Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪
Swasthya Sathi

Swasthya Sathi Card: স্বাস্থ্যসাথী কার্ড নেই, তিনি সুস্থ, হঠাৎ মোবাইলে মেসেজ, অস্ত্রোপচারে খরচ হল ৩৭ হাজার

মহিষাদলের বাসিন্দা শঙ্কর মান্না পেশায় গাড়ির মিস্ত্রি। বেশ কয়েক মাস আগে স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের জন্য তিনি আবেদন করেছেন। এখনও কার্ড হাতে পাননি।

প্রতীকী চিত্র।

প্রতীকী চিত্র।

সৌমেন মণ্ডল
মহিষাদল শেষ আপডেট: ১০ জানুয়ারি ২০২২ ০৪:৪০
Share: Save:

শীতের দুপুরে সবে ভাতঘুম দিয়েছেন। হঠাৎ মোবাইলে মেসেজ ঢুকল। ফোন হাতে নিতেই ঘুম ছুটল শঙ্কর মান্নার। মেসেজে লেখা, তাঁর অস্ত্রোপচার হয়েছে। আর সেই বাবদ স্বাস্থ্যসাথী কার্ড থেকে খরচ হয়েছে সাড়ে ৩৭ হাজার টাকা। অথচ তিনি দিব্যি সুস্থ। আর স্বাস্থ্যসাথীর কার্ড তো এখনও হাতেই পাননি।

মহিষাদলের বাসিন্দা শঙ্কর মান্না পেশায় গাড়ির মিস্ত্রি। বেশ কয়েক মাস আগে স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের জন্য তিনি আবেদন করেছেন। তবে এখনও কার্ড হাতে পাননি। এরই মধ্যে গত ৩ জানুয়ারি শঙ্করের মোবাইলে মেসেজ আসে যে তিনি তমলুকের এক নার্সিংহোমে ভর্তি হয়েছেন। সে দিন বিষয়টিতে তেমন আমল দেননি শঙ্কর। তবে ৫ জানুয়ারি আসে টাকা কাটার মেসেজ। তাতে উল্লেখ ছিল, নার্সিংহোম থেকে ছুটি দেওয়া হয়েছে শঙ্করকে। আর অস্ত্রোপচারের খরচ বাবদ স্বাস্থ্যসাথী কার্ডে বরাদ্দ অর্থ থেকে ৩৭,৫০০ টাকা কেটে নেওয়া হয়েছে। বরাদ্দ অর্থ থেকে চিকিৎসার খরচ কেটে নেওয়ার তথ্য রাজ্য সরকারের স্বাস্থ্যসাথী সেল যাচাই (ভেরিফাই) করেছে বলেও ওই মেসেজে উল্লেখ ছিল।

শঙ্কর বলছেন, ‘‘স্বাস্থ্যসাথী কার্ড হাতে পাইনি। ফলে, চিকিৎসার প্রশ্নই ওঠে না। তার পরেও টাকা কাটার মেসেজ আসায় খুব অবাক হয়ে যাই। তমলুকের ওই নার্সিংহোমে যোগাযোগ করেছিলাম। কিন্তু সেখান থেকে জেলাশাসকের অফিসে গিয়ে কথা বলতে বলে।’’ শেষে রবিবার মহিষাদলের বিডিওকে ই-মেলে অভিযোগ জানিয়েছেন শঙ্কর।

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্বপ্নের প্রকল্প স্বাস্থ্যসাথী। রাজ্যের বহু মানুষ এই স্বাস্থ্যবিমার আওতায় এসেছেন। স্বাস্থ্যসাথী কার্ড থাকলে জেলা, রাজ্য, এমনকি ভিন্‌ রাজ্যের নথিভুক্ত হাসপাতালেও সম্পূর্ণ বিনামুল্যে চিকিৎসা পাওয়ার কথা। ১৯০০-র বেশি প্যাকেজভুক্ত রোগের চিকিৎসা পরিষেবার সুযোগ রয়েছে এই কার্ডে। কিন্তু সেই কার্ড হাতে না পেয়েই, কোনও চিকিৎসা পরিষেবা না নিয়েই টাকা খরচের বিষয়টি সামনে আসায় শোরগোল পড়েছে।

তমলুকের ওই নার্সিংহোমের ম্যানেজার রাজনারায়ণ গাঁতাইতের দাবি, ‘‘শঙ্কর মান্না নামে এক জন রোগী নার্সিংহোমে ভর্তি ছিলেন। তাঁর নামে স্বাস্থ্যসাথী কার্ড ছিল। আঙুলের ছাপ দিয়ে সেই কার্ড থেকে টাকা নেওয়া হয়েছে।’’ কিন্তু এ ক্ষেত্রে নাম-বিভ্রাট হওয়ার কথা নয়। কারণ, আধার নম্বর ও স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের নম্বর কোনও ভাবেই এক হতে পারে না।

তাহলে গন্ডগোল ঠিক কোথায়?

তা অবশ্য স্পষ্ট নয়। পূর্ব মেদিনীপুর স্বাস্থ্য জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক বিভাস রায় বলেন, ‘‘এই গোলযোগের বিষয়টি জেলাশাসকের দফতরের স্বাস্থ্যসাথী বিভাগ বলতে পারবে।’’ এ ক্ষেত্রে দায়িত্বপ্রাপ্ত অতিরিক্ত জেলাশাসকের সঙ্গে চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা যায়নি। আর শঙ্কর যাঁর কাছে অভিযোগ করেছেন, সেই মহিষাদলের বিডিও যোগেশচন্দ্র মণ্ডলের বক্তব্য, ‘‘অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।’’ শঙ্কর কেন এখনও স্বাস্থ্যসাথী কার্ড পাননি, তা-ও দেখবেন বলে আশ্বাস বিডিও-র।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Swasthya Sathi Mahishadal
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE