বিরোধীদের আন্দোলনের জেরে সিঙ্গুরে শিল্প গড়তে পারেনি টাটাগোষ্ঠী। এত বছর বাদে সিঙ্গুরের সেই প্রকল্প এলাকার কাছেই ‘শিল্প’ এল। সরকার বা শিল্পোদ্যোগীর হাত ধরে নয়, শিল্পীর রং-তুলিতে!
এই শিল্পে কৃষিজমি অধিগ্রহণ নেই। কারখানার ছাউনি নেই। বড় বড় যন্ত্র নেই। এখানে গাছে ঝুলতে থাকা ‘মৌচাক’ যে আসলে ঘুঁটের তৈরি, সামনে থেকে না-দেখলে বোঝা দায়। রং করা ধান গাছের গোড়া পানাপুকুরে যেন শালুক ফুল! বাঁশঝাড়ের পাশে মাটি দিয়ে তৈরি মাতৃজঠরে শিশুর অবয়ব। হুগলির পোলবা-দাদপুর ব্লকের অখ্যাত কোমধাড়া গ্রামটা যেন আস্ত ক্যানভাস!
বারো দিন ধরে কোমধাড়ায় এই শিল্প প্রদর্শনীর আয়োজক শিল্পীদের আন্তর্জাতিক মঞ্চ ‘ন্যারেটিভ মুভমেন্টস’। মঙ্গলবার ছিল শেষ দিন। দ্বি-বার্ষিক প্রদর্শনী বিশ্বের নানা জায়গায় হয়েছে। এ দেশেও। তা বলে আর্থ-সামাজিক ভাবে তথাকথিত অনুন্নত এই ‘গণ্ডগ্রামে’! যেখানে যোগাযোগের মাধ্যম শুধু টোটো আর ম্যাজিক গাড়ি! উদ্যোক্তাদের দাবি, গ্রামে এমন প্রদর্শনী এই প্রথম। কোমধাড়া বারোয়ারি সমিতির সহযোগিতায় গ্রামের সাড়ে তিন কিলোমিটার চৌহদ্দি এই উপলক্ষে সাজিয়ে তোলা হয়। মাটি, বাঁশ, খড়, কাঠ, ঘুঁটে দিয়ে হরেক শিল্পকর্ম তৈরি হয়। উদ্যোগের মূল হোতা বিবেক সাঁতরা গ্রামেরই ছেলে। পেশায় চিত্রশিল্পী মানুষটি এখন ভিন্ রাজ্যে থাকেন। নিজের গ্রামে ‘কিছু করা’র ভাবনা থেকেই তিনি উদ্যোগী হন। প্রদর্শনীর কিউরেটর তিনি।