Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪
Abhishek Banerjee

‘এই চাণক্য মেড ইন চায়না,’ কাঁচড়াপাড়াকে ফের দখলে এনে মুকুলকে খোঁচা অভিষেকের

গত ২৩ মে লোকসভা নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার পর, গত ২৮ মে কাঁচরাপাড়ার ওই কাউন্সিলররা দিল্লিতে গিয়ে বিজেপিতে যোগদান করেন।

মুকল রায়কে মেড ইন চায়না বলে কটাক্ষ অভিষেকের। —ফাইল চিত্র।

মুকল রায়কে মেড ইন চায়না বলে কটাক্ষ অভিষেকের। —ফাইল চিত্র।

নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৩ জুলাই ২০১৯ ১৭:৩৮
Share: Save:

হালিশহরের পর এ বার কাঁচরাপাড়া। ফের ঘাসফুলে প্রত্যাবর্তন ঘটল তৃণমূল থেকে বিজেপিতে যাওয়া কাউন্সিলরদের। শনিবার কাঁচরাপাড়ার চেয়ারম্যান সুদামা রায় এবং ভাইস চেয়ারম্যান মাখন সিন্‌হা-সহ মোট ন’জন তৃণমূলে ফিরে আসেন। তাঁদের মধ্যে এক নির্দল কাউন্সিলরও ছিলেন। এ দিন বিকালে, ‘ঘরে ফিরে আসা’ ওই কাউন্সিলদের নিয়ে সাংবাদিক বৈঠক করেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানেই কাঁচরাপাড়া পুনর্দখলের কথা জানান তিনি।

এর আগে, গত বৃহস্পতিবার বিজেপি থেকে তৃণমূলে ফিরে এসেছিলেন কাঁচরাপাড়া পুরসভার পাঁচ কাউন্সিলর। এ দিন আরও ন’জন ফিরে আসায় কাঁচরাপাড়ার ২৪টি ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলরের সংখ্যা দাঁড়াল ১৯, যা ম্যাজিক ফিগার ১৩-র চেয়ে বেশ খানিকটাই বেশি।

গত ২৩ মে লোকসভা নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার পর, গত ২৮ মে কাঁচরাপাড়ার ওই কাউন্সিলররা দিল্লিতে গিয়ে বিজেপিতে যোগদান করেন। দলবদলের এই পুরো পরিকল্পনাটাই মুকুল রায়ের মস্তিষ্কপ্রসূত বলে শুরু থেকেই জল্পনা ছিল রাজনৈতিক মহলে। কিন্তু দেড়মাস কাটতেই ওই বিধায়করা দলে ফিরে আসায়, এ দিন নাম না করে মুকুল রায়কে তীব্র কটাক্ষ করেন অভিষেক। তিনি বলেন, ‘‘এক জনকে চাণক্য বলে অভিহিত করেছিল কোনও কোনও সংবাদমাধ্যম। কিন্তু দেড় মাস কাটতেই তো ১৪ জন ফিরে এলেন। নামের আগে একটা মেড ইন চায়না বসান। এই চাণক্য মেড ইন চায়না।’’ ১০৭ জন তৃণমূল বিধায়ক তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছেন বলে সম্প্রতি দাবি করেছিলেন মুকুল রায়। সেই নিয়ে তাঁকে বিদ্রূপ করে অভিষেক বলেন, ‘‘নিজের পাড়ার কাউন্সিলরকে যিনি রক্ষা করতে পারেন না, দল ভাঙিয়ে নিয়ে গিয়েও রাখতে পারেন না, তিনি আবার বিধায়কদের সামলাবেন! কথায় বলে না, ঘরে নেই নুন, ছেলে আমার মিঠুন। আসলে এক শ্রেণির রাজনীতিকদের স্বভাবই হল মিথ্যা বলে দিল্লির কাছে নম্বর বাড়ানো।’’

আরও পড়ুন: প্রধান শিক্ষক থাকা সত্ত্বেও বহু স্কুলে সেই পদে নিয়োগ! অভিযুক্ত এসএসসি​

যে বা যাঁরা তৃণমূল থেকে বিজেপিতে গিয়েছিলেন, তাঁরা কেউই স্বেচ্ছায় যাননি বলেও দাবি করেন অভিষেক। তাঁর অভিযোগ, ‘‘ওই বিধায়কদের যখন নিয়ে যাওয়া হয়েছিল রাজ্যে তখনও নির্বাচনী বিধিনিষেধ চালু ছিল। কোনও ক্ষেত্রে রাজ্যের ভূমিকাই ছিল না। তাই ফল বেরনো মাত্র একটা গেল গেল রব তোলা হয়। ধারাবাহিক ভাবে সন্ত্রাস সৃষ্টি করে তৃণমূল নেতাদের বাধ্য করা হয় বিজেপিতে যোগ দিতে। কারও ছেলেকে মেরে, কারও স্ত্রীকে ভয় দেখিয়ে, জোর করে দিল্লি নিয়ে যাওয়া হয় সকলকে। নিজে থেকেই ফিরে আসতে চেয়েছিলেন ওঁরা, তাই ফিরিয়ে নিয়েছি।’’

এ বছর বিধানসভা নির্বাচনে ৪২ আসনের মধ্যে ২২টিতে জয় লাভ করে তৃণমূল। কিন্তু এক কালে বাংলায় যাদের কোনও অস্তিত্বই ছিল না, সেই বিজেপির দখলে যায় ১৮টি আসন। আগামী বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূলকে হটিয়ে ক্ষমতা দখল করতে প্রস্তুত বলে ইতিমধ্যেই দাবি করতে শুরু করেছেন বিজেপি নেতারা। কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপর মানুষের আস্থা রয়েছে, তাই বিজেপির স্বপ্নপূরণ হবে না বলে সাফ জানিয়ে দেন অভিষেক। তাঁর কথায়, নির্বাচনে বিজেপির আসন বাড়লেও, তৃণমূলের ভোট কমেনি। তাই দলের চিন্তার কোনও কারণ নেই। ভাটপাড়ার যে সমস্ত তৃণমূল নেতারা বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন, খুব শীঘ্র তাঁরাও দলে ফিরবেন বলে আশাবাদী অভিষেক।

আজকের এই দলবদল নিয়ে রাজ্য বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব এখনও পর্যন্ত কোনও মন্তব্য না করলেও, ব্যারাকপুরের সাংসদ অর্জুন সিংহ জানান, ‘‘ক’জন গিয়েছে জানি না। আমরা যখন অনাস্থা প্রস্তাব আনব, তখনই জানা যাবে, কে কোথায় আছে।’’

আরও পড়ুন: ‘শক্তি পরীক্ষায় ভয় পাচ্ছে বিজেপি, কর্নাটকে জিতব আমরাই’, দাবি সিদ্দারামাইয়ার​

অন্য দিকে, কাঁচরাপাড়ার পাশাপাশি, এ দিন দক্ষিণ দিনাজপুরের জেলা পরিষদের দলত্যাগী ১০ জন সদস্যের মধ্যে ৩ জনও ফিরে আসেন তৃণমূলে। তাতে ১৮ সদস্যের ওই বিধানসভা পরিষদে ১১ সদস্য নিয়ে ফের সংখ্যাগরিষ্ঠ তৃণমূল। তবে মুর্শিদাবাদের রঘুনাথগঞ্জের জামুয়ার গ্রাম পঞ্চায়েত হাতছাড়া হল তাদের। ১৬ আসনের ওই পঞ্চায়েতেপ ৯ তৃণমূল সদস্য এ দিন বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন।

এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও। সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের YouTube Channel - এ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE