E-Paper

যোগ্য-অযোগ্যের ভাগের দাবিতে মিছিলে শিক্ষাকর্মীরা

চাকরিহারা গ্রুপ-সি এবং গ্রুপ-ডি কর্মীরা মনে করেন, ২০১৬ সালের এসএসসি প্যানেলের শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের মধ্যে তাঁরাই সবচেয়ে অসহায়।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৬ জুন ২০২৫ ০৯:৪৪
বিভিন্ন দাবিদাওয়া নিয়ে করুণাময়ী থেকে বিকাশ ভবন পর্যন্ত গ্রুপ-সি ও গ্রুপ-ডি শিক্ষাকর্মীদের অভিযান। বৃহস্পতিবার।

বিভিন্ন দাবিদাওয়া নিয়ে করুণাময়ী থেকে বিকাশ ভবন পর্যন্ত গ্রুপ-সি ও গ্রুপ-ডি শিক্ষাকর্মীদের অভিযান। বৃহস্পতিবার। ছবি: স্নেহাশিস ভট্টাচার্য।

চাকরিহারা গ্রুপ-সি এবং গ্রুপ-ডি কর্মীদের জন্য যোগ্য-অযোগ্য ভাগ হয়নি। তাঁদের স্কুলে যেতেও নিষেধ করেছে সুপ্রিম কোর্ট। ফলে, বেতন বন্ধ হয়ে আছে তাঁদের। আবার তাঁদের জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে ভাতা চালু হওয়ার কথা বলেছেন, তা আদৌ চালু হবে কিনা, সেই নিয়েও আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। কেন তাঁদের ভাতা দেওয়া হবে, প্রশ্ন তুলে ইতিমধ্যেই মামলা দায়ের হয়েছে।

চাকরিহারা গ্রুপ-সি এবং গ্রুপ-ডি কর্মীরা মনে করেন, ২০১৬ সালের এসএসসি প্যানেলের শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের মধ্যে তাঁরাই সবচেয়ে অসহায়। তাঁদের সমস্যার স্থায়ী সমাধান এবং দ্রুত যোগ্য ও অযোগ্যদের তালিকা প্রকাশ করে যোগ্যদের স্কুলে ফেরানোর দাবিতে বৃহস্পতিবার করুণাময়ী থেকে বিকাশ ভবন পর্যন্ত মিছিল করলেন ওই কর্মীরা। মিছিলের শেষে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর কাছে স্মারকলিপি জমা দেন তাঁরা। শিক্ষাকর্মীরা জানান, তাঁদের দাবি, শিক্ষকদের জন্য যেমন নির্দিষ্ট পরিকল্পনা করেছে সরকার, তেমনই তাঁদের নিয়ে কী ভাবছে তা-ও স্পষ্ট করতে হবেসরকারকে। যোগ্য এবং অযোগ্য ভাগ করে যোগ্য শিক্ষাকর্মীদের নিয়োগ করুক সরকার।

যোগ্য গ্রুপ-সি এবং গ্রুপ-ডি অধিকার মঞ্চের পক্ষে অমিত মণ্ডলের প্রশ্ন, ‘‘শিক্ষকদের মধ্যে যদি যোগ্য-অযোগ্য ভাগ হতে পারে, তা হলে শিক্ষাকর্মীদের কেন ভাগ করা হবে না? বাগ কমিটি এবং সিবিআইয়ের রিপোর্ট অনুযায়ী, গ্রুপ-সি এবং গ্রুপ-ডি কর্মীদের মধ্যে কারা অযোগ্য, সেই তালিকা ইতিমধ্যেই হাই কোর্ট এবং সুপ্রিম কোর্টে জমা দেওয়া আছে। সেখানে দেখা যাচ্ছে, ওএমআর কারচুপিতে গ্রুপ সি-তে আছেন ৭৮৩ জন এবং গ্রুপ ডি-তে ১৭৪১ জন। যোগ্য-অযোগ্যর যে ভাগ করা যাচ্ছে না, এমন তো নয়। তা সত্ত্বেও গ্রুপ-সি এবং গ্রুপ ডি-র মধ্যে যোগ্য-অযোগ্য গুলিয়ে ফেলা হচ্ছে।’’

শিক্ষাকর্মীদের একাংশের মত, সুপ্রিম কোর্ট এসএসসি চিহ্নিত যোগ্য শিক্ষকদের স্কুলে যেতে বলেছে, কারণ তা না হলে স্কুলে পঠনপাঠন ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তাই হয়তো তাঁদের ডিসেম্বর পর্যন্ত স্কুলে যাওয়ার অনুমতি দিয়েছে। শিক্ষাকর্মীরা পড়াশোনার সঙ্গে সরাসরি যুক্ত নন ঠিকই, কিন্তু স্কুলে দীর্ঘদিন গ্রুপ-সি এবং গ্রুপ-ডি কর্মীরা না থাকলে পঠনপাঠন এবং অন্যান্য কাজ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। গত দু’মাস ধরে বেতন না পেয়ে তাঁদের সংসার চালানো কার্যত অসম্ভব হয়ে পড়েছে বলে জানাচ্ছেন শিক্ষাকর্মীরা।

তাঁরাও এ দিন মিছিলে জানিয়ে দেন, তাঁদের জন্য নতুন নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দিলে তাঁরা পরীক্ষা দেবেন না। ২০১৬ সালেই গ্রুপ-সি এবং গ্রুপ ডি-র পরীক্ষা দিয়েছিলেন প্রায় ১৯ লক্ষ প্রার্থী। তার পরে প্রায় দশ বছর এসএসসি-র পরীক্ষা হয়নি। অমিতের মতে, ‘‘নতুন করে গ্রুপ-সি এবং গ্রুপ-ডি পদের পরীক্ষা হলে ৫০ লক্ষের আশপাশে পরীক্ষায় বসতে পারেন। দশ বছর আগে তাঁরা যে পরীক্ষা দিয়ে পাশ করেছেন, সেই পরীক্ষায় ফের পাশ করার নিশ্চয়তা কোথায়?’’

গত শুক্রবার অর্থাৎ ৩০ মে যোগ্য শিক্ষক-শিক্ষিকা অধিকার মঞ্চের তরফে নবান্ন অভিযান ঘিরে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়েছিল। তারই প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার যোগ্য শিক্ষক-শিক্ষিকা অধিকার মঞ্চের তরফে গড়িয়াহাট থেকে যাদবপুর ৮বি বাস স্ট্যান্ড পর্যন্ত ধিক্কার মিছিল হয়। মিছিলের অন্যতম মুখ মেহেবুব মণ্ডল বলেন, ‘‘গোটা রাজ্য জুড়ে এই ধিক্কার মিছিল চলছে। এ দিন কলকাতা, হাওড়া এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনা থেকে মিছিলে অংশ নেওয়া হয়েছে। পথসভায় যোগ দেন কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকেরা ও অন্যান্য শিক্ষক সংগঠন। আমরা আদালত ও সরকারের থেকে ঠিক বিচার পাইনি। ফের পরীক্ষা দেব না। রিভিউ পিটিশনের মাধ্যমে পুনর্নিয়োগ করতে হবে।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

SSC Protest

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy