চাকরিজনিত সমস্যায় জেরবার হয়ে মামলার পথে যেতে চেয়েছিলেন এক সরকারি কর্মী। তাঁর বৃহস্পতিবার দায়ের করা মামলার শুনানির তারিখ পড়েছে ৯ মাস পরে, ডিসেম্বরে!
এমনই অবস্থা এখন রাজ্যের প্রশাসনিক আদালত বা স্যাটের। প্রশাসনিক মামলার নিষ্পত্তি যাদের ৬ মাসের মধ্যে করে ফেলার কথা, তারা শুনানির দিন ধার্য করতেই হিমশিম! কারণ, বিচারকের অভাবে স্যাট কাহিল। চেয়ারম্যানকে ধরে মোট ৬ জন বিচারক থাকার কথা বিধাননগরের ওই আদালতে। দু’দিন আগে অবসর নিয়েছেন প্রাক্তন মুখ্যসচিব সমর ঘোষ। এখন সাকুল্যে বিচারক দু’জন। চেয়ারম্যান প্রাক্তন বিচারপতি অমিত তালুকদার এবং একমাত্র ‘মেম্বার জাজ’ অনুপ চন্দ। তাঁদের পক্ষে কয়েক হাজার মামলা সামলানো দুঃসাধ্য হয়ে উঠেছে।
নিয়ম অনুযায়ী, কলকাতা হাইকোর্টের সঙ্গে পরামর্শক্রমে রাজ্য প্রশাসন স্যাটে বিচারক পাঠায়। রাজ্যের স্বরাষ্ট্র কর্মিবর্গ (হোম পার) দফতরের ভূমিকা প্রধান। যে দফতরের মন্ত্রী স্বয়ং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সরকারি কর্মীদের একাংশের মত, রাজ্য প্রশাসনের বিরুদ্ধেই যে হেতু মূলত মামলা দায়ের হয় ওই আদালতে, তাই বিচারক নিয়োগে সরকারি তরফে এত টালবাহানা! তাঁদের আরও প্রশ্ন, স্যাটের আদলেই মুখ্যমন্ত্রী বেসরকারি হাসপাতালের অনিয়মের বিচার করার জন্য কমিশন গড়তে বিল এনেছেন।
স্যাটের রেজিস্ট্রার হিসাবে নভেম্বরে দায়িত্ব নেন জয়শ্রী বন্দ্যোপাধ্যায়। তার পর থেকে তিনি বিচারকের অভাবের কথা জানিয়ে চার বার চিঠি দেন সরকারকে। অভিযোগ, প্রশাসনিক তরফে তৎপরতাই চোখে পড়েনি! জয়শ্রীদেবীর বক্তব্য, ‘‘প্রশাসনিক আদালত প্রহসন হয়ে যাচ্ছে! নতুন মামলার তারিখ দেওয়া যাচ্ছে না।’’ যে সব মামলার তারিখ মিলছে, তা-ও দীর্ঘ দিন পরে।
প্রশাসনের তরফে মুখ্যসচিব বাসুদেব বন্দ্যোপাধ্যায় জানাচ্ছেন, স্যাটের বিচারক সংক্রান্ত সমস্যার ফাইল তিনি পড়েছেন। তার পরে বিচারক নিয়োগের প্রক্রিয়াও শুরু হয়েছে। বাসুদেববাবুর কথায়, ‘‘এই কাজে প্রশাসন ও বিচারবিভাগ, দু’দিকের ভূমিকা আছে। একটা কমিটি আছে। যার নেতৃত্বে হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি। প্রশাসনের তরফে যা করার, করছি।’’ মুখ্যসচিবের আশা, দ্রুতই ওই কমিটির বৈঠক ডেকে সঙ্কট মীমাংসার জন্য আলোচনা হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy