Advertisement
E-Paper

টলমল বিজেপি, নেতাদের দাবি ফল খারাপ নয়

লোকসভা ভোটের পর কেটেছে মাত্র এক বছর। যে মোদী হাওয়ায় ভর করে এক বছর আগে কলকাতায় ২৩ শতাংশ ভোট পেয়েছিল বিজেপি, বছর ঘুরতে না ঘুরতেই সেটা নেমে এল ১৫.৪ শতাংশে। কলকাতা পুরভোটে যে বিজেপি প্রধান বিরোধী দল হয়ে ওঠার আশা দেখেছিল, ফল বেরনোর পর দেখা যাচ্ছে তারা কোনও রকমে তৃতীয় স্থানে। তা-ও কংগ্রেসের সঙ্গে রীতিমতো লড়াই করে তবেই।

সুকান্ত সরকার ও দিগন্ত বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ২৯ এপ্রিল ২০১৫ ০৩:৫৮

লোকসভা ভোটের পর কেটেছে মাত্র এক বছর। যে মোদী হাওয়ায় ভর করে এক বছর আগে কলকাতায় ২৩ শতাংশ ভোট পেয়েছিল বিজেপি, বছর ঘুরতে না ঘুরতেই সেটা নেমে এল ১৫.৪ শতাংশে। কলকাতা পুরভোটে যে বিজেপি প্রধান বিরোধী দল হয়ে ওঠার আশা দেখেছিল, ফল বেরনোর পর দেখা যাচ্ছে তারা কোনও রকমে তৃতীয় স্থানে। তা-ও কংগ্রেসের সঙ্গে রীতিমতো লড়াই করে তবেই।

কেন এমন হলো? দলের একাংশই মানছেন, লোকসভা ভোটে মোদী-ম্যাজিকে ভর করে যে ঝড় তুলতে পেরেছিলেন তাঁরা, সেটা ধরে রাখা এবং এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার মতো সংগঠন গড়ে তুলতে পারেননি তাঁরা। জনমুখী আন্দোলনেও তাঁদের সে ভাবে দেখা যায়নি। কেউ কেউ এমনও বলছেন, বিজেপির রাজ্য নেতারা রাস্তায় নামার চেয়ে টিভিতে মুখ দেখাতেই বেশি ব্যস্ত ছিলেন। ফল যা হওয়ার তাই-ই হয়েছে। পুরভোটে মোদীর নাম ভোট টানতে পারেনি।

বিজেপি নেতৃত্ব অবশ্য প্রকাশ্যে তাঁদের ব্যর্থতার কথা স্বীকার করছেন না। বরং তাঁদের দাবি, পুরভোটে শাসক দল যে হারে সন্ত্রাস করেছে, তার নিরিখে এই ফল খারাপ নয়। মঙ্গলবার বিজেপির রাজ্য সভাপতি রাহুল সিংহ নানা তথ্য তুলে ধরে প্রমাণ করতে চেয়েছেন, এই ভোটে কলকাতায় এবং সারা রাজ্যে বিরোধীদের মধ্যে একমাত্র বিজেপির ভোটই বেড়েছে। পুরভোটে কলকাতায় বিজেপি মোট সাতটি আসনে জয়ী হয়েছে। এ ছাড়াও অন্তত ৩৭টি আসনে বিজেপি দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে। কিন্তু লোকসভা ভোটে কলকাতায় ওয়ার্ড-ভিত্তিক ফলের নিরিখে বিজেপি ২৬টি ওয়ার্ডে এগিয়েছিল। সেটা ধরে রাখা গেল না কেন? রাহুলবাবুর জবাব, ‘‘ভোট লুঠ করা হয়েছে।’’

বিজেপির দাবি, তৃণমূল ভাড়াটে গুণ্ডা বাহিনী এবং পুলিশ নিয়ে তাণ্ডব চালিয়েছে। তবু এর মধ্যেও যে সামান্য জায়গায় মানুষ ভোট দিতে পেরেছেন সেখানে বিজেপির উপরেই তাঁরা আস্থা রেখেছেন। বিজেপির কেন্দ্রীয় সম্পাদক এবং এ রাজ্যে দলের পর্যবেক্ষক সিদ্ধার্থনাথ সিংহ প্রেস বিবৃতিতে অভিযোগ করেছেন, ‘‘তৃণমূল সরকারের আমলে অবাধ ভোট হওয়া সম্ভব নয়। লালুর জঙ্গল-রাজকেও তারা হার মানিয়েছে।’’

বড়বাজারের তিনটি ওয়ার্ড গত বার বিজেপি জিতেছিল। এ বারের চমক— ৭০ নম্বর ওয়ার্ডে বিদায়ী পুরবোর্ডের চেয়ারম্যান সচ্চিদানন্দ বন্দ্যোপাধ্যায়কে পরাস্ত করে বিজেপি প্রার্থী অসীম বসুর জয়। এই ওয়ার্ডটি খোদ মুখ্যমন্ত্রীর বিধানসভা কেন্দ্র ভবানীপুরের অন্তর্গত। এ ছাড়া লাগোয়া ৮৬ এবং ৮৭ নম্বর ওয়ার্ডে জিতেছে বিজেপি। তবে লোকসভায় ওই তিনটি ওয়ার্ডেই বিজেপি আরও অনেক বেশি ভোটে এগিয়েছিল।

রাজ্যের অন্যান্য পুরসভাতেও বিজেপির ভোট এবং আসন বেড়েছে বলে রাহুলবাবু দাবি করেন। ২০১০-এ ৯টি পুরসভায় বিজেপির আসন ছিল ১৬টি। এ বার ৩৬টি পুরসভায় দল ৮২টি আসন পেয়েছে বলে রাহুলবাবু জানিয়েছেন। রাজ্যে প্রধান বিরোধী শক্তি হিসেবে বিজেপিই উঠে আসছে বলে তাঁর দাবি। এই বক্তব্যের ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘‘আগের পুরভোটে সিপিএম ৬০৬টি আসন পায়। এ বার তা কমে দাঁড়িয়েছে ২৮০টিতে। কংগ্রেস পেয়েছিল ৪১৮টি এ বার ১৮৪টি। আমরাই প্রধান বিরোধীর জায়গা দখল করেছি।’’ ত্রিশঙ্কু পুরসভার অনেকগুলিতে বিজেপিই নির্ণায়ক হবে বলে তাঁর দাবি।

কিন্তু তৃণমূলের সঙ্গে তো বটেই, বিজেপি যে এখনও বামেদের সঙ্গেও টক্কর দেওয়ার মতো সংগঠন গড়ে তুলতে পারেনি তা অবশ্য দলীয় নেতৃত্বের একাংশ স্বীকার করেছেন। রাজ্যে সংগঠনের হাল ফেরাতে বিজেপি-র সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ মে মাসের গোড়া থেকেই দলকে বিধানসভা ভোটের জন্য সর্বশক্তি দিয়ে ঝাঁপানোর নির্দেশ দিয়েছেন। স্থির হয়েছে, ৬ মে থেকে রাজ্যের ৪৬ লক্ষ সদস্যের বাড়ি বাড়ি গিয়ে সম্পর্ক-অভিযান করা হবে। বিজেপি নেতৃত্বের আশা, ‘‘আগামী বিধানসভা ভোটে মস্তানরাজ চলবে না। ভোট হবে জাতীয় নির্বাচন কমিশনের তত্ত্বাবধানে।’’

sukanta sarkar agni roy kolkata new delhi rahul sinha roopa gangopadhyay Municipal election Municipal election result Mamata Bandopadhyay Trinamool TMC Cpm congress Bjp
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy