তথ্য হাতানোর জন্য কি-প্যাডে লাগানোর স্কিমার। নিজস্ব চিত্র
রাজ্যে প্রথম এটিএম জালিয়াতি ধরা পড়ে বছর পাঁচেক আগে। সে-বার জালিয়াতি যে-ভাবে হয়েছিল, ঠিক সেই কায়দায় এ বারেও এটিএম থেকে উধাও হয়েছে টাকা।
২০১৩ সালে ধরা পড়ে জ্যাব্রিয়েল মার্টিন নামে এক নাইজিরীয়-সহ তিন জন। উদ্ধার হয় কার্ড জালিয়াতির যন্ত্র ও ব্ল্যাঙ্ক কার্ড। জ্যাব্রিয়েল এবং তার শাগরেদরা জেলে রয়েছে। তাদের লুটের পদ্ধতির সঙ্গে এ বারের লুটের অনেক মিল পাচ্ছেন গোয়েন্দারা।
কলকাতায় এর আগে দু’বার এমন কার্ড স্কিমিং চক্র ধরা পড়েছে। ২০১০ সালের মার্চে কলকাতা বিমানবন্দর থেকে পিটার ওরেনুবি নামে এক নাইজিরীয়কে গ্রেফতার করেন ব্যাঙ্ক জালিয়াতি দমন শাখার অফিসারেরা। পিটারকে জেরা করে পিকনিক গার্ডেন এলাকা থেকে তার ভারতীয় স্ত্রী লিয়ানা জোয়ারডসন ও বেনসন অ্যাডামস নামে আর এক নাইজিরীয়কে গ্রেফতার করা হয়। বেনসন ময়দানের ছোট ক্লাবে ফুটবল খেলত। তদন্তকারীরা জানান, ওই ঘটনায় অঙ্কিত সাউ ও মণীশ অগ্রবাল নামে কলকাতার দুই যুবককে এজেন্ট হিসেবে নিয়োগ করেছিল পিটার। মণীশ ছিল শাড়ি ব্যবসায়ী, অঙ্কিত ছাত্র। পিটারেরা মূলত ক্রেডিট কার্ড জালিয়াতি করত। বিচার শেষে তারা প্রেসিডেন্সি জেলে বন্দি।
পুলিশের একটি সূত্রের খবর, কলকাতায় দুই যুবককে দিয়ে তথ্য চুরি করানো হয়েছে। নির্দিষ্ট টাকার বিনিময়ে তা কিনে নেয় মূল চক্রীরা। সেই তথ্য ল্যাপটপে পুরে অন্য একটি ‘কপিয়ার’ মেশিনের সাহায্যে তা নতুন একটি কার্ডে ঢোকানো হয়। এর ফলেই তৈরি হয়ে যায় আসল এটিএম কার্ডের প্রতিলিপি। সেই কার্ড পাঠিয়ে দেওয়া হয় ‘এজেন্টদের’ কাছে। এজেন্টরা সেই কার্ড দিয়ে টাকা তুলে নিজেদের কমিশন বাবদ পাওয়া টাকা সরিয়ে নেয়। বাকি টাকা মূল চক্রীদের অ্যাকাউন্টে জমা দেওয়া হয়। সেই অ্যাকাউন্ট অবশ্য ভুয়ো নথি দিয়েই খোলা হয়। কিন্তু দিল্লিতে যে-ফুটেজ মিলেছে, তার সঙ্গে ওই দুই যুবকের চেহারার মিল তেমন নেই। ফলে কলকাতার যুবক এবং দিল্লির এজেন্টরা যে আলাদা, সেই ব্যাপারে গোয়েন্দারা মোটামুটি নিশ্চিত।
তা হলে অপরাধীরা পুলিশের নাগালের থেকে কত দূরে?
লালবাজারের খবর, এর আগে দু’বারেই এজেন্টদের সূত্র ধরে মূল মাথা পর্যন্ত পৌঁছেছিলেন গোয়েন্দারা। এ বারেও সেই ধরনের কিছু সূত্র হাতে এসে গিয়েছে। তবে গোয়েন্দারা এখনই তা প্রকাশ করতে রাজি নন। এক গোয়েন্দাকর্তার কথায়, ‘‘এ রোগ আমাদের চেনা। ওষুধও জানা। তবে সেই ওষুধে কাজ হতে দিন কয়েক সময় লাগতে পারে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy