Advertisement
E-Paper

নেতৃত্বে সেই পুরনো মুখ, বুথে তবু প্রতিরোধের ডাক

বুথ স্তরে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারলেই শাসক দলের মোকাবিলা সম্ভব, বুঝছে আলিমুদ্দিন। শুধু বক্তৃতায় সীমাবদ্ধ না থেকে বুথ স্তরে প্রতিরোধে জোর দেওয়ার বার্তাও দেওয়া হচ্ছে। হাতে-কলমে যে কাজ করাতে প্রয়োজন তরুণ রক্ত। অথচ রাজ্য নেতৃত্বে সেই পুরনো, বয়স্ক মুখেরই আনাগোনা অব্যাহত! এই বৈপরীত্য সঙ্গে নিয়েই আগামী বিধানসভা ভোটের প্রস্তুতিতে হাত দিচ্ছে সিপিএম!

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৩ মে ২০১৫ ০৩:১৯

বুথ স্তরে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারলেই শাসক দলের মোকাবিলা সম্ভব, বুঝছে আলিমুদ্দিন। শুধু বক্তৃতায় সীমাবদ্ধ না থেকে বুথ স্তরে প্রতিরোধে জোর দেওয়ার বার্তাও দেওয়া হচ্ছে। হাতে-কলমে যে কাজ করাতে প্রয়োজন তরুণ রক্ত। অথচ রাজ্য নেতৃত্বে সেই পুরনো, বয়স্ক মুখেরই আনাগোনা অব্যাহত! এই বৈপরীত্য সঙ্গে নিয়েই আগামী বিধানসভা ভোটের প্রস্তুতিতে হাত দিচ্ছে সিপিএম!

রাজ্য কমিটির দু’দিনের বৈঠকের শেষ পর্বে শুক্রবার সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্রের আশা, বুথ স্তরে তৃণমূলের সন্ত্রাস প্রতিরোধ করতে পারলে বিধানসভা ভোটে বামেরা তুলনামূলক ভাবে ভাল ফল করবে। সন্ত্রাস মোকাবিলায় বুথে বুথে লড়াইয়ের জন্য এখন থেকে কমিটি গড়ার দাওয়াইও তিনি দিয়েছেন। তাঁর বক্তব্য, যেখান তৃণমূলের ‘সন্ত্রাসে’র বিরুদ্ধে বুথ স্তরে রুখে দাঁড়ানো সম্ভব হয়েছে, সেখানেই বামেদের ফল যে ভাল হয়েছে, পুরভোটে সেই শিক্ষা মিলেছে। তাই মানুষকে সঙ্গে নিয়ে বুথ-স্তরে কমিটি গঠন করে লড়াইয়ের জন্য প্রস্তুতি নিতে হবে। জবাবি ভাষণে রাজ্য সম্পাদকের বার্তা, তৃণমূল যত মানুষের আস্থা হারাবে, ততই তাদের আক্রমণের মুখে পড়তে হবে বিরোধীদের। সাধারণ মানুষকে সঙ্গে নিয়ে প্রতিরোধের ব্যবস্থা করতে হবে।

কিন্তু দলের অন্দরেই প্রশ্ন, রাজ্য নেতৃত্বে নবীন মুখ না থাকলে প্রতিরোধে তরুণ নেতৃত্বকে উদ্বুদ্ধ করা যাবে কী ভাবে? দলের নবগঠিত রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীতে তরুণ মুখের জায়গা না হওয়ায় এমন প্রশ্ন ফের মাথা তুলছে। রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীতে মিনতি ঘোষ বা স্থায়ী আমন্ত্রিত সদস্য হিসাবে অশোক ভট্টাচার্য ও রামচন্দ্র ডোম জায়গা পেলেও তাঁরা কেউই তরুণ নন। পুরনো মুখদের ঝেড়ে ফেলার সাহসও দেখায়নি আলিমুদ্দিন! বিমান বসু, বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য, শ্যামল চক্রবর্তীদের সঙ্গে দীপক দাশগুপ্ত, নৃপেন চৌধুরী, মৃদুল দে-রাও সম্পাদকমণ্ডলীতে রয়েছেন। যাঁদের কয়েক জনের সম্পাদকমণ্ডলীতে থেকে যাওয়ার যৌক্তিকতা নিয়ে দলের মধ্যেই প্রশ্ন আছে। রাজ্য কমিটির এক সদস্যের কথায়, ‘‘পুরনো কয়েক জনকে সরিয়ে প্রাক্তন সর্বভারতীয় যুব সম্পাদক তাপস সিংহের মতো কিছু মুখ রাজ্য নেতৃত্বে তুলে আনলে বরং দলের কর্মী মহল এবং সাধারণ মানুষ, দু’পক্ষের কাছেই ভাল বার্তা যেত!’’

যদিও সিপিএমের রাজ্য নেতৃত্বের যুক্তি, তাঁদের দল চালানোর ব্যবস্থা অনুযায়ী রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীতে চাইলেই একগুচ্ছ তরুণ মুখ তুলে আনা সম্ভব নয়! দলের এক পলিটব্যুরো সদস্যের কথায়, ‘‘রাজ্য কমিটিতে যাঁরা আছেন, তাঁদের মধ্যে থেকেই সম্পাদকমণ্ডলী বেছে নেওয়া হয়। কমিটি চালানোর কাজে অভিজ্ঞতা আছে, এমন নেতারাই এখানে সুযোগ পান। সেখানে এক বারে খুব বেশি তরুণ মুখ তুলে আনা পদ্ধতিগত ভাবেই অসুবিধাজনক।’’ তবে সিপিএম এ সব ক্ষেত্রে ভারসাম্যের নীতি মেনে চলে। কিন্তু এ বার ‘প্রতীকী অর্থে’ও কোনও তরুণ মুখ সম্পাদকমণ্ডলীতে না আসায় প্রশ্ন আরও বেশি করে উঠছে।

আপাতত ‘বৃদ্ধতন্ত্রে’ ইতি না টেনেই অবশ্য সামনে এগোতে চাইছে সিপিএম। গ্রামের মানুষের সমর্থন ফিরে পেতে রাজ্যে সিপিএমের নতুন খেতমজুর সংগঠন গড়ার সিদ্ধান্তও হয়েছে। এ বার পুরভোটেই সাম্প্রতিক কালে প্রথম বার রাজ্যে বামেদের রক্তক্ষরণ বন্ধের ইঙ্গিত ধরা পড়েছে। এই ফলকে সামনে রেখে এবং তৃণমূল-বিজেপি-র নৈকট্যকে প্রচারের হাতিয়ার করে ময়দানে নামতে রাজ্য কমিটিকে এ দিন পরামর্শ দেন দলের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি। তিনি এ দিন নাম না করে জবাব দেন উত্তর ২৪ পরগনার নেতা নেপালদেব ভট্টাচার্যকেও। বৈঠকে আগের দিন দলীয় নেতৃত্বের উদ্দেশে বক্রোক্তি করার ফাঁকেই নেপালদেব বলেছিলেন, পলিটব্যুরো সিপিএমের নীতি নির্ধারক কমিটি। দলীয় সূত্রের খবর, ইয়েচুরি এ দিন তাঁর ‘ভুল’ শুধরে দিয়ে জানান, নীতি নির্ধারণ করে কেন্দ্রীয় কমিটি। সিপিএম যাঁরা করেন, তাঁরা অন্তত এইটুকু জানবেন বলে প্রত্যাশা করা যায়!

cpm assembly election Buddhadeb Bhattacharjee Biman Bose sitaram yechury left front
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy