আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির গুরুত্বপূর্ণ অস্ত্র হতে চলেছে সমাজমাধ্যম। সংক্ষিপ্ত বঙ্গ সফরে এসে সে কথাই স্পষ্ট করে দিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ও বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জগৎ প্রকাশ নড্ডা। দলের সমাজমাধ্যম শাখার সঙ্গে আলোচনা-সভায় মঙ্গলবার শাহের আশ্বাস, সমাজমাধ্যমে প্রচারের ক্ষেত্রে স্বেচ্ছাসেবকদের যা প্রয়োজন, তাঁরা তা দিতে প্রস্তুত। সেই সঙ্গে শাহের মন্তব্য, আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে বাংলায় ‘৩৫টি পদ্ম ফোটাতে সাইবার যোদ্ধাদের বড় ভূমিকা’ নিতে হবে। তবে তৃণমূলের কটাক্ষ, ৩৫ দূরে থাক, তিন থেকে পাঁচটি আসন শাহেরা পাবেন কি না, সন্দেহ!
নিউ টাউনের একটি হোটেলে এ দিন সকালে রাজ্য বিজেপির কোর কমিটির সদস্যদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন শাহ-নড্ডা। সূত্রের খবর, বৈঠকে লোকসভা আসন ধরে ধরে দলের সাংগঠনিক অবস্থা সম্পর্কে খোঁজ নেন তাঁরা। কিছু জায়গায় দলের সাংগঠনিক অবস্থা শুনে ‘অসন্তোষ’ও প্রকাশ করেন শাহ। তবে দলকে দ্রুত গুছিয়ে নেওয়ার পরামর্শ দেন তিনি। সেই সঙ্গে বুথ কমিটি গঠনের মতো নির্বাচনের ক্ষেত্রে জরুরি অথচ রুটিন কাজগুলি সেরে ফেলতে নির্দেশ দেন তাঁরা। পাশাপাশি, মোদী সরকারের জনমুখী কর্মসূচির প্রচারে আরও জোর দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সন্ধ্যায় দলের জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে ফের এক দফা বৈঠক করেন তিনি। সূত্রের খবর, শাহ-নড্ডারা পরামর্শ দিয়ে যাওয়ার পরে আজ, বুধবারই বিজেপির সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) বি এল সন্তোষের উপস্থিতিতে দলের রাজ্য কমিটির বৈঠক বসতে চলেছে।
দুই সাংগঠনিক বৈঠকের ফাঁকে আলিপুরে জাতীয় গ্রন্থাগারের ভাষা ভবনে দলের সমাজমাধ্যমের স্বেচ্ছাসেবকদের নিয়ে আলোচনা-সভায় ছিলেন শাহ-নড্ডারা। সূত্রের খবর, বৈঠকে দুর্নীতিকেই মূল হাতিয়ার করে তৃণমূলের বিরুদ্ধে প্রচারকে ‘আগ্রাসী’ করার কথা বলেন শাহ। সেই সঙ্গে তাঁর পরামর্শ, প্রচারকে আরও তীক্ষ্ণ ও দ্রুতগামী করতে হবে।
সূত্রের খবর, শাহ নির্দেশ দিয়েছেন, প্রত্যেক সমাজমাধ্যম স্বেচ্ছাসেবককে ‘নমো অ্যাপ’ ডাউনলোড করতে হবে। সেই সঙ্গে শীর্ষ নেতাদের সমাজমাধ্যমে অনুসরণ করতে হবে। রামমন্দির উদ্বোধনের পরে তা নিয়ে প্রচার করতে হবে। সূত্রের খবর, বৈঠকে অন্য বক্তারা বলেন, সমাজমাধ্যমের স্বেচ্ছাসেবকদের দিনে অন্তত দু’ঘণ্টা সমাজমাধ্যমে দলের প্রচার করতে হবে। তাঁদের বক্তব্য, খবরের কাগজ ও টেলিভিশনে সীমাবদ্ধ দলীয় প্রচার হয়। তার বাইরে দলের যা কর্মসূচি, সেইগুলিকে সমাজমাধ্যমে তুলে ধরতে হবে। তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোয অবশ্য কটাক্ষ করেছেন, “৩৫ দূরে থাক, তিন থেকে পাঁচটি আসন পাবেন কি না, সন্দেহ রয়েছে! শাহ-নড্ডারা যত বেশি আসবেন, তত বেশি ভোটে হারবেন।’’
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)