Advertisement
০৫ মে ২০২৪

ফের টেটে বসতে বাধা নেই কর্মরত শিক্ষকদের

টেট নিয়ে স্বস্তি। টেট নিয়েই ধাক্কা। নতুন প্রার্থীদের বেশি সুযোগ দেওয়ার জন্য সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল, ইতিমধ্যে স্কুলে কাজ পেয়ে যাওয়া তরুণ-তরুণীদের আর নিয়োগ পরীক্ষায় বসতে দেওয়া হবে না।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০১ অক্টোবর ২০১৬ ০৪:০৪
Share: Save:

টেট নিয়ে স্বস্তি। টেট নিয়েই ধাক্কা।

নতুন প্রার্থীদের বেশি সুযোগ দেওয়ার জন্য সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল, ইতিমধ্যে স্কুলে কাজ পেয়ে যাওয়া তরুণ-তরুণীদের আর নিয়োগ পরীক্ষায় বসতে দেওয়া হবে না। কিন্তু কলকাতা হাইকোর্ট নির্দেশ দিয়েছে, কর্মরত শিক্ষক-শিক্ষিকারা আবার নিয়োগ পরীক্ষায় বসতে চাইলে তাঁদের আটকানো যাবে না। তাঁদের সেই পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ দিতেই হবে। পরীক্ষায় বসার ক্ষেত্রে নতুন আর কর্মরত প্রার্থীদের মধ্যে কোনও রকম তফাত করার সুযোগ নেই।

পুজোর মুখে হাইকোর্ট প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে মামলার ফয়সালা করে দেওয়ায় রাজ্য সরকার স্বস্তি পেয়েছিল। কিন্তু সেই রায়ের কয়েক দিন পরেই স্কুলে শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষা নিয়ে অন্য একটি মামলায় উচ্চ আদালতের নির্দেশে ধাক্কা খেতে হল সরকারকে।

প্রাথমিক স্তরের নিয়োগ পরীক্ষায় প্রশিক্ষিত প্রার্থীদের অগ্রাধিকার দিতে হবে বলে হাইকোর্ট রায় দেওয়ার পরে কালবিলম্ব না-করে টিচার্স এলিজিবিলিটি টেস্ট বা টেটের ফল ঘোষণা করে দিয়েছিল রাজ্য সরকার। বারবার পরীক্ষায় বসার ব্যাপারে উচ্চ আদালত বৃহস্পতিবার কর্মরত শিক্ষক-শিক্ষিকাদের অনুকূলে নির্দেশ দেওয়ার পরে স্কুল সার্ভিস কমিশন (এসএসসি)-ও দেরি করেনি। শুক্রবারেই পত্রপাঠ একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করে তারা জানিয়ে দিয়েছে, উচ্চ প্রাথমিক, নবম-দশম শ্রেণি এবং একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষায় নতুন প্রার্থীদের মতো একই ভাবে সুযোগ পাবেন কর্মরত শিক্ষক-শিক্ষিকারা।

প্রাথমিক, উচ্চ প্রাথমিক, নবম-দশম ও একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণিতে শিক্ষক নিয়োগের জন্য পৃথক পৃথক টেট নেওয়া হয়। স্কুল সার্ভিস কমিশনের এক কর্তা জানাচ্ছেন, বৃহস্পতিবারের রায়ে হাইকোর্টের বক্তব্য, উচ্চ প্রাথমিক এবং নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণিতে শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষায় বর্তমানে কর্মরত শিক্ষক-শিক্ষিকাদের বসতে না-দেওয়ার কোনও কারণ নেই। সেই রায়ের ভিত্তিতেই এ দিন একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করে কমিশন। ওই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, প্রার্থী হওয়ার আবেদন অনলাইনে জমা দেওয়া যাবে ৭ অক্টোবর বিকেল ৫টা পর্যন্ত। www.westbengalssc.com— এই ওয়েবসাইটে গিয়ে প্রার্থীকে আবেদন করতে হবে। আবেদনের টাকা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ১৮ অক্টোবর।

কমিশন সূত্রের খবর, আনকোরা নতুন প্রার্থীদের পথ মসৃণ করতেই রাজ্য সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল, যাঁরা বিভিন্ন স্কুলে শিক্ষক-শিক্ষিকা হিসেবে চাকরি করছেন, তাঁরা নতুন করে ফের পরীক্ষায় বসার আবেদন করতে পারবেন না। কারণ, সাধারণত উচ্চতর পদে প্রোমোশন চেয়ে বা বাড়ির কাছাকাছি স্কুলে নিয়োগের সম্ভাবনা দেখে কর্মরত শিক্ষক-শিক্ষিকারা আবেদন করেন। রাজ্যের বক্তব্য ছিল, যাঁরা ইতিমধ্যেই কর্মরত, তাঁরা প্রতিটি নতুন নিয়োগ পরীক্ষায় আবেদন করতে থাকলে নতুন প্রার্থীরা সুযোগ হারাবেন। তাই কর্মরতদের আর কোনও ভাবেই স্কুলের নিয়োগ পরীক্ষায় বসতে দেওয়া যাবে না।

সরকারের এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে হাইকোর্টে মামলা করেন চাকুরিরত প্রার্থীদের একাংশ। এসএসসি সূত্র জানাচ্ছে, বৃহস্পতিবার সেই মামলায় আদালত বলেছে, কর্মরত শিক্ষক-শিক্ষিকাদের ফের পরীক্ষায় বসার অধিকার কেড়ে নেওয়া যায় না। কেউ এক বার চাকরি পেয়েছেন বলে আর কোনও নিয়োগ পরীক্ষায় বসতে পারবেন না, এটা হতে পারে না।

উচ্চ আদালতের এই সিদ্ধান্ত মেনেই তড়িঘড়ি বিজ্ঞপ্তি জারি করে স্কুল সার্ভিস কমিশন। আপাতত নবম এবং দশম শ্রেণিতে ১০ হাজার ২৩৩ শূন্য পদে এবং একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণিতে ছ’হাজার ২৯৬ শূন্য পদে নিয়োগের কথা জানিয়েছে তারা। এবং ওই সব পদের জন্যই নতুন প্রার্থীদের সঙ্গে পরীক্ষা দিতে পারবেন কর্মরত শিক্ষক-শিক্ষিকারা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

TET
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE