Advertisement
E-Paper

গাফিলতির অভিযোগ শিক্ষকের বিরুদ্ধে, স্কুলে বিক্ষোভ পড়ুয়াদের

ফুটবল টুর্নামেন্টে স্কুলের দল বাদ পড়ায় স্কুল-গেটে তালা ঝুলিয়ে, প্রধান শিক্ষককে ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখাল এক দল ছাত্র। মিড ডে মিলের চালে পোকা থেকে শুরু করে স্কুলের পরিকাঠামোর অভাব, টোকাটুকিতে বাধা দেওয়া হাজারটা কারণে স্কুলে স্কুলে এমন বিক্ষোভের সাক্ষী এ রাজ্য। তবে বৃহস্পতিবার বাদুড়িয়ার মহেশপুর সর্বপল্লি হাইস্কুলে যে কারণে ঘেরাও হলেন প্রধান শিক্ষক, তা এক কথায় নজিরবিহীন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২২ অগস্ট ২০১৪ ০০:৩৭

ফুটবল টুর্নামেন্টে স্কুলের দল বাদ পড়ায় স্কুল-গেটে তালা ঝুলিয়ে, প্রধান শিক্ষককে ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখাল এক দল ছাত্র।

মিড ডে মিলের চালে পোকা থেকে শুরু করে স্কুলের পরিকাঠামোর অভাব, টোকাটুকিতে বাধা দেওয়া হাজারটা কারণে স্কুলে স্কুলে এমন বিক্ষোভের সাক্ষী এ রাজ্য। তবে বৃহস্পতিবার বাদুড়িয়ার মহেশপুর সর্বপল্লি হাইস্কুলে যে কারণে ঘেরাও হলেন প্রধান শিক্ষক, তা এক কথায় নজিরবিহীন।

বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, প্রধান শিক্ষকের গাফিলতিতে তাদের আন্তঃস্কুল ফুটবল প্রতিযোগিতা থেকে বাদ পড়তে হয়েছে। প্রধান শিক্ষক সাহানওয়াজ আহমেদ অবশ্য বলেন, “বহিরাগতদের নিয়ে ফুটবল দল করলে আখেরে স্কুলের বদনাম। ছাত্রদের বারণ করা সত্ত্বেও তারা বহিরাগতদের নিয়ে ফুটবল দল করায় প্রতিযোগিতা থেকে বাদ পড়েছে।” এ জন্য ক্রীড়াশিক্ষককেও দুষেছেন তিনি। যদিও তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অসত্য বলে দাবি করে ক্রীড়াশিক্ষক আব্দুল রাজ্জাক জানান, বহিরাগত কাউকে নিয়ে খেলতে যাওয়া হয়নি। আসলে আন্তঃস্কুল ফুটবল প্রতিযোগিতায় যোগ দেওয়ার জন্য স্কুলের যে সব ছেলেদের খেলার কথা, তাদের নাম ও ছবি দিয়ে প্রধান শিক্ষকের সই-সহ ফর্ম পূরণ জরুরি ছিল। প্রধান শিক্ষক তা করেননি। উদ্যোক্তারা চেয়েছিলেন, প্রধান শিক্ষক অন্তত মাঠে এসে খেলার আগে সই-সহ খেলোয়াড়দের তালিকা জমা দিন। খবর দেওয়া সত্ত্বেও প্রধান শিক্ষক আসেননি। যে কারণে তিনি ছেলেদের নিয়ে ফিরে আসতে বাধ্য হন বলে জানিয়েছেন রাজ্জাক। প্রতিযোগিতায় আর যোগ দিতে পারেনি এই স্কুলের ছেলেরা। প্রধান শিক্ষকের অবশ্য দাবি, স্কুলের কাজে ব্যস্ত থাকায় তিনি মাঠে যেতে পারেননি।

স্কুল ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন সকালে বাদুড়িয়ার ওই স্কুলটির ছাত্রছাত্রীরা (বিশেষ করে একাদশ শ্রেণির) স্কুলে পোস্টার লাগিয়ে বিক্ষোভ শুরু করে। স্কুলগেটে তালা ঝুলিয়ে দেয়। বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, প্রধান শিক্ষকের গাফিলতিতেই মাঠে গিয়েও খেলতে পারেনি তারা। মাথা নিচু করে ফিরে আসতে হয়েছে। একাদশ শ্রেণির ছাত্র আশাদুল ইসলাম, হাসান আলি মণ্ডল, সাবির মণ্ডল, সাদেক মিস্ত্রিরা বলেন, “ফুটবল প্রতিযোগিতার আসরে রোজ রোজ বসে না। খেলার সুযোগও সব সময় মেলে না। তাই আমরা যখন শুনলাম, বাদুড়িয়ার মান্দ্রা গ্রামে আন্তঃস্কুল ফুটবল প্রতিযোগিতার আসর বসেছে, তখন খুবই উৎসাহিত হয়েছিলাম।” ওই ছেলেদের বক্তব্য, স্কুলে মাঠ না থাকায় ধান জমিতে জায়গা বের করে ক’দিন প্র্যাকটিসও করেছে তারা। বুধবার দু’টি গাড়িতে সকাল সকাল সকলে হই হই করে বেরিয়ে পড়ে। চার জন শিক্ষকও ছিলেন তাদের সঙ্গে। মাঠে গিয়ে তারা জানতে পারে, প্রধান শিক্ষক খেলোয়াড়ের তালিকা না পাঠানোয় মাঠে নামতে পারবে না দল। প্রতিযোগিতা থেকে বাদ পড়ায় তারা ক্ষুব্ধ ও অপমানিত বলে জানিয়েছে ওই ছাত্রেরা।

এ দিন বিক্ষোভকারী ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে কারিমা খাতুন, মারুফা খাতুনরা বলে, “কর্তৃপক্ষের গাফিলতির খেলতে গিয়ে অপদস্ত হতে হল আমাদের স্কুলের ছেলেদের। পঠনপাঠন নিয়েও এখানে নানা সমস্যা দেখা দিয়েছে। রুটিনমাফিক ক্লাস হয় না। ভূগোলের সরঞ্জাম পাওয়া যায় না।” অভিযোগ সত্য নয় বলে দাবি স্কুল কর্তৃপক্ষের।

এ দিন বিক্ষোভ থামাতে বহিরাগতদের ডাকা হয়েছে বলেও ছাত্রছাত্রীদের অভিযোগ। নিজেদের অভিভাবক বলে দাবি করে আব্দুল খালেক মণ্ডল, আমানুর রহমানরা বলেন, “আমরা চেয়েছিলাম, স্কুলের ভিতরের ব্যাপার প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে মিটিয়ে নিক ছাত্রছাত্রীরা। তা না করে স্কুলের গেটে তালা ঝুলিয়ে শিক্ষক-শিক্ষিকা সহ ছাত্রছাত্রীদের ক্লাসে ঢুকতে না দেওয়া ঠিক নয়। বিক্ষোভকারীদের এ সব বোঝানোর পরে তারা তালা খুলে দেয়।”

basirhat agitation school teacher southbengal
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy