Advertisement
E-Paper

প্রকাশ্যেই ভাল-মন্দের কাটাকুটি খেললেন মমতা

পড়শি মুর্শিদাবাদের নাম বেমালুম অনুচ্চারিত রেখে বুঝিয়ে দিলেন, সদ্য পঞ্চায়েত নির্বাচনে সে জেলার ফলে তেমন অখুশি নন তিনি।

সুস্মিত হালদার

শেষ আপডেট: ২৩ জুন ২০১৮ ০২:১২
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ফাইল চিত্র

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ফাইল চিত্র

খাতা আগেই দেখা হয়ে গিয়েছিল। বৃহস্পতিবার ছিল, ফল প্রকাশের উদ্বেগ।

ভরা স্টেডিয়ামে কোর কমিটির বৈঠকের নামে, প্রকাশ্যে তাই ভাল-মন্দের একটা কাটাকুটি খেলে দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

সদ্য শেষ হওয়া পঞ্চায়েত নির্বাচনের ফলের নিরিখে তাই কারও জুটল ধ্যাঁতানি কারও বা নামোল্লেখ না করে পরোক্ষ স্বস্তি (পড়ুন প্রশংসা)। পারস্পারিক আকচাআকচি কিংবা সুগন্ধ থাক না-থাক, বিজেপি’র ফুল ফোটানোর নিরিখে তাই প্রবল ধমক খেলেন নদিয়ার তামাম জেলা নেতৃত্ব। আর পড়শি মুর্শিদাবাদের নাম বেমালুম অনুচ্চারিত রেখে বুঝিয়ে দিলেন, সদ্য পঞ্চায়েত নির্বাচনে সে জেলার ফলে তেমন অখুশি নন তিনি।

নদিয়ার জেলা তৃণমূলের এক শীর্ষ নেতা তাই কলকাতা ফেরত কাচুমাচু মুখে বলছেন, ‘‘এই বয়সে ‘পুরস্কার’টা বড্ড কড়া হয়ে গেল গো!’’ আর চেহারায় ছোটখাটো হলেও পদের ভারে ভারিক্কি, মুর্শিদাবাদের এক জেলা নেতা কিঞ্চিৎ ঠেস দিয়ে বলছেন, ‘‘কাজ না করলে তিরস্কার তো জুটবেই ভাই!’’

নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে, দলের কোর কমিটির বৈঠকে পঞ্চায়েত ভোটের ফলাফল নিয়ে জেলার তিন বর্ষীয়ান নেতাকে বৃহস্পতিবার বেজায় বকাঝকা করেছেন নেত্রী। জেলা সভাপতি গৌরীশঙ্কর দত্ত, কারামন্ত্রী উজ্জ্বল বিশ্বাস এবং নাকাশিপাড়ার বিধায়ক কল্লোল খাঁ— মঞ্চে দাঁড়িয়ে মৃদু মাথা নেড়েছেন বটে, তবে রা কাড়েননি। এ দিন অবশ্য মুখ ফুটে দু’কথা বলেছেন তিন জনেই।

মন্ত্রী উজ্জ্বল তার মধ্যে বেশ স্পষ্ট, ‘‘আমার বিধানসভা এলাকায় তো গত বারের তুলনায় ফল অনেকটাই ভাল হয়েছে। নেত্রী মনে হয় কৃষ্ণনগর-১১ ব্লকের নবদ্বীপ ও কৃষ্ণনগর (উত্তর) বিধানসভা এলাকার সঙ্গে গুলিয়ে ফেলেছেন।”

তুলনায় নাকাশিপাড়ার বিধায়ক অনেক কুশলী, “আসলে আমরা দলের পুরনো কর্মী তো, তাই আমাদের প্রতি নেত্রীর প্রত্যাশাটা একটু বেশি। তাই বকাঝকা।’’

তবে দীর্ঘ দিন পরে জেলা নেতৃত্বের সর্বোচ্চ পদটি ফিরে অনেক বেশি ডিপ্লোম্যাটিক গৌরীশঙ্কর দত্ত। বলছেন, “দলের সর্বাধিনায়িকা আমাদের কিছু কথা বলেছেন। তার পাল্টা কোনও কথা বলার ধৃষ্টতা আমার নেই।”

দিন কয়েক আগে কল্যাণীর এক বৈঠকে দলের প্রবীণ নেতাদের কিছু বলতে না পারলেও মেজ-সেজদের বেজায় ধমকে ছিলেন দলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়। বাকি কাজটা এ দিন সেরে দিলেন দলনেত্রী, এমনই মনে করছেন দলের অনেকে।

রাজ্যে যে চারটি জেলা বিনা লড়াইয়ে ছিনিয়ে নিয়েছে জেলা পরিষদ, মুর্শিদাবাদ তারই একটি। বিরোধী ঠেকাতে লাঠি-উইকেটের শাসনেও সে জেলার নাম রয়েছে প্রথম দিকে। বিরোধীদের দাবি, ‘সাফল্য’ও তাই এসেছে যথাযথ! ‘সে জন্যই কি কোর কমিটির বৈঠকে মুর্শিদাবাদের কোনও ত্রুটি খুঁজে পেলেন না নেত্রী?’, প্রশ্ন করছেন জেলার এক প্রাক্তন মন্ত্রী।

যা শুনে মুর্শিদাবাদের তাবড় এক নেতা দরাজ গলায় হেসে বলছেন, ‘‘কাজটা করে দেখাতে হয় ভাই, তবে, মনে রাখবেন, খুব সাবধানে!’’

Mamata Banerjee Warning Extortion Infighting Group Clash TMC TMC Leaders
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy