হুদহুদের পরই ঝড় বৃষ্টিতে রায়মঙ্গল নদী বাঁধ ধসে গিয়েছে। ফলে বড় রকমের বিপদের আশঙ্কায় দিন কাটাচ্ছেন হিঙ্গলগঞ্জ ব্লকের সুন্দরবন-লাগোয়া রমাপুর গ্রামের মানুষ। ইতিমধ্যেই কিছু ক্ষয়ক্ষতি হয়ে গিয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন ওই এলাকার মানুষজন।
বাঁধ ভেঙে যাওয়ায় নদী পাড়ের রাস্তাটি জলের তলায় চলে গিয়েছে। গাছ-সহ বড় একটি চরও এই মুহূর্তে জলের তলায়। দ্রুত বাঁধ মেরামত না করা হলে নোনা জলে প্লাবিত হতে পারে কাঁঠালবেড়িয়া, সাহেবখালি, চাঁড়ালখালি, দেউলি এবং মাধবকাটির মতো গ্রাম। এ প্রসঙ্গে বসিরহাটের মহকুমাশাসক শেখর সেন বলেন, “রায়মঙ্গল নদীবাঁধের সামনের চরটি নদীগর্ভে মিশে যাওয়ায় বাঁধ রক্ষা করা কঠিন হয়ে পড়েছে। তবে গ্রামের মধ্যে জল ঢোকেনি। ইতিমধ্যেই স্থানীয় বাসিন্দাদের নিয়ে সেচ দফতর রিং বাঁধের কাজ শুরু করে দিয়েছে।”
মহকুমা প্রশাসন এবং স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সাহেবখালি পঞ্চায়েতের মধ্যে পড়ে রমাপুর স্কুলবাড়ি। সোমবার রাতে ওই স্কুলবাড়ির পাশে হাজারি মণ্ডলের বাড়ির সামনে নদী বাঁধের ধারে জেগে ওঠা চর গাছগাছালি সহ হুড়মুড়িয়ে নদীর ভিতরে চলে যায়। চর ভেঙে পড়তেই নদীবাঁধে ধস নামতে শুরু করে। মঙ্গলবার সকালে উঠে স্থানীয় বাসিন্দারা লক্ষ্য করেন, রায়মঙ্গল নদীবাঁধের সামনে জেগে ওঠা গোটা চরটাই নদীগর্ভে চলে গিয়েছে। সেই সঙ্গে ধসে যাচ্ছে বাঁধ এবং বাঁধের ধার ঘেঁষা রাস্তা। এই পরিস্থিতিতে স্থানীয় পঞ্চায়েতের পক্ষে গ্রামবাসীদের নিয়ে শুরু হয় বাঁধ মেরামতির কাজ।
হিঙ্গলগঞ্জ ব্লকের পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি তপন মণ্ডল, পঞ্চায়েত প্রধান দীপঙ্কর পাণ্ডা-সহ অনেকে ঘটনাস্থলে যান। খবর পেয়ে সেচ দফতরের আধিকারিকেরা গ্রামবাসীদের নিয়ে বাঁধ রক্ষার কাজে নেমে পড়েন। শুরু হয় মূল বাঁধ থেকে কিছুটা দূরে বাঁশ-বস্তা দিয়ে অস্থায়ী বাঁধ বাধার কাজ।
সাহেবখালি পঞ্চায়েতের প্রধান দীপঙ্কর পাণ্ডা বলেন, “এই ঝড়ে ভেঙে পড়েছে দু’টি ঘর। এই পরিস্থিতির মধ্যে শুধুমাত্র নদীতে ভাটা থাকার কারণে গ্রামের মধ্যে নোনা জল ঢুকতে পারেনি।”
সেচ দফতর থেকে মাটির বস্তা এবং বাঁশ দিয়ে বাঁধের চেষ্টা করা হচ্ছে তা আরও শক্তপোক্ত করতে না পারলে গ্রাম ভাসবে বলে মনে করছে এলাকার মানুষ।
এ বিষয়ে তাঁরা আতঙ্কিতও বটে। প্রভাস নস্কর, রবি বিশ্বাস নামে স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, “এমনিতেই গত ২০০৯ সালে ঘটে যাওয়া ভয়ঙ্কর আয়লার অভিজ্ঞতা এখনও ভুলতে পারেনি। তার মধ্যে হুদহুদের ভয়ে গ্রামের সমস্ত মানুষই আতঙ্কের মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন।” হুদহুদের প্রভাব তেমন ভাবে সুন্দরবন এলাকাতে না পড়লেও গত ক’য়েক দিন থেকে ভারি বৃষ্টি এবং ঝড়ো হাওয়ার কারণে নদীর জল বাড়ছে। সে কারণেই ভয় সরছে না মানুষজনের মন থেকে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy