Advertisement
E-Paper

নিয়মরক্ষার ই-অফিস চালু নবান্নে

শুধু সংখ্যালঘু উন্নয়ন নয়, এ দিন নিয়মরক্ষার ই-অফিস চালু করেছে অধিকাংশ দফতর।

দেবজিৎ ভট্টাচার্য

শেষ আপডেট: ০৩ জানুয়ারি ২০১৮ ০৪:২১
ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

নবান্নে মঙ্গলবার নিজের কম্পিউটারে ওয়েব পেজ ‘আপলোড’ করছিলেন সংখ্যালঘু উন্নয়ন দফতরের এক আধিকারিক। কিছু ছাত্র-আবাসনের মেরামতির কাজে অর্থ অনুমোদনের জন্য সচিবের কাছে নোট পাঠাচ্ছিলেন তিনি। বললেন, ‘‘আনুষ্ঠানিক ভাবে এ দিন থেকেই ই-অফিস চালু হল। আমরাও যে এই প্রক্রিয়ার শরিক, তার একটা নমুনা রাখলাম। বাকি কাজ ফাইলেই হবে।’’ অর্থাৎ ই-অফিস আপাতত নাম-কা-ওয়াস্তে।

শুধু সংখ্যালঘু উন্নয়ন নয়, এ দিন নিয়মরক্ষার ই-অফিস চালু করেছে অধিকাংশ দফতর। কারণ, পুরোদস্তুর কম্পিউটার-নির্ভর কাজ করার জন্য যে-পরিকাঠামো দরকার, সব দফতর এখনও তার বন্দোবস্ত করে উঠতে পারেনি। ফলে প্রথম কয়েকটা দিন নিয়মরক্ষার বেশি কিছু করা সম্ভব নয়, জানাচ্ছেন নবান্নের এক কর্তা।

অনলাইনে নাগরিক পরিষেবা দেওয়ার ব্যবস্থা মসৃণ করার ক্ষেত্রে ই-অফিস গুরুত্বপূর্ণ। সরকারি সূত্রের খবর, সেই ই-অফিস পুরোদস্তুর চালু করতে আরও অন্তত দু’মাস লাগবে। মানে কম্পিউটারের মাউস ক্লিক করে পরিষেবাকেন্দ্রিক সরকারি তথ্য, শংসাপত্র বা আধিকারিকদের হাতের নাগালে পেতে আমজনতাকে আরও কিছু দিন অপেক্ষা করতে হবে। অর্থ দফতরের এক কর্তা জানান, প্রাথমিক ভাবে সরকারি কাজের মধ্যেই সীমাবদ্ধ রয়েছে ই-অফিস। ভবিষ্যতে সাধারণ মানুষ এর সুফল পাবেন। ‘‘পেনশন বা ভাতা পাওয়ার সমস্যা থেকে শুরু করে কখন কোথায় বিভিন্ন শংসাপত্র পাওয়া যাবে, তা জানতে আর সরকারি অফিসে হত্যে দিয়ে পড়ে থাকতে হবে না। নেট-মাধ্যমেই এই সব কাজ করে ফেলা যাবে,’’ বলেন অর্থ দফতরের ওই কর্তা।

নাগরিক পরিষেবা পরের কথা, এখন সরকারি কাজেই ই-অফিস পুরোপুরি চালু করা যাচ্ছে না। কৃষি বিপণন দফতরের এক কর্তা বলেন, ‘‘ফাইলে নোট দেওয়ার আগে কখনও কখনও আগের নথি দেখার দরকার পড়ে। কিন্তু এখনও সব ফাইল কম্পিউটারে তোলাই হয়নি। তাই পুরনো নিয়মেই কাজ করছি।’’

প্রস্তুতি ও পরিকাঠামোর সমস্যা এড়াতে জনস্বাস্থ্য দফতরের এক কর্তা নিজের মতো করে উপায় বার করে নিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘কাজ করতে গিয়ে ফাইলের যে-অংশের রেফারেন্স দেওয়া বা উল্লেখ করার দরকার প়ড়ছে, সেটুকু স্ক্যান করে তুলে নিয়েছি কম্পিউটারে। সেটাই পাঠিয়ে দিয়েছি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে।’’

পুরোদস্তুর ই-অফিস চালু করতে সময় যে লাগবে, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষও তা জানেন। নবান্নের এক শীর্ষ কর্তা বলেন, ‘‘আমিও জানি, এক দিনে এত বিশাল পরিকাঠামো গড়ে তোলা সম্ভব নয়। তবে একটা ‘টার্গেট’, একটা লক্ষ্যমাত্রা নির্দিষ্ট না-করে এগোলে গোটা প্রক্রিয়া মুখ থুবড়ে পড়ার আশঙ্কা থাকে। সেই জন্য বছরের শুরু থেকে ই-অফিস চালু করার নির্দেশ দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী।’’

ওই কর্তা জানান, সরকারের পাহাড়প্রমাণ নথিপত্র যাতে দ্রুত স্ক্যান করে কম্পিউটারে তোলা যায়, তার জন্য সব দফতরে স্ক্যানার দেওয়া হয়েছে। এবং রোজকার কাজ ছেড়ে কর্মীদের যাতে কম্পিউটারে নথি তোলার কাজে ব্যস্ত থাকতে না-হয়, সেই জন্য চুক্তির ভিত্তিতে প্রশিক্ষিত লোক নিয়োগ করেছে অর্থ দফতর। পূর্ণাঙ্গ ই-অফিস চালু করার ক্ষেত্রে অধিকাংশ দফতর যখন অ-প্রস্তুত, সেখানে ব্যতিক্রম তারাই। প্রথম দিন থেকেই যাতে পুরোদমে ই-অফিস চালু করা যায়, তার জন্য গত ২০ দিন ধরে নিজেদের মধ্যে ওয়েব পেজে ফাইল চালাচালি করেছেন অর্থ দফতরের অফিসার ও কর্মীরা।

ইতিমধ্যে কেন্দ্রের ৬৬টি অফিসে ই-ফাইল চালু হয়েছে। অন্ধ্রপ্রদেশ, কর্নাটক, কেরল, বিহার, চণ্ডীগড় ও অরুণাচলপ্রদেশে গোটা প্রশাসন চলছে ই-অফিসের মাধ্যমেই। দিল্লি, হরিয়ানা, হিমাচলপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ এবং ওডিশাতেও আংশিক ভাবে চালু হয়ে গিয়েছে ই-অফিস।

Nabanna E-office নবান্ন ই-অফিস
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy