স্ট্যান্ড থেকে ছাড়ার পরেই বাসের দরজা বন্ধ করে দেন কন্ডাক্টর। বাসের গতিও বাড়িয়ে দেন চালক। ভয়ে কোনওমতে দরজা খুলে সেই চলন্ত বাস থেকে শুক্রবার সন্ধেয় ঝাঁপ দিয়েছিলেন এক তরুণী। সোমবার অবশেষে সেই বাসের চালক, কন্ডাক্টরকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। আটক করা হয়েছে বাসটিও।
রবিবার রাতেই কোচবিহার কোতোয়ালি থানার দেওয়ানহাট এলাকায় বাসটির সন্ধান পায় পুলিশ। রাতেই বাসটিকে কোতোয়ালি থানায় আনা হয়। পুলিশ সূত্রের খবর, বাসটির সন্ধান মেলার পরেই তার মালিকের খোঁজও পাওয়া যায়। তারপরেই খোঁজ মেলে চালক হাপিজুল রহমান ও কন্ডাক্টর মৃণাল সরকার। তারপরে দু’জনকেই তাদের বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয়। চালকের বাড়ি ধলুয়াবাড়িতে। কন্ডাক্টরের বাড়ি দেওয়ানহাটে। তবে তাঁদের দাবি, ওই তরুণীর শ্লীলতাহানির কোনও প্রশ্নই ওঠে না। তেমন কোনও অভিসন্ধিও তাঁদের ছিল না। বাসের মালিকেরও দাবি, “বাসে খারাপ কোনও ঘটনা হয়নি। ওই তরুণী ঘাবড়ে গিয়েছিলেন বলে মনে হচ্ছে। চালক বাস থামিয়েও ছিলেন।’’ তা হলে কেন ওই তরুণী ঝাঁপ দেওয়ার পরে বাস নিয়ে তাঁরা চলে যান? বাস মালিকের দাবি, ‘‘লোকজন ছুটে আসায় কন্ডাক্টর ও চালকও ভয় পেয়ে গিয়েছিলেন। তবে তাঁরা বাড়ি থেকে পালাননি।’’
ওই তরুণীর পরিবারের অবশ্য লোকজনের বক্তব্য, বাসের দরজা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল খারাপ কোনও অভিসন্ধি নিয়েই। চালকই বা কেন অন্য যাত্রীদের না তুলে জোরে বাস চালাচ্ছিলেন, সে প্রশ্নও তুলেছেন তাঁরা। তা ছাড়া, এত কাণ্ডের পরে ওই চালক ও কন্ডাক্টর কেন নিজেরাই পুলিশের কাছে যাননি? পুলিশ জানিয়েছে, সব দিক খতিয়ে দেখেই তদন্ত করা হচ্ছে।
কিন্তু পুলিশ তদন্তে ঢিলে দিয়েছে বলেও অভিযোগ উঠেছে। এদিন ওই দাবিতে তরুণীর আত্মীয়পরিজন ও এলাকার বাসিন্দাদের কয়েকজন বেলা ১১টা থেকে দেওয়ানহাটে প্রায় দু’ঘন্টা রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, “আইন আইনের পথে চলবে।” পুলিশ সুপার অনুপ জায়সবাল বলেন, “পুলিশ কাজ ঠিক মতোই করছে।’’