Advertisement
E-Paper

মমতার দুর্গে পদ্ম ফোটানোর শপথ

পয়লা বৈশাখের ১১ দিন পর যেন আবার নববর্ষ ফিরে এল চেতলা লকগেটের সাইডিং বস্তিতে! অন্তত বস্তিবাসীদের সাজগোজ, আয়োজন দেখে হঠাৎ তা-ই মনে হতে পারে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৭ এপ্রিল ২০১৭ ০৩:৪৯

পয়লা বৈশাখের ১১ দিন পর যেন আবার নববর্ষ ফিরে এল চেতলা লকগেটের সাইডিং বস্তিতে! অন্তত বস্তিবাসীদের সাজগোজ, আয়োজন দেখে হঠাৎ তা-ই মনে হতে পারে। লাল পাড় সাদা শাড়িতে অনেক মহিলা। কেউ দাঁড়িয়ে অপেক্ষায়। কেউ শশব্যস্ত। অজস্র উৎসুক কচিকাঁচা। মহিলাদের হাতে থালায় সাজানো গাঁদা ফুল। শিশুরাও ফুল নিয়ে রাস্তার ধারে সারি দিয়ে দাঁড়িয়ে। ‘দিদি’ নয়, সবটাই বিজেপির এক শীর্ষ নেতার জন্য। শেষ কবে এমনটা হয়েছিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের খাসতালুকে?

ছেঁড়াখোঁড়া এই বস্তিতেই বুধবার প্রথম পা রাখলেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ। সঙ্গেই ছিলেন বাবুল সুপ্রিয় ও লকেট চট্টোপাধ্যায়। মমতার প্রায় উঠোনে দাঁড়িয়ে চ্যালেঞ্জ ছুড়লেন অমিত, ‘‘বাংলায় পদ্ম ফোটাবোই।’’ বুথ স্তরে জনসংযোগের জন্য কেন তৃণমূল নেত্রীরই কেন্দ্র ভবানীপুরকে বেছে নিলেন? অমিত বলেন, ‘‘ভবানীপুরে আমি গেলেই কিছু হয়ে যাবে, এমন বলিনি। কিন্তু আমার তো সব জায়গাতেই যাওয়ার অধিকার আছে। ভবানীপুর তো বাংলার বাইরে নয়!’’

বস্তির সামনে ছোট একটি মণ্ডপ। সেখানেই বুথ কমিটির সদস্যদের সঙ্গে বৈঠক করেন অমিত। বাইরে তখন থই থই লোক। বুথ সভাপতি মানস মণ্ডলের কাঁধে হাত রেখে বলেন, ‘‘আমি সর্বভারতীয় সভাপতি। এই ছেলেটি বুথ কমিটির সভাপতি। দু’জনের লক্ষ্য এক। পশ্চিমবঙ্গে বিজেপি-কে আনা।’’ তার পর সমবেত জনতার উদ্দেশে ভাষণ। বস্তির সামনের চুনের মাঠে।

সব শেষে বস্তির ভিতরে ঢোকেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি। সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিদের ভিড় সামলে সন্ধ্যা বৈদ্যর এক চিলতে ঘরে ঢুকে তাঁর বিছানায় বসেন অমিত। মঙ্গলবার ছিল শীতলা পুজো। তার প্রসাদী ফল এবং জল খান সন্ধ্যার ঘরে। পরে সন্ধ্যা বলেন, ‘‘এত বড় এক জন নেতা আমাদের এইটুকু ঘরে এলেন! আগে তো এমন কেউ আসেননি। খুব ভাল লাগছে।’’ তবে অমিতকে বলার জন্য যে সব দুঃখের কথা জমিয়ে রেখেছিলেন সন্ধ্যা, সেগুলো বলার সুযোগ মেলেনি। সুযোগ পেলে কী বলতেন? সন্ধ্যার কথায়, ‘‘বলতাম, আমাদের এখানে বাথরুম নেই, নর্দমা নেই। বার বার তৃণমূল নেতাদের বলেও লাভ হয়নি।’’ এখানে বিজেপি করতে ভয় করছে না? সন্ধ্যার জবাব, ‘‘করছে তো!’’

বস্তিতে কল্পনা মণ্ডলের ঘরেও ঢুকেছিলেন অমিত। সেখানে কাচের গেলাসে দইয়ের ঘোল, একটা রসগোল্লা এবং জল খান তিনি। তবে সেখানেও মনের কথা বলার খুব বেশি সুযোগ পাননি কল্পনা। শুধু আর্জি জানিয়েছেন, তাঁরা সব খুইয়ে বিজেপি করছেন। দল যেন তাঁদের নিরাপত্তা দেয়। ওই ঘরেই হাজির হয়ে আর এক বস্তিবাসী সনকা হালদারও শৌচালয় এবং নর্দমার অভাবের কথা জানিয়েছেন অমিতকে। কল্পনার ছেলে শান্তনু বলেন, ‘‘উন্নয়ন দরকার। শিক্ষিত বেকারদের চাকরি প্রয়োজন। ওঁকে বলব ভেবেছিলাম। কিন্তু এমন অবস্থা হল, কিছুই বলতে পারিনি!’’

তবে সন্ধ্যা, কল্পানাদের সান্ত্বনা— তাঁদের তরফে বিজেপির বুথ সভাপতি মানস বৈঠকে অমিতকে বস্তির অভাব-অভিযোগের কথা জানিয়েছেন। বলেছেন, একটা অ্যাম্বুল্যান্স দরকার বস্তিতে। বিজেপি সূত্রের খবর, বুথ কমিটির বৈঠকে অমিত কর্মীদের মিলেমিশে কাজ করার এবং কেন্দ্রীয় প্রকল্পগুলির প্রচারের নির্দেশ দিয়েছেন।

Mamata Banerjee West Bengal CM BJP
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy