প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী রাজ্যে সভা করে যাওয়ার ৪৮ ঘণ্টা কাটতে না কাটতেই, শনিবার রাতে বাংলায় পৌঁছলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে কলকাতা বিমানবন্দরে স্বাগত জানিয়েছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার, বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী-সহ রাজ্য বিজেপির শীর্ষ নেতারা। পশ্চিমবঙ্গে বিধানসভা ভোটের আগে মোদী সাধারণ মানুষের মধ্যে জাতীয়তাবাদী আবেগ ছড়িয়ে দেওয়া, তৃণমূল কংগ্রেসের ‘দুর্নীতি’ এবং ‘তোষণের রাজনীতি’র বিরুদ্ধে সরব হওয়া, এই তিন বিষয়ে দলের প্রচারের সুর বেঁধে দিয়েছেন। এ বার শাহ ভোটের আগে সাংগঠনিক ভাবে কী বার্তা দেন, সে দিকেই তাকিয়ে রয়েছেন রাজ্য বিজেপি নেতৃত্ব।
বিমানবন্দর থেকে শাহ এ দিন সরাসরি চলে যান বাইপাসের ধারে একটি হোটেলে। সূত্রের খবর, সেখানে রাতেই রাজ্য বিজেপির বেশ কয়েক জন শীর্ষ নেতার সঙ্গে বৈঠকও করেছেন শাহ। সব ঠিক থাকলে আজ, রবিবার সকালে রাজারহাটে একটি সরকারি অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার কথা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর। দুপুরে নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে দলের ‘বিজয় সঙ্কল্প’ নামে কর্মী সম্মেলনে থাকার কথা রয়েছে শাহের। সেখানে বিজেপির বিভিন্ন মণ্ডল থেকে রাজ্য স্তরের নেতৃত্ব উপস্থিত থাকবেন। শাহ নিজেই এ দিন কলকাতায় আসার আগে তাঁর সরকারি ও দলীয় সফরসূচির কথা জানিয়ে এক্স হ্যান্ডলে লিখেছেন, ‘এই অনুষ্ঠানগুলিতে যোগ দেওয়ার অপেক্ষায় রয়েছি।’
শাহের সফর নিয়ে দলের রাজ্য সভাপতি সুকান্ত বলেছেন, “স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সব স্তরের নেতৃত্বের সঙ্গেই বৈঠকে বসবেন। কর্মী-সমর্থকেরা উত্তেজনায় ফুটছেন।” পরক্ষণেই তিনি ফের জোর দিয়েছেন হিন্দু ভোট এককাট্টা করার বিষয়েও। সুকান্তের বক্তব্য, “এই বিধানসভা নির্বাচন তৃণমূলকে হারানো কিংবা বিজেপিকে জেতানোর জন্য নয়। এটা বাঙালি হিন্দুর অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার শেষ সুযোগ।” শাহের সভার প্রস্তুতি খতিয়ে দেখতে শুক্রবার সুকান্ত এবং শনিবার বিজেপির যুব মোর্চার রাজ্য সভাপতি ইন্দ্রনীল খাঁ-সহ অন্যেরা নেতাজি ইন্ডোরে গিয়েছিলেন।
তবে শাহের বৈঠকে এ দিন রাত পর্যন্ত ডাক পাননি বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। তাঁর বক্তব্য, “আমি সাংগঠনিক দায়িত্বে নেই, তাই হয়তো ডাক পাইনি। কাকে ডাকা হয়েছে, কাকে হয়নি, জানি না। হয়তো আমার থাকার প্রয়োজন নেই, তাই আমায় ডাকেনি।” তবে দিলীপ দলের কোর কমিটির সদস্য, সেই সূত্রে কি তাঁর ডাক পাওয়ার কথা নয়, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে দলেরই একাংশের মধ্যে। রাজ্য সভাপতি সুকান্তের অবশ্য এই বিষয়ে বক্তব্য, “দিলীপদা আমাদের মধ্যেই আছেন। কিন্তু উনি সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি পদে ছিলেন। তাই ওঁর বিষয়ে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বই সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন। বৈঠকে তাঁর উপস্থিত থাকা বা না-থাকার বিষয়টিও পরে জানা যাবে।”
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)