Advertisement
E-Paper

‘এসআইআর আতঙ্কে’ আরও মৃত্যু! তালিকায় নাম না থাকা থেকে নামের বানান ভুল, কুলপি ও সাঁইথিয়ায় প্রাণ হারালেন দু’জন

এর আগেও রাজ্যে ‘এসআইআর আতঙ্কে’ মৃত্যুর খবর মিলেছে। কোথাও কেউ আত্মঘাতী হয়েছেন, তো কোথাও উদ্বেগ ধরে রাখতে না পেরে শাহাবুদ্দিনের মতো প্রাণ হারিয়েছেন কেউ।

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৭ নভেম্বর ২০২৫ ১০:৩৩

ছবি: এআই সহায়তায় প্রণীত।

ভোটার তালিকার ‘বিশেষ নিবিড় সংশোধন (এসআইআর)-এর আতঙ্কে’ ফের মৃত্যুর অভিযোগ। দু’ক্ষেত্রেই পরিবারের দাবি ‘এসআইআর আতঙ্কেই’ মৃত্যু হয়েছে তাঁদের পরিজনদের। প্রথম ঘটনা দক্ষিণ ২৪ পরগনার কুলপি বিধানসভার ঢোলা গ্রাম পঞ্চায়েতের কালীচরণপুর গ্রামের। সেখানকার বাসিন্দা শাহাবুদ্দিন পাইক (৪৫) প্রাণ হারালেন। পাশাপাশি মৃত্যু হল সাঁইথিয়া পুরসভার ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের ১২৪ নম্বর পার্টের বাসিন্দা বিমান প্রামাণিকের।

প্রথম ঘটনা কুলপির। ২০০২ সালের ভোটার তালিকায় নিজের ও স্ত্রীর নাম না-থাকায় দীর্ঘ দিন ধরেই চিন্তিত ছিলেন তিনি। উপরন্তু, স্ত্রীর নথিতে গরমিল ধরা পড়ায় আতঙ্ক আরও বেড়ে যায়। পরিবার সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার সকালে হঠাৎই শাহাবুদ্দিন হৃদ্‌‌রোগে আক্রান্ত হন। সঙ্গে সঙ্গে স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করানো হয় তাঁকে। পরে অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে স্থানান্তর করা হয় ডায়মন্ড হারবার গভর্নমেন্ট মেডিক্যাল কলেজ অ্যান্ড হাসপাতালে। সেখানেই বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় তাঁর মৃত্যু হয়।

ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়তেই শোকের ছায়া নেমে আসে কালীচরণপুর গ্রামে। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে হাসপাতালে পৌঁছোন কুলপি বিধানসভার বিধায়ক যোগরঞ্জন হালদার ও মথুরাপুরের সাংসদ বাপি হালদার। তাঁরা পরিবারের সঙ্গে দেখা করে সমবেদনা জানান ও সব রকম সাহায্যের আশ্বাস দেন। যোগরঞ্জন এবং বাপির বক্তব্য, “এসআইআর নিয়ে রাজ্য জুড়ে মানুষ বিভ্রান্ত ও আতঙ্কিত। ইতিমধ্যেই এই আতঙ্কে একাধিক মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। এর সম্পূর্ণ দায় কেন্দ্র সরকার ও নির্বাচন কমিশনের।”

শাহাবুদ্দিন পাইকের অকাল প্রয়াণে শোকস্তব্ধ পরিবার ও প্রতিবেশীরা। তাঁরা জানান, এসআইআরের ভয়ই ওঁর মৃত্যুর কারণ। গ্রামে এখন কান্না আর শোকের আবহ।

অন্য দিকে, ‘এসআইআর আতঙ্কে’ এক ব্যক্তির মৃত্যু ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়াল সাঁইথিয়ায়। পরিবারের দাবি, ওই ব্যক্তি গত তিন দিন ধরে চরম মানসিক উদ্বেগে ভুগছিলেন। পরিবার সূত্রে খবর, ২০০২ সালের ভোটার তালিকায় তাঁর ও তাঁর দিদি মল্লিকা পালের পদবি ভুল করে ‘প্রামাণিক’-এর বদলে ‘পাল’ লেখা হয়েছে— এই নিয়েই আতঙ্কিত ছিলেন বিমান। বিষয়টি জানতে পেরে তিনি স্থানীয় কাউন্সিলর ও এলাকার বিএলও-র সঙ্গে যোগাযোগ করেন। অভিযোগ, আশ্বাস পেলেও উদ্বেগ কাটেনি তাঁর।

বুধবার সন্ধ্যায় আচমকা বুকে ব্যথা অনুভব করলে দ্রুত তাঁকে সাঁইথিয়া স্টেট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়, কিন্তু তত ক্ষণে তাঁর মৃত্যু হয়। মৃতের ভাই বিধান প্রামাণিক বলেন, “তিন দিন ধরে দাদা খুব চিন্তায় ছিল, কারও সঙ্গে ঠিকমতো কথা বলত না। এসআইআর আতঙ্কেই ওর মৃত্যু।”

ওই ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর পিনাকীলাল দত্ত বলেন, “ও একাধিক বার আমার সঙ্গে দেখা করেছিল। আমি আশ্বস্ত করেছিলাম, কিন্তু ভীষণ আতঙ্কে ছিল। এই ভাবে মানুষ মারা যাচ্ছে, প্রশাসনের দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।”

এর আগেও রাজ্যে এসআইআর আতঙ্কে মৃত্যুর খবর মিলেছে। কোথাও কেউ আত্মঘাতী হয়েছেন, তো কোথাও উদ্বেগ ধরে রাখতে না পেরে শাহাবুদ্দিন, বিমানের মতো প্রাণ হারিয়েছেন কেউ।

SIR Death Voter List Controversy
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy