Advertisement
০৩ মে ২০২৪
আসিফ মামলা

সুপ্রিম কোর্টেও এক পা পিছিয়ে গেল রাজ্য

কলকাতা হাইকোর্টে তারা কোনও নথি পেশ করতে না পারায় একটি প্রতারণার মামলায় আগাম জামিন পেয়েছিলেন তৃণমূলের প্রাক্তন নেতা দলের সবর্ভারতীয় সাধারণ সম্পাদক মুকুল রায়ের একদা ছায়াসঙ্গী আসিফ খান। তখন রাজ্যের কৌঁসুলির দাবি ছিল, তাঁরা হাইকোর্টের নির্দেশের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে আপিল করবেন। সোমবার সুপ্রিম কোর্টে তার শুনানিতেও অতিরিক্ত তথ্য পেশ করতে আরও দু’সপ্তাহ সময় চাইল তারা।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০২ ডিসেম্বর ২০১৪ ০৩:১২
Share: Save:

কলকাতা হাইকোর্টে তারা কোনও নথি পেশ করতে না পারায় একটি প্রতারণার মামলায় আগাম জামিন পেয়েছিলেন তৃণমূলের প্রাক্তন নেতা দলের সবর্ভারতীয় সাধারণ সম্পাদক মুকুল রায়ের একদা ছায়াসঙ্গী আসিফ খান। তখন রাজ্যের কৌঁসুলির দাবি ছিল, তাঁরা হাইকোর্টের নির্দেশের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে আপিল করবেন। সোমবার সুপ্রিম কোর্টে তার শুনানিতেও অতিরিক্ত তথ্য পেশ করতে আরও দু’সপ্তাহ সময় চাইল তারা।

কলকাতার এক ব্যবসায়ীকে জমি বিক্রি নিয়ে প্রতারণার মামলায় আসিফকে গ্রেফতার করেছে কলকাতা পুলিশ। বর্তমানে তিনি জেল হেফাজতে রয়েছেন। কিন্তু উত্তরপ্রদেশের এক ব্যবসায়ীর দায়ের করা অন্য একটি মামলায় আগাম জামিন পেয়ে গিয়েছিলেন আসিফ। কলকাতা হাইকোর্টে ওই মামলায় হেরে গিয়ে রাজ্য সরকার সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করেছিল। গত ১০ নভেম্বর সুপ্রিম কোর্ট মামলাটি গ্রহণ করে। সে দিন আসিফ খানের আইনজীবী সওয়াল করেন, সুপ্রিম কোর্ট যেন তাঁর মক্কেলের বক্তব্য খতিয়ে দেখে। কারণ, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে মিথ্যে মামলায় ফাঁসানো হয়েছে আসিফকে। শীর্ষ আদালতের বিচারপতি সুধাংশু জ্যোতি মুখোপাধ্যায় ও বিচারপতি এন ভি রমানা তখন আসিফের আইনজীবী পীযূষ রায়কে হলফনামা দিয়ে তাঁর মক্কেলের বক্তব্য জানাতে বলেছিলেন।

ওই দিন কিন্তু রাজ্য সরকারের ভূমিকা ছিল আক্রমণাত্মক। আসিফের কৌঁসুলির আর্জি খারিজ করার আবেদন জানিয়ে রাজ্যের আইনজীবীর দাবি ছিল, আসিফকে এমনিতেই অন্য মামলায় গ্রেফতার করা হয়েছে। কাজেই তাঁর অন্য মামলায় আগাম জামিনও খারিজ করে দিক। এ দিন সুপ্রিম কোর্টে ওই মামলার শুনানি ছিল। সেখানে রাজ্য সরকার কী বলে, তার দিকে নজর ছিল সকলের। কিন্তু সকলকে অবাক করে রাজ্য সরকারই সেখানে আরও দু’সপ্তাহের সময় চেয়ে বসেছে।

কেন রাজ্য সরকার এই বাড়তি সময় চাইল, তা নিয়ে অবশ্য কেউই মুখ খুলতে চাননি। রাজ্যের আইনজীবী অনীপ সাচতে আদালতে জানিয়েছেন, তাঁরা আরও কিছু তথ্য পেশ করতে চান। সেই জন্যই বাড়তি সময় দরকার। আসিফের বিরুদ্ধে প্রথমে ২০ কোটি টাকার প্রতারণার মামলা দায়ের করেছিলেন উত্তরপ্রদেশের ব্যবসায়ী ওয়াহিদুল হাসান সিদ্দিকি। যাঁকে গত বছর উত্তরপ্রদেশে তৃণমূলের কার্যকরী সভাপতি করা হয়। সিদ্দিকির অভিযোগ ছিল, রাজারহাটে ৪৮০ একর জমি পাইয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে তাঁর কাছ থেকে ২০ কোটি টাকা নিয়েছিলেন আসিফ।

আদালতে অবশ্য এ দিন ওয়াহিদুল বা তাঁর আইনজীবীর দেখা মেলেনি। আসিফের আইনজীবী হলফনামা দিয়ে যুক্তি দিয়েছেন, অভিযোগকারী ওয়াহিদুল ২০১৩ সালের নভেম্বরেই আসিফকে ২০ কোটি টাকা দিয়েছিলেন বলে দাবি করেছেন। কিন্তু চলতি বছরের জুলাই মাসে তিনি অভিযোগ দায়ের করেন। সাত মাস কেন দেরি হল? পশ্চিমবঙ্গের ভূমি সংস্কার আইন অনুযায়ী কারও মালিকানায় ১৭ একরের বেশি জমি থাকতে পারে না। তা হলে কোন আইনে ৪৮০ একর জমি কেনার চেষ্টা করছিলেন অভিযোগকারী? আয়কর আইনে ২০ হাজার টাকার উপর যে কোনও লেনদেনে কর কাটা হয়। সেখানে ২০ কোটি টাকার লেনদেনে কোনও রসিদও চাইলেন না কেন ওয়াহিদুল? আসিফের আইনজীবীর যুক্তি, ২০ কোটি টাকার মিথ্যে প্রতারণার মামলায় আসিফ ৩ সেপ্টেম্বর হাইকোর্টে আগাম জামিন পেয়ে যান আসিফ। পরের দিনই বিধাননগর থাকায় আর একটি ৮ কোটি টাকার প্রতারণার মামলা দায়ের করে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE