Advertisement
E-Paper

মমতার এলাকার কলেজে বিক্ষোভে ভর্তিপ্রক্রিয়া ব্যহত

গত সপ্তাহেই শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন ছাত্র আন্দোলনের নামে কোনও ভাবেই কলেজের কাজে ও ভর্তি প্রক্রিয়ায় ব্যাঘাত ঘটানো যাবে না। কিন্তু মন্ত্রীর ওই নির্দেশকে কার্যত বুড়ো আঙুল দেখিয়ে খোদ মুখ্যমন্ত্রীর পাড়ায় শ্যামাপ্রসাদ কলেজেই বিক্ষোভ দেখাল শিক্ষামন্ত্রীর দলেরই ছাত্র সংগঠন তৃণমূল ছাত্র পরিষদ। আর তার জেরে বন্ধ হয়ে গেল ভর্তি প্রক্রিয়া এবং কলেজের স্বাভাবিক কাজকর্মও। অন্য দিকে, জয়পুরিয়া কলেজেও তৃণমূল ছাত্র পরিষদের আন্দোলনের জেরে ভোগান্তি হল ছাত্রছাত্রীদের।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৩ জুলাই ২০১৫ ১৯:৪২
জয়পুরিয়া কলেজ বিক্ষোভ।

জয়পুরিয়া কলেজ বিক্ষোভ।

গত সপ্তাহেই শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন ছাত্র আন্দোলনের নামে কোনও ভাবেই কলেজের কাজে ও ভর্তি প্রক্রিয়ায় ব্যাঘাত ঘটানো যাবে না। কিন্তু মন্ত্রীর ওই নির্দেশকে কার্যত বুড়ো আঙুল দেখিয়ে খোদ মুখ্যমন্ত্রীর পাড়ায় শ্যামাপ্রসাদ কলেজেই বিক্ষোভ দেখাল শিক্ষামন্ত্রীর দলেরই ছাত্র সংগঠন তৃণমূল ছাত্র পরিষদ। আর তার জেরে বন্ধ হয়ে গেল ভর্তি প্রক্রিয়া এবং কলেজের স্বাভাবিক কাজকর্মও। অন্য দিকে, জয়পুরিয়া কলেজেও তৃণমূল ছাত্র পরিষদের আন্দোলনের জেরে ভোগান্তি হল ছাত্রছাত্রীদের।

প্রতি দিনের মতো এ দিনও দুপুরে কলেজে কর্মচারীরা কাজ করতে আসেন। এ দিন বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষাও ছিল। তা অবশ্য নির্বিঘ্নে মিটে গিয়েছে বলে জানিয়েছেন এক শিক্ষক। কিন্তু তার পরে বেলা ১টা নাগাদ ছাত্র সংসদের কর্মীরা তাঁদের অফিস বন্ধ করতে বলেন। ওই শিক্ষক জানান, ছাত্রদের দাবি, কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের সঙ্গে কথা না বলা পর্যন্ত তাঁদের কাজ করতে দেওয়া হবে না। তাঁদের কলেজের ভিতরেই থাকতে হবে।

তার পরেই ওই কর্মচারীরা সমস্ত অফিসে তালা ঝুলিয়ে অন্য একটি ঘরে চলে আসেন। সেখানে অবশ্য তাঁদের খাওয়ার ব্যবস্থা করেন ছাত্ররাই। যেহেতু এ দিন ভর্তি প্রক্রিয়া চলছিল ফলে ভোগান্তিতে পড়েন ছাত্রছাত্রীরা। ভর্তি হতে না পেরে তাঁরা সকলেই ফিরে যান।

কিন্তু কেন এই ঘেরাও?

কলেজের ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক সৌভিক দাস জানান, বেশি নম্বর পেয়েও অনেকে কলেজে ভর্তি হতে পারেননি, অথচ কম নম্বর পেয়ে অনেকেই ভর্তি হয়েছেন। স্বচ্ছতা আনার জন্যই অনলাইনে ভর্তি প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল। কিন্তু সেখানেও দুর্নীতির অভিযোগ উঠছে।

যদিও অভিযোগ মানতে চাননি ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ তন্ময় বিশ্বাস। তিনি জানান, ব্যাঙ্কে টাকা জমা দেওয়ার পরে রসিদের একটি অংশ কলেজের সামনে ড্রপ বাক্সে ফেলে যাওয়ার কথা। কেউ ফর্ম পূরণ করে টাকা জমা দেওয়ার পরেও যদি ড্রপ বাক্সে তা না ফেলে দিয়ে যান, তা হলে কোনও ভাবেই তাঁর নাম মেধা তালিকায় থাকবে না। সেটাই স্বাভাবিক।

তবে ছাত্র সংসদের তরফে অভিযোগ এখানেই। এক ছাত্র জানান, ড্রপ বাক্সে ফেলে দেওয়া হলেও কলেজের তরফে তা রিসিভ করে স্ট্যাম্প দেওয়া হয়নি। এখানেই কলেজ কর্তৃপক্ষ দুর্নীতি করার সুযোগ পেয়ে গিয়েছেন। অধ্যক্ষকে পুরো বিষয়টি জানানোর পরেই ওই কর্মচারীদের ঘেরাও তুলে নেওয়া হবে বলে জানান সাধারণ সম্পাদক।

গত মাসেই স্কটিশ চার্চ কলেজে আন্দোলনের ফলে ভর্তি হতে আসা ছাত্রাছাত্রীরা অসুবিধায় পড়েছিলেন। সে সময় শিক্ষামন্ত্রী জানিয়েছিলেন, কোনও ভাবেই ভর্তি প্রক্রিয়ায় কোনও অসুবিধা করা যাবে না। কিন্তু এ দিন মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির এলাকার একটি কলেজে এ ভাবে ভর্তি প্রক্রিয়া বন্ধ হয়ে যাওয়ায় প্রশ্ন উঠেছে, তবে কি শিক্ষামন্ত্রীর নির্দেশও লঘু হয়ে যাচ্ছে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের কাছে?

অন্য দিকে, জয়পুরিয়া কলেজের সান্ধ্য বিভাগের সিএস তৃণমূল ছাত্র পরিষদের অয়ন ভট্টাচার্য জানান, বৃহস্পতিবার কলেজের ভিতরে ঢুকে এক ছাত্রীর শ্লীলতাহানি করে বহিরাগত কয়েক জন প্রাক্তন ছাত্র। যার জেরে শ্যামপুকুর থানায় অভিযোগ করা হয়। কিন্তু এর পরেই শুক্রবার সন্ধ্যায় অঙ্কন দত্ত ও সৌম্যদীপ মণ্ডল নামে দুই ছাত্রকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। ওই দিনই বটতলা থানায় অভিযোগ করা হলে রাত ১টা নাগাদ খান্না মোড় থেকে ওই দুই ছাত্রকে উদ্ধার করে পুলিশ। অঙ্কন পুলিশকে জানিয়েছেন, শ্লীলতাহানির অভিযোগ তুলে নেওয়ার জন্য তাঁদের চাপ দেওয়া হয়েছিল। তা অস্বীকার করায় মারধর করা হয়। পরে রাস্তায় ফেলে দিয়ে যায় ওই কলেজেরই চার প্রাক্তন ছাত্র। যাঁরা তৃণমূলের কর্মী বলেই পরিচিত। অয়নের অভিযোগ, অভিযুক্তদের নাম জানালেও সোমবার পর্যন্ত কেন গ্রেফতার করা হল না সেই দাবিতেই এ দিন তাঁরা অধ্যক্ষের ঘরের বাইরে অবস্থান করেন। কলেজের তরফে জানানো হয়েছে, এটা পুরোপুরি পুলিশের ব্যাপার। কলেজের এখানে কিছুই করার নেই। যদিও অধ্যক্ষ অশোক মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ছাত্রদের তরফ থেকে এ রকম কোনও দাবিপত্র পাইনি। পেলে বিবেচনা করে দেখা হবে।’’ পুলিশ সূত্রের খবর, তদন্ত চলছে।

ছবি: দেবস্মিতা ভট্টাচার্য।

mamata bandopadhyay partha chattopadhyay college admission tmc trinamool tmcp
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy