কেঁচো, শ্যাওলা মেলে সেই জলে। এলাকার নিকাশি বেহাল। বর্ষাকালে সমস্যা হয়। গ্রামের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া নদীর বাঁধ দুর্বল।

* কী হলে ভাল হয়: বাড়িতে পরিস্রুত পানীয় জল এলে ভাল হয়। সব রাস্তায় পর্যাপ্ত আলো দরকার। অনেক বার গৌড়েশ্বর নদীর বাঁধ ভেঙে এলাকা প্লাবিত হয়েছে। ওই বাঁধ কংক্রিটের করা দরকার। ইছামতি নদীর বাঁধে আরও ম্যানগ্রোভ লাগালে ভাল হয়।

* পাড়া-পড়শির সাথে ভোট নিয়ে কথা হয়: হ্যাঁ, ভোটের সময়ে পাড়ার মহিলারা একজোট হলে ভোট নিয়ে আলোচনা চলে।

* কাকে ভোট দেবেন, তা নিয়ে পরিবারের কেউ বোঝানোর চেষ্টা করেন: ভোট আসলেই কাকে ভোট দেওয়া যায়, সে নিয়ে আলোচনা হয়। তবে শেষে যে যার ইচ্ছা মতোই ভোট দিই।

* মিটিং মিছিলে বেরোতে হয়: ডাকেন পাড়ার নেতারা। তবে যাই না।

* গ্রামের পথঘাটে একা বেরোতে কতটা নিরাপদ বোধ করেন: পাড়ার অলিগলি, এমনকী হাসনাবাদ-নেবুখালি রোডেও পর্যাপ্ত আলো নেই। রাতে বেরোলে ভয়-ভয় করে।

পেল্লায় মাছ নিয়ে বসে সরলা বিশ্বাস।

পেল্লায় মাছ নিয়ে বসে সরলা বিশ্বাস।

সরলা বিশ্বাস

* বাড়ি: হিঙ্গলগঞ্জ ব্লকের কালীতলা পঞ্চায়েত

* গ্রামে কী সমস্যা চোখে পড়ে: রাস্তাঘাটের সমস্যা আছে। রাস্তায় পর্যাপ্ত আলো নেই। এই গ্রামে বিয়ে হয়ে আসার পর থেকেই দেখছি পানীয় জলের সমস্যা রয়েছে। গরমকালে সমস্যা বাড়ে। তখন জল কিনে খেতে বাধ্য হই। সুন্দরবনের জঙ্গলের পাশে বাড়ি। মাঝে মধ্যে বাঘ জঙ্গলের বাইরে চলে আসে। বিকেল ৪টের পরে অটো মেলে না। সামসেরনগর থেকে সরকারি বাস রুট থাকলেও দিনে একটা বাস যায়। সেটাও অনিয়মিত। এলাকায় মোবাইল নেটওয়ার্ক দুর্বল।

* কী হলে ভাল হয়: পানীয় জল দ্রুত বাড়ি বাড়ি আসা দরকার। পঞ্চায়েত এলাকায় একটা হাসপাতাল হলে ভাল হয়। রাস্তা সংস্কার, আলোর ব্যবস্থা করা দরকার। বিশেষ করে জঙ্গলের পাশে পর্যাপ্ত আলোর প্রয়োজন। বাসের সংখ্যা বাড়ালে ভাল হয়। অটো চলাচলের সময়সীমা আরও বাড়ানো দরকার।

* পাড়া-পড়শির সঙ্গে ভোট নিয়ে কথা হয়: হ্যাঁ, মাঝে মধ্যে আলোচনা হয়।

* কাকে ভোট দেবেন, তা নিয়ে পরিবারের কেউ বোঝানোর চেষ্টা করেন: না, আমি নিজের সিদ্ধান্ত মতো ভোট দিই।

* মিটিং মিছিলে বেরোতে হয়: ডাক আসে পাড়ার নেতাদের থেকে। তবে আমি সময় পাই না যাওয়ার।

* গ্রামের পথঘাটে একা বেরোতে কতটা নিরাপদ বোধ করেন: তেমন কোনও সমস্যা নেই। বিএসএফ টহল দেয় গ্রামে। সিভিক ভলান্টিয়ারও দেখা যায়।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Panchayat Election House Wife Hingalganj

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy