শেষ পর্যন্ত সমাবর্তন হতে চলেছে বারাসত রাষ্ট্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে। ২০০৮ সালে বিশ্ববিদ্যালয়টি চালু হলেও প্রশাসনিক নানা জটিলতায় এখনও পর্যন্ত সমাবর্তন হতে পারেনি। এর ফলে পাশ করেও হাতে শংসাপত্র না-পেয়ে অসুবিধায় পড়েছেন বহু ছাত্রছাত্রী। সমাবর্তন হলে সে সমস্যা মিটবে।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রের খবর, সমাবর্তন না-হওয়ায় ওই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইতিমধ্যে পাশ করা ১ লক্ষ ২০ হাজার ছাত্রছাত্রীর কেউ এখনও শংসাপত্র পাননি। কর্তৃপক্ষ সমাবর্তনের আর্জি নিয়ে এর আগে রাজ্যপাল তথা আচার্য কেশরীনাথ ত্রিপাঠীর কাছে দরবার করতে গিয়েছিলেন। তিনি তখন জানিয়ে দিয়েছিলেন, সমাবর্তন করতে হলে আগে শংসাপত্র ছাপাতে হবে। তার পর যেন সমাবর্তনের দিন ঠিক করে তাঁকে জানানো হয়। সম্প্রতি কর্তৃপক্ষ সেই কাজ শেষ করে রাজ্যপালকে জানিয়েছেন। নিয়ম অনুযায়ী এই বিশ্ববিদ্যালয়ের এ পর্যন্ত পাঁচটি সমাবর্তন হয়ে যাওয়ার কথা।
বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের নির্দেশ রয়েছে, পড়ুয়াদের পাশ করার ১৮০ দিনের মধ্যে সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে তাঁদের হাতে শংসাপত্র তুলে দিতে হবে। কিন্তু বারাসতের ক্ষেত্রে সেই নিয়ম লঙ্ঘিত হয়েছে বলেই অভিযোগ উঠেছে। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রের খবর, শংসাপত্র না-পাওয়ায় চাকরি এবং উচ্চশিক্ষার জন্য আবেদনের ক্ষেত্রে বহু পরীক্ষার্থীই অসুবিধায় পড়ছেন। তবে বিশেষ পরিস্থিতিতে রাজভবন থেকে কোনও পড়ুয়া লিখিয়ে আনলে তাঁকে শংসাপত্র দেওয়া হয়।
প্রথম থেকেই নানা সমস্যায় জর্জরিত এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আগে পরীক্ষার ফলও ঠিক সময় প্রকাশ হতো না। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাকর্মীরা প্রথম থেকেই অস্থায়ী হিসাবে কাজ করে চলেছেন। পুজোর আগেই পেশাগত দাবিদাওয়া নিয়ে তাঁরা রাতভর উপাচার্যকে ঘেরাও করে রেখেছিলেন। আগের উপাচার্য জ্যোতিষপ্রকাশ বসুকে নিয়েও বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ এক সময় উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল। তাঁর শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে বিতর্ক ওঠার পরে রাজ্যপাল তাঁকে অপসারণ করেন। এর পর গত বছর অস্থায়ী উপাচার্য হিসাবে নিয়োগ করা হয় কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন রেজিস্ট্রার বাসব চৌধুরীকে। পরে তাঁকেই স্থায়ী উপাচার্য করা হয়।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রের খবর, অস্থায়ী উপাচার্য হিসাবে দায়িত্ব নেওয়ার পরই বাসববাবু রাজ্যপালের সঙ্গে সমাবর্তন নিয়ে কথা বলতে যান। তার পরেও বছর ঘুরে গিয়েছে। কেন? বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানাচ্ছেন, ই-টেন্ডার ডেকে শংসাপত্র ছাপার ব্যবস্থা করতে সময় লেগেছে। ১ লক্ষ ২০ হাজার শংসাপত্র ছাপাতে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনস্থ ৪৯টি কলেজ থেকে উত্তীর্ণ পড়ুয়াদের সব তথ্য পেতেও সময় লেগে গিয়েছে। বাসববাবু বলেন, ‘‘শংসাপত্র তৈরির প্রক্রিয়া প্রায় শেষ। আচার্য মহাশয়কে আমরা বিষয়টি জানিয়েছি। রাজভবন জানালে আমরা এ বার সমাবর্তনের দিন চূড়ান্ত করব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy