Advertisement
১৯ মে ২০২৪

নতুন রাস্তায় ফাটল, উদ্বোধন করলেন না ক্ষুব্ধ বাবুল

রাস্তা তৈরির জন্য নিজের সাংসদ তহবিল থেকে অর্থ বরাদ্দ করেছিলেন তিনি। কিন্তু, উদ্বোধন করতে গিয়ে চোখে পড়ল, সেই নতুন রাস্তাতেই ফাটল। বিরক্ত হয়ে রাস্তার উদ্বোধন না করেই ফিরে গেলেন কেন্দ্রীয় নগরোন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী তথা আসানসোলের সাংসদ বাবুল সুপ্রিয়। রবিবার আসানসোলের হিরাপুরে ওই রাস্তা দেখে বাবুল ঘটনাস্থলেই জানিয়ে দেন, যে মানের কাজ হয়েছে, তাতে তিনি একেবারেই খুশি নন।

রাস্তা তৈরির ঠিকাদারদের সঙ্গে কথা বলছেন বাবুল। —নিজস্ব চিত্র।

রাস্তা তৈরির ঠিকাদারদের সঙ্গে কথা বলছেন বাবুল। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
আসানসোল শেষ আপডেট: ২২ জুন ২০১৫ ০৩:৪৫
Share: Save:

রাস্তা তৈরির জন্য নিজের সাংসদ তহবিল থেকে অর্থ বরাদ্দ করেছিলেন তিনি। কিন্তু, উদ্বোধন করতে গিয়ে চোখে পড়ল, সেই নতুন রাস্তাতেই ফাটল। বিরক্ত হয়ে রাস্তার উদ্বোধন না করেই ফিরে গেলেন কেন্দ্রীয় নগরোন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী তথা আসানসোলের সাংসদ বাবুল সুপ্রিয়।

রবিবার আসানসোলের হিরাপুরে ওই রাস্তা দেখে বাবুল ঘটনাস্থলেই জানিয়ে দেন, যে মানের কাজ হয়েছে, তাতে তিনি একেবারেই খুশি নন। রাস্তা ঠিক মতো তৈরি না হলে নির্মাণে নিযুক্ত ঠিকাদার সংস্থার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান। পরে এ দিনই রানিগঞ্জে একটি রাস্তার উদ্বোধনে গিয়ে কাজের মান নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন বাবুল। সেটির অবশ্য উদ্বোধন করেছেন তিনি।

হিরাপুরের মানিকচাঁদপল্লি এলাকায় দেড় কিলোমিটার কংক্রিটের রাস্তাটি তৈরির জন্য ২৫ লক্ষ টাকা অনুদান দিয়েছিলেন বাবুল। আসানসোল পুরসভা টেন্ডার ডেকে ঠিকাদার নিয়োগ করে। ৬ জুন কাজ শেষ হয়। এ দিন রাস্তাটির উদ্বোধন করতে গিয়ে বাবুল দেখেন, সেটির একাধিক জায়গায় ফাটল ধরেছে। রাস্তা জুড়ে রয়েছে গাড়ির চাকা ও গবাদি পশুর হাঁটাচলার দাগ। সেখানে দাঁড়িয়েই সাংসদ বলেন, ‘‘মনে হচ্ছে, গুণমান বজায় রেখে কাজ হয়নি। এতে বাসিন্দারা বঞ্চিত হবেন। ঠিক মতো তৈরি হওয়ার পরেই উদ্বোধন করব।’’ এর পরে তিনি ফিরে যান।

রাস্তা তৈরির বরাতপ্রাপ্ত ঠিকাদার সুমিত চট্টোপাধ্যায় নিম্নমানের কাজ করার কথা মানেননি। তিনি জানান, রাস্তা তৈরির নির্দেশনামায় বলা ছিল, নির্দিষ্ট একটি সিমেন্ট প্রস্তুতকারক সংস্থার কাছ থেকে প্রয়োজনীয় কাঁচামাল নিয়ে এসে ঢালাই করতে হবে। সেই মতো রানিগঞ্জের মঙ্গলপুরে সেই সংস্থার কারখানা থেকে কাঁচামাল আনা হয়েছে। তাঁর কথায়, ‘‘আমি নিজে কোনও কাঁচামালের মিশ্রণ তৈরি করে ঢালাই করিনি। তাই গুণমান বজায় না রাখার অভিযোগ ঠিক নয়।’’ তাঁর পাল্টা অভিযোগ, রাস্তা তৈরির কাঁচামাল সরবরাহকারী সংস্থার তরফে জানানো হয়েছিল, কাজ শেষ হওয়ার পরে অন্তত ২৭ দিন রাস্তা দিয়ে কোনও যানবাহন চালানো যাবে না। কিন্তু স্থানীয় বাসিন্দারা তা শোনেননি। পরের দিন থেকেই ট্রাক্টর-সহ নানা গাড়ি চালানো হয়েছে বলে তাঁর দাবি।

আসানসোল পুরসভার প্রশাসক বোর্ডের সদস্য তথা স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক তাপস বন্দ্যোপাধ্যায় আবার এই ঘটনায় সাংসদ তহবিলের কাজ দেখাশোনার দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিনিধিকে দায়ী করেছেন। তাঁর বক্তব্য, ‘‘সাংসদ তহবিলের নির্মাণকাজ দেখাশোনার জন্য এলাকায় তাঁর এক প্রতিনিধি রয়েছেন। তিনি কী করছিলেন, সেটাই প্রশ্ন।’’ তবে তিনি বলেন, ‘‘নিম্নমানের কাজ নিয়ে লিখিত অভিযোগ পেলে আমরা বিভাগীয় তদন্ত করব।’’

সাংসদের ওই প্রতিনিধি, হিরাপুরেরই বাসিন্দা দিলীপ দে অবশ্য দাবি করেন, এই কাজের ব্যাপারে কোনও খবরই তাঁকে দেওয়া হয়নি। তাঁর কথায়, ‘‘কবে কাজ শুরু হয়েছে, কবেই বা শেষ হয়েছে, আমাকে ঠিকাদার কিছুই জানাননি।’’ ঠিকাদার সুমিতবাবু বলেন, ‘‘সাংসদ কোটার কাজ এই প্রথম করলাম। সাংসদের প্রতিনিধির সঙ্গে যোগাযোগ করতে হয় বলে জানা ছিল না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE