Advertisement
E-Paper

কংগ্রেস ছেড়ে বিজেপিতে অধীর অনুগামী, সোমেন বললেন ‘গুরুত্বই নেই’

মাহেশ্বরী সদনে বিজেপি যুব মোর্চার রাজ্য কার্যকারিণীর ফাঁকে রবিবার অনুপম ঘোষকে দলে স্বাগত জানান বিজেপি নেতৃত্ব। রাজ্য বিজেপির সভাপতি দিলীপ ঘোষ এ দিন অনুপমের গলায় উত্তরীয় পরিয়ে দেন, হাতে তুলে দেন দলের পতাকা।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০২ ডিসেম্বর ২০১৮ ২১:১৭
বিজেপিতে যোগ দিলেন অধীর অনুগামী কংগ্রেস নেতা। নিজস্ব চিত্র।

বিজেপিতে যোগ দিলেন অধীর অনুগামী কংগ্রেস নেতা। নিজস্ব চিত্র।

অস্বস্তি আরও একটু বাড়ল প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির। রবিবার কংগ্রেস ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিলেন প্রদেশ কংগ্রেসের সম্পাদক তথা সোশ্যাল মিডিয়া ইনচার্জ অনুপম ঘোষ। অধীর চৌধুরীর একনিষ্ঠ অনুগামী হিসেবে পরিচিত অনুপম বিজেপিতে যোগ দিয়েই তোপ দেগেছেন কংগ্রেসের প্রদেশ এবং সর্বভারতীয় নেতৃত্বের বিরুদ্ধে। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্র অবশ্য জানাচ্ছেন, এই দলত্যাগে কংগ্রেসের কিছুই যায় আসে না।

মাহেশ্বরী সদনে বিজেপি যুব মোর্চার রাজ্য কার্যকারিণীর ফাঁকে রবিবার অনুপম ঘোষকে দলে স্বাগত জানান বিজেপি নেতৃত্ব। রাজ্য বিজেপির সভাপতি দিলীপ ঘোষ এ দিন অনুপমের গলায় উত্তরীয় পরিয়ে দেন, হাতে তুলে দেন দলের পতাকা। যুব মোর্চার রাজ্য সভাপতি দেবজিৎ সরকারও উপস্থিত ছিলেন।

অধীর চৌধুরীকে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি পদ থেকে সরিয়ে সোমেন মিত্রকে সেই জায়গায় আনার পর থেকেই অনুপমরা ক্ষোভ উগরে দিতে শুরু করেছিলেন। তিনি প্রদেশ কংগ্রেসের সোশ্যাল মিডিয়া ইনচার্জ হওয়া সত্ত্বেও সোশ্যাল মিডিয়া সেলের দফতরে তাঁকে ঢুকতে দিচ্ছেন না সোমেন অনুগামীরা— এমন অভিযোগ তুলেছিলেন অনুপম। পরে অবশ্য পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেন সোমেন। প্রদেশ সভাপতি পদে পালাবদলের জেরে তাঁদের কাজ করতে দেওয়া হচ্ছে না বলে যাঁরা অভিযোগ করছিলেন, তাঁদের অনেকের সমস্যারই সুরাহাও হয়েছে বলে সোমেন শিবিরের দাবি।

অধীর অনুগামীরা অবশ্য তার পরেও ক্ষোভের কথা প্রকাশ্যেই জানাচ্ছিলেন। প্রদেশ কংগ্রেসের সম্পাদক (সংগঠন) নিলয় প্রামাণিক বিভিন্ন বৈঠকে এবং কর্মসূচিতে ডাক পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ ওঠে। সোশ্যাল মিডিয়া সেলের সঙ্গে এআইসিসি প্রতিনিধিদের বৈঠকে অনুপম ঘোষ ডাক পাননি বলেও অভিযোগ পৌঁছয় অধীরের কাছে। এর পরে প্রদেশ কংগ্রেসের একটি বৈঠকে অধীর চৌধুরী নিজে সোমেন মিত্রের কাছে সেই অভিযোগগুলি তুলে ধরেন। অনেককেই ডাকা হচ্ছে না বলে প্রদেশ সভাপতিকে জানান বহরমপুরের সাংসদ। কারা ডাক পাচ্ছেন না, তাঁকে জানানো হোক— সোমেনবাবু এমনই বলেছিলেন অধীরকে।

দলত্যাগী অনুপমের অবশ্য দাবি, কোনও আশ্বাসই পূরণ করা হয়নি। অধীর অনুগামীদের কোণঠাসা করার প্রক্রিয়া চলছিলই। কংগ্রেসে কোণঠাসা হচ্ছিলেন বলেই কি বিজেপিতে গেলেন? অনুপমের জবাব, ‘‘না, বৃহত্তর রাজনৈতিক কারণেই বিজেপিতে যোগ দিয়েছি। তৃণমূলের বিরুদ্ধে লড়াটা এই মুহূর্তে খুব জরুরি। কিন্তু কংগ্রেসে থেকে আর তৃণমূলের বিরুদ্ধে লড়া যাচ্ছিল না। ওই লড়াইটা এখন শুধু বিজেপি-ই দিতে পারবে। তাই বিজেপিতে যোগ দিলাম।’’

কংগ্রেস নেতৃত্বের বিরুদ্ধে তোপ দেগে অনুপম এ দিন বলেন, ‘‘এক দিকে আমরা রাস্তায় নেমে মার খাচ্ছি। অন্য দিকে ডালুবাবু, মৌসম নূররা প্রকাশ্যে তৃণমূলের সঙ্গে জোটের পক্ষে সওয়াল করছেন, তৃণমূলের সঙ্গে হাত মিলিয়ে পঞ্চায়েতের বোর্ড গড়ছেন। এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেছিলাম। প্রদেশ নেতৃত্বকে এবং এআইসিসি-কে চিঠি দিয়েছিলাম। কিন্তু এঁদের বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি। এর পরেও কী ভাবে বিশ্বাস করব যে, তৃণমূলের বিরুদ্ধে এই কংগ্রেস লড়তে পারবে?’’

অধীর অনুগামীর এই দলত্যাগ কি অদূর ভবিষ্যতে আরও বড় ভাঙনের জন্য রাস্তা তৈরি করে দিল? প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্র একদমই তা মনে করছেন না। অনুপমের দলত্যাগকে গুরুত্বই দিচ্ছেন না তিনি। সোমেনের কথায়, ‘‘এঁরা দলে থাকাও যা, না থাকাও তা। এঁদের থাকা বা না থাকার মধ্যে কোনও ফারাক নেই। তাই ওই দলত্যাগ নিয়ে আমরা ভাবছি না। এ সবের কোনও গুরুত্বই নেই।’’

(বাংলার রাজনীতি, বাংলার শিক্ষা, বাংলার অর্থনীতি, বাংলার সংস্কৃতি, বাংলার স্বাস্থ্য, বাংলার আবহাওয়া -পশ্চিমবঙ্গের সব টাটকা খবর আমাদের রাজ্য বিভাগে।)

West Bengal Pradesh Congress Anupam Ghosh Adhir Chowdhury Somen Mitra
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy