Advertisement
E-Paper

২৮ বছর পেরিয়ে পেনশন পেলেন বৃদ্ধা

জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার, ব্যারাকপুর... প্রয়াত স্বামীর পেনশনের খোঁজে এই তিন শহরে দিনের পর দিন ঘুরপাক খেয়েছেন নিশারানি দত্ত ও তাঁর পরিবার। শেষ অবধি ২৮ বছর পরে যখন সেই টাকা হাতে এল, তখন ৮৫ বছরের নিশারানির বিছানা ছেড়ে ওঠার ক্ষমতা নেই।

কিশোর সাহা

শেষ আপডেট: ১৮ এপ্রিল ২০১৭ ০৩:৩৪
নিশারানি দত্ত

নিশারানি দত্ত

জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার, ব্যারাকপুর... প্রয়াত স্বামীর পেনশনের খোঁজে এই তিন শহরে দিনের পর দিন ঘুরপাক খেয়েছেন নিশারানি দত্ত ও তাঁর পরিবার। শেষ অবধি ২৮ বছর পরে যখন সেই টাকা হাতে এল, তখন ৮৫ বছরের নিশারানির বিছানা ছেড়ে ওঠার ক্ষমতা নেই।

নিশারানি দেবীর স্বামী শিবদাস দত্ত ছিলেন আলিপুরদুয়ারের ডিমডিমা প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক। অবসরের পরে যিনি বিরাটিতে ছেলেদের কাছে চলে যান। সেই সঙ্গে পেনশন ও বকেয়া নিয়েও জেলা শিক্ষা দফতরে আবেদন করে তা ব্যারাকপুর ট্রেজারিতে স্থানান্তরিত করান। কিন্তু, বাড়ির কেউ এ কথা জানতেন না। ফলে, ১৯৮৯ সালে ৬ এপ্রিল শিবদাসবাবুর মৃত্যুর পরে বকেয়া ও পেনশনের নথি খুঁজতে হিমশিম খান নিশারানি।

প্রথমে জলপাইগুড়ি শিক্ষা দফতরে যান তিনি। সেখানে নথি না মেলায় বিকাশ ভবনে যান নিশারানি। এর পর কখনও জলপাইগুড়ি, কখনও ব্যারাকপুর— দীর্ঘ ২৫ বছর ছোটাছুটির পরে নিশারানিরা প্রাক্তন বিচারপতিদের নিয়ে গঠিত আইন পরিষেবা কমিটির দ্বারস্থ হন। তাঁরাই নিশারানিকে কলকাতা হাইকোর্টের সেন্টিনারি বিল্ডিংয়ে লিগাল এডের অফিসে পাঠান। তাদের সহায়তায় ২০১৫ সালের গোড়ায় হাইকোর্টে মামলা হয়। নভেম্বরেই তাঁর পেনশন চালুর নির্দেশ দেওয়া হয়।

কিন্তু জলপাইগুড়ি জেলা শিক্ষা দফতর নির্দেশ পেয়ে জানিয়ে দেয়, যে হেতু জেলা ভাগ হয়েছে, তাই আলিপুরদুয়ার থেকে সব হবে। এই চক্করে আলিপুরদুয়ারও ঘুরতে হয় তাঁদের। কেটে যায় আরও দু’বছর। শেষ অবধি চলতি বছরের গোড়ায় উত্তরকন্যায় পেনশনের নথিপত্র জমা পড়ে।

সেখান থেকে ব্যারাকপুর ট্রেজারিতে পেনশন যায় মাসদুয়েক আগে। তারা নিশারানিদেবীকে হাজির হতে বলেন। তখন তাঁর বাড়ির লোকেরা মেডিক্যাল কলেজের সার্টিফিকেট পেশ করে জানিয়ে দেয়, কারও সাহায্য ছাড়া নিশারানিদেবী নড়াচড়া করতে পারেন না। সেই শংসাপত্র দেখার পরে ট্রেজারির অফিসারেরাই বাড়িতে গিয়ে তাঁকে দিয়ে সইসাবুদ করান। সম্প্রতি নিশারানির অ্যাকাউন্টে পেনশনের টাকা জমা পড়েছে।

নিশারানি এখন বলছেন, ‘‘শেষ অবধি যে ওঁর পেনশনের টাকাটা পেলাম, এটাই অনেক।’’

pension retirement benefits Nisha Rani Dutta Siliguri
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy