Advertisement
E-Paper

Mother and son Reunion: ২৭ বছর পরে মায়ের ছোঁয়া পেলেন ভিক্টর

বাবা খুন হয়েছেন, মা জেলে। এই অবস্থায় বোনেদের নিয়ে দীর্ঘ লড়াই চালাতে হয় ভিক্টরকে। এখন ছোট বোন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ০৭:২০
ইমরান আলি রমজ (ভিক্টর) ও তাঁর মা তালাত সুলতানা

ইমরান আলি রমজ (ভিক্টর) ও তাঁর মা তালাত সুলতানা

দীর্ঘ ২৭ বছর মা জেল খাটছিলেন স্বামীকে খুনের দায়ে। দীর্ঘ ২৭ বছর মায়ের স্নেহ স্পর্শ বা বাবার সাহচর্য পাননি ছেলে। কিন্তু ছোটবেলার সেই পারিবারিক কুৎসার দিনগুলিকে পিছনে ফেলে শেষ পর্যন্ত মাকে জেল থেকে মুক্ত করতে পারলেন ইমরান আলি রমজ (ভিক্টর)। রবিবার সকালে বালুরঘাট সেন্ট্রাল জেল থেকে বাইরে পা রাখলেন রমজান আলি খুনের মামলায় অন্যতম দোষী, রমজানের স্ত্রী তালাত সুলতানা।

তাঁকে কলকাতায় পাঠিয়ে দিয়ে প্রাক্তন বিধায়ক ভিক্টর বলেন, ‘‘২৭ বছর পর মায়ের স্পর্শ পেলাম! রাজনীতি করতে গেলে যে ত্যাগ, বলিদানের প্রয়োজন হয়, তার বড় উদাহরণ আমাদের পরিবার। বাবা খুন হয়েছেন, মা-কে কলঙ্ক দিয়ে বাবার খুনের আসামী করে জেলে নিয়ে গেল। তখন থেকে অনেক লড়াই করে আমি আর দুই বোন আজ এই জায়গায় এসে পৌঁছেছি।’’ একই সঙ্গে তাঁর প্রশ্ন, ‘‘কিন্তু মায়ের জীবনের এতগুলি বছরের হিসাব কে দেবে?’’

গোয়ালপোখরের তৎকালীন বিধায়ক রমজান আলির খুনের ঘটনা কাঁপিয়ে দিয়েছিল গোটা রাজ্যকে। সেটা ১৯৯৪ সালের এক শীতের রাত। কলকাতায় এমএলএ হস্টেলে অস্বাভাবিক ভাবে মারা যান বিধায়ক রমজান আলি। এই খুনের ঘটনাতেই দোষী সাব্যস্ত হয়েছিলেন রমজানের স্ত্রী তালাত সুলতানা ও রমজানের প্রাক্তন আপ্ত সহায়ক নুরুল ইসলাম। তালাত রবিবার ছাড়া পেলেও, নুরুল এখনও জেলে।

রমজানের ছেলে আলি ইমরান রমজ (ভিক্টর) ফরোয়ার্ড ব্লকের হয়ে দু’বারের বিধায়ক। সোমবার, চাকুলিয়া থেকে তিনি বললেন ‘‘বাবা-মায়ের নামে অনেক অপপ্রচারও সে সময় করা হয়েছে।’’ ভিক্টরের অভিযোগ, ১৯৯৪ সালে ইসলামপুর পুরভোটে তাঁর বাবার উপর হামলা হয়েছিল। হামলার অভিযোগ উঠেছিল স্থানীয় সিপিএম নেতৃত্বের বিরুদ্ধে। মাথায় গুরুতর আঘাত পান তাঁর বাবা। ওই হামলার দু’মাসের মধ্যে রমজান আলি খুন হন। ভিক্টর বলেন, ‘‘বাবা কলকাতা থেকে চিকিৎসা করে ইসলামপুরে ফিরে মিটিং করবেন বলেছিলেন। তাঁর আগেই তিনি খুন হন। ওই মিটিং করলে সিপিএমের অনেকের সমস্যা হত, আজ সে কথা বুঝি।’’ ভিক্টরের অভিযোগ, তৎকালীন পুলিশ, প্রশাসন এই মামলায় ইসলামপুরে বাবার উপর হামলার সূত্র ধরে এগোয়নি। প্রভাব খাটিয়ে বামফ্রন্টের আমলে, পারিবারিক সমস্যার দিকে মামলা ঘুরিয়ে দেওয়া হয়েছিল।

সিপিএমের ইসলামপুর জোনাল সম্পাদক স্বপন গুহনিয়োগী অবশ্য দাবি করেন, ‘‘দল জড়িত থাকার এমন অভিযোগ ভিত্তিহীন।’’

বাবা খুন হয়েছেন, মা জেলে। এই অবস্থায় বোনেদের নিয়ে দীর্ঘ লড়াই চালাতে হয় ভিক্টরকে। এখন ছোট বোন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী। আর এক বোন শিক্ষিকা। ছোটবেলায় কাকা তথা প্রাক্তন মন্ত্রী হাফিজ আলি সইরানির সাহায্য যে পেয়েছিলেন, সে কথা এখনও স্বীকার করেন ভিক্টর। তিনি জানান, তাঁর মায়ের ব্যবহারে জেল কর্তৃপক্ষ খুশি ছিলেন। ২৫ বছরের বেশি জেল খাটার পরে সুপ্রিম কোর্টের একটি রায়ের নির্দেশ মতো, মায়ের মুক্তির আবেদন করেন তাঁরা।

reunion Murder
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy