Advertisement
০৫ মে ২০২৪

বরখাস্ত নয় অবসর, পেনশন পাবেন স্ত্রী

হাইকোর্ট গত মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় সরকারকে নির্দেশ দিয়েছে, বরখাস্ত হওয়ার দিন থেকে ওই যুবক ‘বাধ্যতামূলক অবসর’ নিয়েছেন ধরে নিয়ে তাঁর স্ত্রীকে বকেয়া সব পাওনা মিটিয়ে দিতে হবে তিন মাসের মধ্যে।

ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

শমীক ঘোষ
কলকাতা শেষ আপডেট: ২১ ডিসেম্বর ২০১৭ ০৪:৩২
Share: Save:

কর্তৃপক্ষের অনুমতি না-নিয়ে ১৪৫ দিন অনুপস্থিত থাকায় ইছাপুরের এক যুবককে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়েছিল। সেই বিষয়ে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা চলাকালীন বছর ছয়েক আগে মৃত্যু হয় তাঁর। বরখাস্ত হওয়ার ১৭ বছর পরে উচ্চ আদালত নির্দেশ দিল, মৃতের স্ত্রীকে পেনশন দিতে হবে। অন্যান্য খাতে তাঁর পাওনা টাকাও পাবেন স্ত্রী।

হাইকোর্ট গত মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় সরকারকে নির্দেশ দিয়েছে, বরখাস্ত হওয়ার দিন থেকে ওই যুবক ‘বাধ্যতামূলক অবসর’ নিয়েছেন ধরে নিয়ে তাঁর স্ত্রীকে বকেয়া সব পাওনা মিটিয়ে দিতে হবে তিন মাসের মধ্যে। নিয়মিত পেনশনও দিতে হবে স্ত্রীকে।

সোমনাথ চক্রবর্তী নামে ওই যুবক প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের অধীন ইছাপুরের মেটাল অ্যান্ড স্টিল ফ্যাক্টরিতে ১০ বছর কাজ করেছিলেন। ২০০০ সালের জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর মাসের মধ্যে ১৪৫ দিন তিনি অনুপস্থিত ছিলেন। কেন্দ্রীয় সরকারের ওই সংস্থা তাঁর বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত শুরু করে এবং সেই বছরেই তাঁকে বরখাস্ত করা হয়। কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সোমনাথবাবু মামলা করেন ক্যাট বা কেন্দ্রীয় প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনালে। ২০০৬ সালে ক্যাট রায় দেয়, তাঁকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা ছাড়া সংস্থার কর্তৃপক্ষ অন্য যে-কোনও শাস্তি দিতে পারেন। ক্যাটের রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে ২০০৬ সালেই হাইকোর্টে আপিল মামলা করে কেন্দ্র। প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের আইনজীবী সর্দার আমজাদ আলি সওয়ালে জানান, কী ধরনের শাস্তি দেওয়া হবে, ক্যাট সেই বিষয়ে নির্দেশ দিতে পারে না।

হাইকোর্টে মামলা চলাকালীন ২০১১ সালে সোমনাথবাবু মারা যান। নিয়ম অনুযায়ী তাঁর স্ত্রী কাবেরী চক্রবর্তী এবং ছেলে শুভ আপিল মামলায় যুক্ত হন। তাঁদের আইনজীবী কল্যাণ সরকার বুধবার জানান, আপিল মামলার শুনানি চলাকালীন হাইকোর্টের তৎকালীন বিচারপতি নিশীথা মাত্রে ও বিচারপতি রাকেশ তিওয়ারির ডিভিশন বেঞ্চ কেন্দ্রীয় সরকারকে নির্দেশ দেয়, চাকরির শুরু থেকে বরখাস্ত হওয়ার দিন পর্যন্ত সোমনাথবাবু বকেয়া সাড়ে সাত লক্ষ টাকা উচ্চ আদালতের রেজিস্ট্রারের কাছে জমা রাখতে হবে। সেই নির্দেশ মেনে নেয় কেন্দ্র।

পরে মামলাটির শুনানির ব্যবস্থা হয় বিচারপতি দেবাশিস করগুপ্ত ও বিচারপতি শেখর ববি শরাফের ডিভিশন বেঞ্চে। মঙ্গলবার ডিভিশন বেঞ্চ হাইকোর্টের রেজিস্ট্রারকে নির্দেশ দিয়েছে, জমা রাখা টাকা দিতে হবে সোমনাথবাবুর স্ত্রীর হাতে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE