রবিবার দিল্লি রওনা হওয়ার আগে দমদম বিমান বন্দরে সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় । নিজস্ব চিত্র
কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদী সরকারের কাছে আত্মসমর্পণ করবেন না তিনি। শেষ পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে যাবেন। রবিবার কলকাতা থেকে দিল্লি যাত্রার আগে দমদম বিমানবন্দরে দাঁড়িয়ে এভাবেই কেন্দ্রের বিরুদ্ধে তোপ তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের। সোমবার এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটে হাজিরা দেবেন তিনি। দিল্লি যাওয়ার আগে বিমানবন্দরে দাঁড়িয়ে সংবাদমাধ্যমের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘‘যাঁদের বিরুদ্ধে প্রমাণ, কাগজ মুড়িয়ে টাকা নিতে দেখা গিয়েছে, তাঁদের সিবিআই ইডি ডাকে না। তখন ওঁদের চোখে ছানি পড়ে যাচ্ছে।এই কারণেই তদন্তকারী সংস্থার নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘এদের গাত্রদাহ কেন, কারণ এরা বাংলায় হেরেছে। গত বছর এদের আমরা ল্যাজেগোবরে করেছি। বাংলার মানুষ বহিরাগতদের তাড়িয়েছে। বাংলার মানুষ মেরুদণ্ড বিক্রি করেনি বলে গায়ে জ্বালা।’’ উল্লেখ্য, নাম না করে তিনি বিজেপি নেতা তথা বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধেই আঙুল তুলেছেন বলে মনে করছে বাংলার রাজনীতির কারবারিরা।
এরপরেই ডায়মন্ডহারবারের সাংসদ বলেন, ‘‘আমরা আত্মসমর্পণ করব না। আমরা এই লড়াইয়ের শেষ দেখে ছাড়ব।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘দিল্লি হাই কোর্টে আবেদন করেছিলাম। দীর্ঘ দিন শুনানির পর তিন মাস রায় স্থগিত রাখা হয়েছিল। গত ১০ তারিখ চার রাজ্যে নির্বাচনে বিজেপিজেতার পর ১১ তারিখ আমার পিটিশন খারিজ করে দেওয়া হয়েছে।’’ দেশের আইন ব্যবস্থার উপর আস্থা রেখেও অভিষেক বলেন, ‘‘আমি বিচার ব্যবস্থার উপর আস্থা রাখি। কিন্তু দু’টি বিযয় কাকতালীয় হতে পারে না। আমি জুরিসডিকশন চ্যালেঞ্জ করেছিলাম। কলকাতার মামলায় দিল্লি কেন ডেকে পাঠাবে। কলকাতায় তো অফিস আছে। যতবার খুশি ডাকুন। আমি তো বলিনি যাব না।’’
অভিষেক দাবি করেছেন, চারদিন আগে তাঁর চোখে অস্ত্রপচার হয়েছে। ডাক্তার তাঁকে বেডরেস্টে থাকতে বলেছেন, তাও তিনি যাচ্ছেন। তাঁর কথায়, ‘‘বাংলার লোক মাথানত করে না। আমি মানুষের কাছে মাথা নত করতে পারি। কিন্তু অন্যায়ের কাছে মাথা নত করব না।’’ প্রসঙ্গত, কয়লা-কাণ্ডে আর্থিক তছরুপ মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য অভিষেক এবং তাঁর স্ত্রী রুজিরাকে দিল্লিতে তলব করেছিল ইডি। পাল্টা অভিষেক দিল্লি হাই কোর্টে আবেদন করেছিলেন, যাতে তাঁদের কলকাতাতেই জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
গত ১১ মার্চ অভিষেকের আবেদন খারিজ করে দেয় দিল্লির আদালত। যা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন তৃণমূল নেতৃত্ব। সস্ত্রীক অভিষেককে দিল্লিতে ডেকে পাঠানোর বিষয়টিকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে মন্তব্য করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।বুধবার বিধানসভায় স্বরাষ্ট্র দফতরের বাজেট বক্তৃতার মধ্যেই তিনি বলেন, ‘‘কেষ্ট (অনুব্রতকে এই নামেই ডাকে মুখ্যমন্ত্রী), মলয়কে সিবিআই ডাকছে। অভিষেক ও তাঁর স্ত্রীকে বলেছে কলকাতা নয়, দিল্লিতে গিয়ে হাজিরা দিতে হবে। নির্লজ্জভাবে সিবিআই, ইডি-র মতো সংস্থাগুলিকে ব্যবহার করা হচ্ছে।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘সিবিআই, ইডি-র মতো সংস্থাগুলি খাঁচায় বন্দী তোতাপাখির মতো আচরণ করছে। কেন্দ্রীয় সরকার যা বলছে তাই করছে। একটা বিরোধী দলকে একটি করে সিবিআইয়ের মামলা দেওয়া হয়েছে। আমাদের সিবিআই দিয়ে এ ভাবে দমিয়ে রাখা যাবে না।’’ তবে অভিষেকের ঘনিষ্ঠ সূত্রে খবর, তিনি জানিয়েছেন, আইন মেনেই ইডির জেরার মুখোমুখি হতে দিল্লিতে হাজির হবেন অভিষেক এবং তাঁর স্ত্রী। তাই ২১ এবং ২২ মার্চ জেরার একদিন আগেই রবিবার দিল্লি পৌঁছতে পারেন তাঁরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy