হুগলির তেলেনিপাড়া ফেরিঘাটে বুধবার যে-জেটিতে দুর্ঘটনা ঘটেছে, সেটি বাঁশ ও কাঠের তৈরি। প্রাথমিক ভাবে খবরাখবর নিয়ে নবান্ন দেখেছে, মূল জেটি বাদ দিয়ে অনেক জায়গায় স্থানীয় ভাবে বাঁশ, কাঠ ও কঞ্চি দিয়ে জেটি তৈরি করা হয়েছে এবং দুর্ঘটনা ঘটছে মূলত সেগুলোতেই। তাই বাঁশ-কাঠের জেটির পাট চুকিয়েই দিতে চাইছে রাজ্য প্রশাসন। কংক্রিটের জেটি ছাড়া অন্য কোনও জেটি যাতে আর ব্যবহার করা না-হয়, সেটা নিশ্চিত করার দিকেই এগোচ্ছে নবান্ন।
তেলেনিপাড়ার দুর্ঘটনার পরে জেটিঘাট সংস্কারের কাজে আর দেরি করতে চাইছে না রাজ্য প্রশাসন। অবিলম্বে রাজ্যের সব জেটিকে নির্দিষ্ট নিয়মশৃঙ্খলায় বাঁধতে চাইছে তারা। সেই জন্য আজ, শুক্রবার সব জেলাশাসকের সঙ্গে ভিডিও-সম্মেলন করবেন রাজ্যের মুখ্যসচিব বাসুদেব বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই সম্মেলনে যোগ দেবেন স্বরাষ্ট্র, পরিবহণ, প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলা-সহ বেশ কয়েকটি দফতরের শীর্ষ কর্তারাও।
রাজ্য প্রশাসনের সদর দফতরের এক কর্তা জানান, পারাপারের সুবিধের জন্য বিভিন্ন এলাকায় বাঁশ-কাঠের অস্থায়ী জেটি গড়ে তোলা হয়। নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে হলে সেগুলোকে তুলে দিতে হয় অথবা তার সব ক’টিকেই রূপান্তরিত করতে হয় কংক্রিটের জেটিতে। সেটা বেশ খানিকটা সময় ও খরচের ধাক্কা। তবু নবান্ন চাইছে, কংক্রিট ছাড়া আর কোনও জেটি যেন ব্যবহার করা না-হয়। বাঁশ-কাঠের জেটি বন্ধ হয়ে গেলে দুর্ঘটনা এমনিতেই কমে যাবে।
‘‘বড় জেটিগুলি সংস্কারের কাজ হাতে নেওয়া হয়েছে প্রায় ন’মাস আগেই। সেই কাজ কতটা এগিয়েছে, জেলাশাসকদের কাছে তা জানতে চাওয়া হবে,’’ বৃহস্পতিবার বলেন নবান্নের এক শীর্ষ কর্তা। তিনি জানান, হুগলি নদীর দুই তীরে এবং রাজ্যের অন্যান্য নদনদীতে অসংখ্য ছোট জেটি রয়েছে। কী ভাবে সেগুলো সংস্কার করা যাবে, তার মধ্যে ক’টি জেটিকে রাখা হবে আর ক’টি তুলে দেওয়া হবে— শুক্রবারের বৈঠকে এই সব বিষয়েও সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
কয়েক মাস আগেই হুগলি নদীর একটি অংশকে এক নম্বর জাতীয় জলপথ হিসেবে ঘোষণা করেছে কেন্দ্র। নবান্ন সূত্রের খবর, ওই অংশের পূর্ব-পশ্চিম পাড় বরাবর জেটি সংস্কারের জন্য বিশ্বব্যাঙ্কের কাছ থেকে হাজার কোটি টাকা ঋণ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল রাজ্য। ওই এলাকায় কোথায়, ক’টি জেটি রয়েছে, তা নিয়ে একটি সমীক্ষা চালানো হয়েছিল। তার সঙ্গেই অন্যান্য এলাকায় সমীক্ষা চালিয়ে ছোট জেটিগুলির মধ্যে কয়েকটিকে তুলে দেওয়া হবে।
নবান্নের একটি সূত্র জানাচ্ছে, অনেক জায়গায় জেটিতে নজরদারির ব্যবস্থাও নেই। এই ধরনের জেটি বন্ধ করে দেওয়ার জন্য জেলা প্রশাসনকে নির্দেশ দেবে নবান্ন। যে-সব জেটি চালু থাকবে, সেখানে পুলিশ ও সিভিক পুলিশের নিয়মিত নজরদারির বন্দোবস্ত হবে। জেটির মুখে যাতে ভিড় জমে না-যায়, সে-দিকে নজর রাখতে হবে জেলা প্রশাসনকে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy