মুর্শিদাবাদ জেলা পরিষদে মাত্র তিনটে আসন জিতেছিল তৃণমূল। এখন সেই জেলা পরিষদই তৃণমূলের দখলে। জেলার ৭টি পুরসভার মধ্যে তিনটিতে গত পুরভোটে তারা একটি আসনও জেতেনি। অথচ বিরোধী দল ভাঙিয়ে এনে ৭ পুরসভাতেই এখন দখল নিয়েছে রাজ্যের শাসক দল! তবুও প্রশ্ন থেকে যাচ্ছিল, এ ভাবে দল ভারী করলেই কি ভবিষ্যতে নির্বাচনী সাফল্য পাওয়া যাবে? বস্তুত, তারই উত্তর খুঁজতে দলের শীর্ষ নেতাদের নিয়ে আজ, মঙ্গলবার মুশির্দাবাদের বুথ স্তরের কর্মীদের সঙ্গে বৈঠকে বসতে চলেছেন তৃণমূলের যুব সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। জেলা দখলের পর সেখানে বুথ স্তর থেকে সংগঠন গড়ে তোলায় জোর দেওয়াই এই বৈঠক তথা প্রশিক্ষণ শিবিরের মুখ্য উদ্দেশ্য বলে দলীয় সূত্রে জানানো হচ্ছে।
অভিষেকও সোমবার জানিয়েছেন, মুর্শিদাবাদে বুথ স্তরে সংগঠনকে আরও শক্তিশালী করার পাশাপাশি দলের কর্মীদের জনসংযোগ আরও ভাল করার উপরেই তাঁরা জোর দেবেন এই বৈঠকে।
এমনিতে তৃণমূলের তরফে মুর্শিদাবাদ জেলার পর্যবেক্ষক দলের যুব নেতা ও পরিবহণ মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী। কিন্তু তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে গত কয়েক মাস ধরে মুর্শিদাবাদের ব্যাপারে তৎপর হয়ে ওঠেন অভিষেক। জেলার একের পর এক পুরসভার বিরোধী দলের কাউন্সিলর ও জেলা পরিষদের সদস্যরা তাঁর হাত ধরে তৃণমূলে সামিল হন। তবে অভিষেকের ঘনিষ্ঠ সূত্রে বলা হচ্ছে, মুর্শিদাবাদে এই ‘সাফল্য’ সত্ত্বেও সন্তুষ্ট নন দলের যুব সভাপতি। কারণ, তাঁর পর্যবেক্ষণ হল, জেলা পরিষদ বা সাতটি পুরসভা দখলের পরেও মুর্শিদাবাদে তৃণমূলের রাজনৈতিক কর্মসূচি বলে কিছু নেই। দল ভাঙানোর বিরোধিতা করে অধীর চৌধুরী যখন পাঁচ হাজার কর্মী-সমর্থক নিয়ে মিছিল করে ফেললেন, তখন শাসক দলের তরফে পাল্টা মিছিল হল না। নিচু তলায় সংগঠন দুর্বল বলেই এমনটা হচ্ছে বলে মত অভিষেকের। মুর্শিদাবাদে বিরোধী শিবিরের নিচু তলার বেশির ভাগ কর্মীই এখনও দলবদল করেননি। তাঁদের দলে আনতে না পারলে যে ওই জেলায় নিরঙ্কুশ আধিপত্য সম্ভব নয়, তা বুঝেই বুথ স্তর থেকে দলকে সংগঠিত করতে চাইছেন তৃণমূল নেতৃত্ব।
অভিষেক ছাড়া আজকের বৈঠকে সুব্রত বক্সী, মুকুল রায়দের পাশাপাশি থাকার কথা সদ্য কংগ্রেসত্যাগী সবংয়ের বিধায়ক মানস ভুঁইয়ারও। তাঁকে সামনে রেখে অধীরের জেলায় কংগ্রেসের নিচু তলায় আরও ভাঙন ধরানোই অভিষেকের লক্ষ্য।