Advertisement
০৪ মে ২০২৪

এডস আক্রান্ত সন্দেহে দম্পতিকে পিটুনি ক্যানিংয়ে

নিজে এইচআইভি আক্রান্ত হয়ে শুরু করেছিলেন এড্স নিয়ে প্রচার। কিন্তু সে প্রচার তাঁর নিজের গ্রামেই যে বিশেষ সাড়া ফেলেনি, বুধবার রাতে গ্রামবাসীদের হাতে তাঁর হেনস্থার ঘটনাতেই তা স্পষ্ট। ওই দিন এইচআইভি আক্রান্ত ওই দম্পতিকে মারধর করে গ্রামছাড়া করার চেষ্টা করে গ্রামবাসীদের একাংশ। শুধু মারধর করেই ক্ষান্ত হয়নি তারা। বাধা দিতে এগিয়ে এসেছিলেন পড়শি গ্রামের এক যুবক। মহিলার সঙ্গে ওই যুবকের ‘সম্পকের্র’ প্রশ্ন তুলে তাঁর নামে অপবাদও ছড়িয়ে দেয় গ্রামবাসীরা।

নিজস্ব সংবাদদাতা
ক্যানিং শেষ আপডেট: ২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০২:৫০
Share: Save:

নিজে এইচআইভি আক্রান্ত হয়ে শুরু করেছিলেন এড্স নিয়ে প্রচার। কিন্তু সে প্রচার তাঁর নিজের গ্রামেই যে বিশেষ সাড়া ফেলেনি, বুধবার রাতে গ্রামবাসীদের হাতে তাঁর হেনস্থার ঘটনাতেই তা স্পষ্ট।

ওই দিন এইচআইভি আক্রান্ত ওই দম্পতিকে মারধর করে গ্রামছাড়া করার চেষ্টা করে গ্রামবাসীদের একাংশ। শুধু মারধর করেই ক্ষান্ত হয়নি তারা। বাধা দিতে এগিয়ে এসেছিলেন পড়শি গ্রামের এক যুবক। মহিলার সঙ্গে ওই যুবকের ‘সম্পকের্র’ প্রশ্ন তুলে তাঁর নামে অপবাদও ছড়িয়ে দেয় গ্রামবাসীরা।

এইচআইভি আক্রান্ত আহত ওই দম্পতিকে ভর্তি করানো হয়েছে ক্যানিং হাসপাতালে। পুলিশ অবশ্য তৎপর হয়ে ওই ঘটনায় অভিযুক্ত তিন গ্রামবাসীকে গ্রেফতারও করেছে।

একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার হয়ে এড্স-সচেতনতার কাজ করেন ওই মহিলা। নিজের গ্রাম, পরানিখেকোতে তা নিয়ে বার কয়েক শিবিরও করেছেন তিনি। তবে তাতে বিশেষ সাড়া দেননি গ্রামের মানুষ।

বুধবার রাতে মহিলার পাতানো এক গ্রামতুতো ভাই তাঁর বাবার পারলৌকিক কাজের জন্য দিদি-জামাইবাবুকে নিমন্ত্রণ করতে পরানিখেকো গ্রামে এসেছিলেন। বাড়িতে সে সময়ে ছিলেন না মহিলার স্বামী। সেই সময়ে গ্রামবাসীরা তাঁদের বাড়িতে চড়াও হয়ে শুরু করে মারধর।

মহিলার স্বামী পেশায় রিকশাচালক। তাঁরও এইচআইভি পজিটিভ। বুধবার হামলার খবর পেয়ে বাড়ি ফিরে তিনিই পুলিশে খবর দেন। তাঁর অবশ্য অভিযোগ, “আমার এক টুকরো জমি নিয়ে পিসতুতো দাদার সঙ্গে বিরোধ চলছে। লোকজনকে ভুল বুঝিয়ে সেই এই কাণ্ড ঘটিয়েছে।”

ক্যানিং হাসপাতালের সুপার ইন্দ্রনীল সরকার বলেন, “অমানবিক ঘটনা। এইচআইভি পজিটিভ মানেই এড্স নয়। আর এড্স কখনওই ছোঁয়াচে নয়। এই সচেতনতাটাই মানুষের মধ্যে আসছে না।” স্বাস্থ্য দফতরের এড্স সচেতনতার কাজটি করে একটি বেসরকারি সংস্থা। ‘পিপল লিভিং উইথ এড্স’ নামে ওই সংস্থার পক্ষে অজয় নস্কর বলেন, “সচেতনতার অভাবে ওই দম্পতিকে মারধর করেই ক্ষান্ত হয়নি গ্রামবাসীদের একাংশ। তাঁদের নামে অপবাদও দেওয়া হচ্ছে।”

ওই মহিলার স্বামী বলেন, “গ্রামে এড্স নিয়ে বেশ কয়েক বার প্রচার করেছেন আমার স্ত্রী। কিন্তু দেখছি কিছুতেই কিছু হল না।” গ্রামটি নিকারিঘাটা পঞ্চায়েতের অধীন। ওই এলাকার পঞ্চায়েত সদস্য কংগ্রেসের প্রশান্ত বায়েন বলেন, “এইচআইভি আক্রান্তের প্রতি মানুষকে আরও সহনশীল হতে হবে। ওঁদের উপরে আক্রমণ কোনও ভাবেই মেনে নেওয়া যায় না।” তিনি জানান, পঞ্চায়েতের উদ্যোগেও গ্রামে এড্স নিয়ে শিবির করার কথা ভাবছেন তাঁরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Canning
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE