চাষিদের আয় বাড়াতে তাঁদের নিয়েই কোম্পানি গড়ে বড়সড় সাফল্য পেয়েছে কৃষি বিপণন দফতর। রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে ‘সুফল বাংলা’ নামে কাঁচা আনাজের স্টলগুলি চালাচ্ছেন চাষিরাই। এ বার জৈব চাষেও সে রকমই কোম্পানি (ফার্মার্স প্রডিউসার কোম্পানি) তৈরি করছে কৃষি দফতর। কৃষিমন্ত্রী পূর্ণেন্দু বসুর কথায়, ‘‘জৈব আনাজের উৎপাদন ও খোলা বাজারে সেই সবজির কেনাবেচা বাড়াতে ‘ফার্মার্স প্রডিউসার কোম্পানি’ তৈরি করছি। সেই প্রক্রিয়া শুরুও হয়েছে।’’
কোম্পানি তৈরির অন্যতম শর্ত, চাষিদের নিজের জমি থাকতে হবে। সেই শর্ত মেনেই কৃষি বিপণন দফতরের অধীনে এ পর্যন্ত ৫২টি কোম্পানি তৈরি হয়েছে। জৈব চাষে উৎসাহ বাড়াতে সেই বাধ্যবাধকতাও শিথিল করতে রাজি কৃষি দফতর। পূর্ণেন্দুবাবু বলেন, ‘‘চাষিরা যদি সমবায় গড়ে জৈব চাষ করতে চান তা হলে সরকারি খামারের জমি দেওয়ার কথা বিবেচনা করা যেতেই পারে।’’
এখন কোনও ব্যক্তির একক চেষ্টায় কিংবা স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার উদ্যোগে রাজ্যের কিছু জেলায় বিক্ষিপ্ত ভাবে কীটনাশকমুক্ত চাষ হচ্ছে। সেই সব আনাজের দাম আকাশছোঁয়া। চাষিদের একত্রিত করে জৈব চাষের উৎপাদন বাড়িয়ে সেই একাধিপত্যে লাগাম টানতে চাইছে কৃষি দফতর। এক কৃষিকর্তা বলেন, ‘‘সরকারি উদ্যোগে হুগলির বলাগড় ও হরিপালে ১২-১৪ জনকে নিয়ে সুসংহত জৈব চাষ শুরু হয়েছে।’’ এ ছাড়াও বাঁকুড়ার ছাতনা ও গঙ্গাজলঘাটিতে প্রায় আট হাজার হেক্টর জমিতে জৈব চাষ হচ্ছে। এমনকী, সেখানকার ঢ্যাঁড়স, চিচিঙ্গা, পেঁপে, পটল ও কুমরো মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, দুবাই, কাতারের বাজারে বিকোচ্ছে। কলকাতার বিধান শিশু উদ্যান ও বাগুইআটিতেও সপ্তাহে এক দিন করে বাজার বসছে। একই কারণে হাওড়া পুরসভা বিদ্যাসাগর সেতুর নীচে কৃষি দফতরকে জায়গা দিয়েছে। ঠিক হয়েছে, যত দিন না পর্যাপ্ত সংখ্যায় স্টল মিলছে, তত দিন সুফল বাংলা-র স্টলেই জৈব আনাজ বিক্রি করবেন চাষিরা।