হাসপাতালে আহত এক ব্যক্তি। ছবি: শান্তনু হালদার
প্রথমে থানা চত্বরে তুমুল বিস্ফোরণের শব্দ। প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই ‘ফটফট, দুমদুম’। অনেকে ভেবে নেন, জঙ্গি-হামলা হয়েছে। কারও মনে আসে সদ্য ঘটা বর্ধমান-কাণ্ডের কথা। দোকানপাট বন্ধ হয়ে যায়। যশোহর রোডের উপরে গাড়ি থামিয়ে পালাতে থাকেন যাত্রীরা। মিনিট পাঁচেক পরে শব্দ বন্ধ হলে দেখা যায়, হাবরা থানা চত্বরে আধপোড়া গাড়ির আশপাশে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে পড়ে কাতরাচ্ছেন কয়েকজন। জানা যায়, আটক করা শব্দবাজি ওই গাড়ি থেকে নামানোর সময় ফেটেই এই বিপত্তি।
সোমবার দুপুর ১টা নাগাদ এই দুর্ঘটনায় জখম হন ছয় পুলিশ কর্মী-সহ ৯ জন। উত্তর ২৪ পরগনার পুলিশ সুপার তন্ময় রায়চৌধুরী বলেন, “প্রচুর শব্দবাজি আটক করা হয়েছিল। সে সব থানায় আনার পরেই কোনও ভাবে ফেটে যায়। বিস্ফোরণের কারণ জানতে ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞদের ডাকা হয়েছে।” প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গেও কথা বলা হচ্ছে বলে জানান পুলিশ সুপার।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, গত কয়েকদিন ধরেই নিষিদ্ধ শব্দবাজি ধরতে অভিযান চলছে হাবরা থানা এলাকায়। এ দিন পুলিশের একটি দল তল্লাশি চালায় দক্ষিণ হাবরায়। দোদমা, কালীপটকা, বড় চকোলেট বোম-সহ প্রচুর নিষিদ্ধ বাজি উদ্ধার করা হয়। একটি বস্তা এবং দু’টি পেটিতে করে সে সব বাজেয়াপ্ত করে গাড়িতে তুলে থানায় পৌঁছন পুলিশকর্মীরা। একটি পেটি নামানোর পরে, দ্বিতীয় পেটি নামানোর সময়ে বিস্ফোরণ হয়।
পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দারা জখমদের উদ্ধার করেন। ন’জনই বারাসতের একটি নার্সিংহোমে চিকিৎসাধীন। তাঁদের মধ্যে সাব-ইনস্পেক্টর নন্দন মণ্ডল, অ্যাসিস্ট্যান্ট সাব-ইনস্পেক্টর মানিক মুখোপাধ্যায় এবং বিশ্বনাথ কুণ্ডু নামে স্থানীয় এক যুবক গুরুতর জখম।
ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা গেল, থানার সামনে বারুদের দাগ। বাতাসে কটূ গন্ধ। কিছু বাজি থানা চত্বরের এক কোণে রেখে তার উপরে জল ঢালা হয়েছে। যে গাড়ি থেকে বাজি নামানো হচ্ছিল সেটির কিছুটা পুড়ে গিয়েছে। জানলার কাচ ভাঙা। বিস্ফোরণের শব্দে থানার কিছু জানলার কাচও ভেঙেছে। পুলিশকর্মী ছাড়া যে তিন জন জখম হয়েছেন, স্থানীয় বিধায়ক হিসাবে রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক তাঁদের চিকিৎসার জন্য আর্থিক সাহায্যের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy