স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের মাধ্যমে দত্তক নেওয়া শিশু সাবালক হওয়া পর্যন্ত তাকে নিয়ে এক দম্পতিকে নিয়মিত বিচারকের সামনে হাজিরা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল বর্ধমান জেলা আদালত। সোমবার সেই নির্দেশ খারিজ করে দিয়েছেন হাইকোর্টের বিচারপতি সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায়।
নিম্ন আদালতের হাজিরা সংক্রান্ত নির্দেশ খারিজ করতে গিয়ে হাইকোর্টের পর্যবেক্ষণ, বেড়ে ওঠার প্রতিটি পর্যায়ে এ ভাবে হাজিরা দিতে হলে দত্তক নেওয়া সন্তান ক্রমেই বুঝে যাবে, ওই দম্পতি তার প্রকৃত বাবা-মা নন। যে-উদ্দেশ্যে দত্তক নেওয়া হয়ে থাকে, আদালতে এই ধরনের নিয়মিত হাজিরার বন্দোবস্ত সেই উদ্দেশ্য মোটেই পূরণ করবে না।
সাধারণ ভাবে নিঃসন্তান দম্পতি সন্তানসুখের আশায় কোনও শিশুকে দত্তক নেন। আবার নিরাশ্রয় শিশু যাতে বাবা-মায়ের স্নেহচ্ছায়ায় বেড়ে উঠতে পারে, সেই জন্য তাকে দত্তক দেওয়া হয়। দু’পক্ষের মধ্যে রক্তের সম্পর্ক থাকে না। এবং সেই সম্পর্কহীনতার দূরত্ব ক্রমশ ঘুচিয়ে বাবা-মা-সন্তানের সুস্থ, স্বাভাবিক সম্পর্ক গড়ে তোলাই দত্তক-প্রক্রিয়ার উদ্দেশ্য। শিশুটির চেতনা উন্মেষের প্রতি পদে তাকে যদি সেই দূরত্বের জ্বালা বুঝিয়ে দেওয়া হয়, সে-ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট দম্পতি ও সন্তানের সম্পর্ক স্বাভাবিক তো হয়ই না, দত্তক ব্যবস্থার সামাজিক উদ্দেশ্যও পণ্ড হয়ে যায়। আইনজীবী শিবিরের বক্তব্য, উচ্চ আদালত সেটা চাইছে না বলেই এ ক্ষেত্রে সসন্তান দম্পতির নিয়মিত হাজিরার নির্দেশ খারিজ করে দিয়েছে।