Advertisement
E-Paper

দাঁতনের কলেজে অধ্যক্ষ নিগ্রহের নালিশ

তোলাবাজি-সিন্ডিকেটরাজের মতো শিক্ষাঙ্গনে অশান্তি রুখতেও এ বার প্রথম থেকেই কড়া বার্তা দিচ্ছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। কিন্তু তোলাবাজি-সিন্ডিকেট নিয়ে অভিযোগ ওঠা থামেনি।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৪ অগস্ট ২০১৬ ০২:৫৩

তোলাবাজি-সিন্ডিকেটরাজের মতো শিক্ষাঙ্গনে অশান্তি রুখতেও এ বার প্রথম থেকেই কড়া বার্তা দিচ্ছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। কিন্তু তোলাবাজি-সিন্ডিকেট নিয়ে অভিযোগ ওঠা থামেনি। শিক্ষাঙ্গনে ‘বেচাল’ও বা বন্ধ হচ্ছে কই?

ভর্তি নিয়ে তাঁদের দাবি মানা না-হওয়ায় মঙ্গলবার দাঁতন-২ ব্লকের কাশমূলী গভর্নমেন্ট জেনারেল ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ বাদল জানাকে গালিগালাজ ও মারধর করার অভিযোগ উঠল তৃণমূল ছাত্র পরিষদের (টিএমসিপি) কিছু নেতার বিরুদ্ধে। অধ্যক্ষের অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ তিন টিএমসিপি নেতাকে আটকও করেছে।

দ্বিতীয় বারের জন্য তৃণমূল রাজ্যে ক্ষমতায় আসার পরেই গত জুনে অশান্তি হয়েছে গড়বেতা কলেজে। দিন কয়েক আগে দাসপুরের নাড়াজোল কলেজে শিক্ষকদের ঘড়ি ধরে আসার ফরমান জারি করেছিলেন ছাত্রেরা। এ বার গোলমাল দাঁতনের কলেজটিতে। ঘটনাচক্রে তিনটি কলেজই
পশ্চিম মেদিনীপুরের।

নাড়াজোল কলেজে ওই ফরমানের কথা জেনে শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় কড়া সুরে বলেছিলেন, ‘‘শিক্ষাঙ্গনে কোনও বেচাল বরদাস্ত করবে না সরকার।’’ কাশমূলীর কলেজটিতে অধ্যক্ষ নিগ্রহের কথা শুনে বুধবার শিক্ষামন্ত্রী ফের বলেন, ‘‘এ সব কোনও ভাবেই বরদাস্ত করা হবে না। স্পষ্ট বলে দেওয়া হয়েছে, অনলাইনে মেধার ভিত্তিতেই কলেজে ভর্তি নেওয়া হবে।’’ একই সঙ্গে তাঁর সংযোজন, ‘‘পৃথক ভাবে শিক্ষা দফতরেও ওই অধ্যক্ষ অভিযোগ জানাতে পারেন।’’ ঘটনাটিকে অন্যায় বলে মেনে নিয়েছেন টিএমসিপি-র রাজ্য সভানেত্রী জয়া দত্তও। তিনি বলেন, ‘‘আমরা প্রশাসনকে বলেছি। প্রশাসন সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নিক। সংগঠনের পক্ষ থেকেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’ কাশমূলীর কলেজটিতে গত বছর থেকেই পঠনপাঠন শুরু হয়। এখনও ছাত্র সংসদ তৈরি হয়নি। প্রথম বর্ষের ভর্তি প্রক্রিয়া চলছে। অভিযোগ, সম্প্রতি প্রথম বর্ষের দশটি আসনে ভর্তির কোটা তাঁদের দেওয়ার জন্য কলেজ কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি জানান দ্বিতীয় বর্ষের একাংশ পড়ুয়া। এ নিয়ে কয়েকদিন টানাপড়েন চলছিলই। মঙ্গলবার আলোচনার জন্য কয়েকজন শিক্ষক ও কর্মীদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন অধ্যক্ষ। অভিযোগ, সেই সময় ছাত্রদের একাংশ অধ্যক্ষের ঘরে ঢুকে বিক্ষোভ দেখান। তাতে নেতৃত্ব দেন টিএমসিপি-র ব্লক সভাপতি সৈকত মাইতি, সংগঠনের কলেজ ইউনিট সভাপতি অনিমেষ দাস এবং ছাত্রনেতা বিপ্লব বেরা।
তার পরেই অধ্যক্ষ নিগ্রহ হয় এবং তাঁর মোবাইলও কেড়ে নেওয়া হয় বলে অভিযোগ।

স্থানীয় তৃণমূল নেতা তথা জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ শৈবাল গিরি বিক্ষোভের কথা মেনে নিলেও অধ্যক্ষ নিগ্রহের অভিযোগ মানেননি। তাঁর পাল্টা অভিযোগ, ‘‘অধ্যক্ষ নিজের ইচ্ছেমতো কলেজের ৫টি আসনে ভর্তি করিয়েছেন। ছাত্ররা তাই নিয়ে বিক্ষোভ দেখিয়েছে। উনি নাটক করছেন।” অধ্যক্ষের দাবি, ‘‘নিয়ম মেনেই পাঁচটি আসনে ছাত্র ভর্তি হয়েছে। অকারণে আমার উপরে হামলা হয়েছে।’’

এমনিতেই বহু কলেজে অধ্যক্ষ পদ শূন্য রয়েছে। এই জাতীয় ঘটনায় সেই শূন্যস্থান পূরণ হওয়া কঠিন বলে মনে করছেন কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সংগঠন ওয়েবকুটা-র সাধারণ সম্পাদক শ্রুতিনাথ প্রহরাজ। তিনি বলেন, ‘‘ছাত্রদের একাংশের হাতে গোটা রাজ্যেই অধ্যক্ষ নিগ্রহ চলছে। কিছু ঘটনা প্রকাশ্যে আসছে। অনেকে যে কলেজে অধ্যক্ষ হতে চাইছেন না, এটা তার একটা কারণ। শিক্ষামন্ত্রীর এই বিষয়টি দেখা উচিত।’’

TMC leader Principal Extortion Admission
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy